বঙ্গ-নিউজ: ঈদের দিনেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা বন্ধ হয়নি। এ হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়ার তিন ছেলে ও এক নাতিসহ ১২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৫৬ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আল জাজিরা ও জিও নিউজ।
গতকাল গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসমাইল হানিয়া জানান, ইসরায়েলি হামলায় তার ছেলে তিন ছেলে হাজেম, আমির ও মোহাম্মদ এবং এক নাতি নিহত হয়েছেন। এর আগে গত বছরের ১৬ নভেম্বর গাজায় তার বাড়িতে বিমান হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে ইসরায়েলি হামলায় তিন সন্তান ও এক নাতির মৃত্যু হলেও তাতে মুষড়ে পড়েননি ইসমাইল হানিয়া। বরং তিনি বলেছেন, শহীদদের রক্ত এবং আহতদের যন্ত্রণার মধ্য দিয়েই আমরা আশা তৈরি করি, ভবিষ্যৎ তৈরি করি। এর মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের মানুষ ও জাতির জন্য স্বাধীনতা ও মুক্তি তৈরি করি। তিনি জানান, ছয় মাস দীর্ঘ এ যুদ্ধে এরই মধ্যে তার পরিবারের ৬০ সদস্য নিহত হয়েছে।
হামাস প্রধান জানান, ঈদ উপলক্ষে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে গিয়েছিলেন তার সন্তানেরা। ওই সময়ই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। তবে তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, নেতাদের বাড়িঘর ও পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে হামাসকে থামানো যাবে না।
তিনি বলেন, যদি তারা মনে করে আমাদের সন্তানদের টার্গেট করার মাধ্যমে হামাসের অবস্থান পাল্টে ফেলা যাবে, তাহলে তারা ভ্রান্তিতে আছে। আমাদের সন্তানদের হত্যা করে যুদ্ধের গতিপথ বদলানো যাবে না। হামাসও যুদ্ধবিরতির দাবি থেকে সরে আসবে না।
হানিয়া বলেন, আমার সন্তানদের রক্তের মূল্য অন্য ফিলিস্তিনিদের সন্তানদের চেয়ে বেশি নয়। ফিলিস্তিনের সব শহীদই আমার সন্তান।
গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানায়, আল শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে বেসামরিকদের বহনকারী একটি গাড়িতে ইসরায়েলি বিমান থেকে হামলা চালানো হয়। ওই হামলাতেই হানিয়ার ছেলেরা নিহত হন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, তারা হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধানের বাড়িতে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসমাইল হানিয়ার বাড়িটিকে সন্ত্রাসী অবকাঠামো উল্লেখ করে তারা দাবি করে প্রায়ই সেটি ইসরায়েলের বেসামরিক ও আইডিএফ সেনাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনার জন্য জ্যেষ্ঠ হামাস নেতাদের বৈঠকস্থলের কাজ করতো।
উল্লেখ্য, ইসমাইল হানিয়ার পরিবার-পরিজন গাজাতে থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি কাতারে বসবাস করেন। সেখান থেকেই হামাসের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। ২০১৭ সালে তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন।