বঙ্গনিউজঃ মেয়াদি ঋণখেলাপি করার ক্ষেত্রে শিথিলতা দুই ধাপে তুলে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বর্তমানে একটি মেয়াদি ঋণের কিস্তি পরিশোধের নির্ধারিত তারিখ শেষ হওয়ার ছয় মাস পর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ হিসাব করা হয়। তবে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের মার্চ প্রান্তিকের আগ পর্যন্ত তিন মাস পর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ এবং মার্চ থেকে ঋণ পরিশোধের তারিখ পার হওয়ার পরদিন থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে ব্যাংকগুলোতে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বাড়বে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের এক নির্দেশনার মাধ্যমে একটি মেয়াদি ঋণের কোনো কিস্তি বা কিস্তির অংশবিশেষ নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে পরিশোধ না করলে নির্ধারিত তারিখের ৬ মাস পার হওয়ার পর মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এখন ঋণ শ্রেণীকরণের আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য নতুন এ নির্দেশনা দেওয়া হলো।
এতে প্রথম ধাপে একটি মেয়াদি ঋণের কোনো কিস্তি নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে পরিশোধ না করলে অপরিশোধিত কিস্তি যে তারিখে পরিশোধের জন্য নির্ধারিত থাকবে, সে তারিখ থেকে পরবর্তী ৩ মাস অতিক্রম করার পর মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য হবে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে যা কার্যকর হবে। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ৩১ মার্চ ও তৎপরবর্তী একটি মেয়াদি ঋণের কোনো কিস্তি বা এর অংশবিশেষ নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে পরিশোধ করা না হলে যে তারিখে পরিশোধের জন্য নির্ধারিত থাকবে, সে তারিখের পরবর্তী দিন থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ হিসেবে গণ্য হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের আলোকে একটি ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ছয় মাস পর খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। ২০১৯ সালের ওই নির্দেশনার আগ পর্যন্ত মেয়াদি বা চলতি মূলধন সব ঋণ একই মানদণ্ডের ভিত্তিতে তথা পরিশোধের নির্ধারিত তারিখের পরদিন থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ধরা হতো। তবে খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য ওই সময় মেয়াদি ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা ৬ মাস বাড়ানো হয়।
জানা গেছে, আইএমএফ বেশ আগ থেকে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঋণ শ্রেণীকরণ করার কথা বলে আসছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এতদিন তাতে সাড়া দেয়নি। এর মধ্যে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের পর আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বিভিন্ন শর্ত দেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে মেয়াদি ঋণে দেওয়া বিশেষ শিথিলতা তুলে নিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতের ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের নিচে এবং সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে নামানোর শর্ত দেওয়া হয়েছে।