বঙ্গনিউজঃ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সিভিল এভিয়েশন একাডেমির পরিচালকসহ দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণ কোর্সের নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীতে বিপুল সম্পদ গড়া, উত্তরায় আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট ও নিজস্ব গাড়ি কেনার অভিযোগ পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)।
এ নিয়ে দুদকের চিঠি পেয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বেবিচককে নির্দেশও দিয়েছে। অভিযোগ ওঠা দুই কর্মকর্তা হলেনু সিভিল এভিয়েশন একাডেমির পরিচালক প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী ও সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ।
বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, ওই দুই কর্মকর্তার বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অনুপ কুমার তালুকদার বেবিচক চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে প্রশিক্ষণের নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আগামী ২৫ এপ্রিল মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে জানাতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, বেবিচকের ট্রেনিং একাডেমিতে সিএফআর, সিএনএস ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ, এভিয়েশন সিকিউরিটি কোর্সের মতো একাধিক প্রশিক্ষণ কোর্স রয়েছে। চার দিন থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত এসব কোর্সপ্রতি সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে চার লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। পরিচালক প্রশান্ত কুমার গত দুই অর্থবছরে এমন অন্তত ৩৫০টি কোর্সের ব্যবস্থা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়, এসব কোর্সে প্রশিক্ষণার্থীদের দুপুরের খাবারের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছিল জনপ্রতি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। পরিচালক প্রশান্ত একাডেমির ঝাড়ুদারকে দিয়ে সেই খাবার রান্না করিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া কোর্সের অন্যান্য খাতেও খরচ কমানো হয়। নিম্নমানের এসব কোর্স তাই বেবিচক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তেমন কোনো উপকারেই আসেনি। অথচ প্রতিবছর প্রশিক্ষণের নামে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার বড় অংশই গেছে পরিচালক প্রশান্ত কুমার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের পকেটে।
অবৈধভাবে অর্জন করা এসব টাকায় রাজধানীতে জমি, উত্তরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট, সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামের ব্রিটিশ কারিকুলামে পড়ানোসহ বিভিন্ন অভিযোগও আনা হয়েছে এতে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পরিচালক প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রশিক্ষণার্থীদের দুপুরের খাবারের বিষয়টি বেবিচক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই করা হয়েছে। অথচ একটি চক্র দুদকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। বেবিচক এখন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছে।
সিভিল এভিয়েশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ অবসরে গেছেন বলে জানান তিনি।