বঙ্গনিউজঃ লাল-সবুজের বেশে মঞ্চে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির প্রশিক্ষণার্থী ১০০ শিশু। অপেক্ষা কিংবদন্তি শিল্পীর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে দেশের গান গাওয়া। অবশেষে মঞ্চে উপস্থিত হলেন সেই বরেণ্য শিল্পী। তিনি উপমহাদেশের বিখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লা। তাঁর উপস্থিতিতে পুরো মিলনায়তনে রোল পড়ে যায় করতালির। এর পর তিনি এই শিশুদের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ শিরোনামের গান পরিবেশন করেন।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গতকাল বুধবার সকালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই দৃশ্যের অবতারণা হয়। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ শিরোনামের গানটি লিখেছেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক ছড়াকার আনজির লিটন এবং সুর করেছেন আশরাফ বাবু। শিশুদের সঙ্গে গান গাওয়ার বিষয়ে রুনা লায়লা বলেন, স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে ১০০ শিশুকে নিয়ে গাই গাইতে পারা ভীষণ আনন্দের। আমাকে এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য শিশু একাডেমিকে ধন্যবাদ।
এই পরিবেশনার আগে শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি। আরও বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক এবং শিশু একাডেমির প্রশিক্ষণার্থী রূপসঞ্চারী চর্যা। স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজির লিটন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ও অপারেশন সার্চলাইটের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২৫ মার্চ রাতে আমি পুরান ঢাকায় খালার বাসায় ছিলাম। গভীর রাতে প্রচণ্ড গুলির শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। সারা রাত গুলির শব্দ আর মানুষের চিৎকার শুনি।
আশপাশের বাড়ির মানুষজন আমার খালার বাসায় ঢুকে পড়ে। পরদিন সারাদিন কারফিউ ছিল। ২৭ মার্চ যখন মাত্র দুই ঘণ্টার জন্য কারফিউ খুলল, আমার মামা আমাকে উদ্ধার করতে আসে। যখন মামার সঙ্গে বের হই, তখন চারপাশে দেখি লাশ আর লাশ। তখন আমি ছোট একজন শিশু।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চে হত্যাকাণ্ডের পর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পর এ দেশের মানুষ লড়াই করে দেশকে স্বাধীন করেছে। এই তারিখগুলো আমাদের সব শিশুকে মনে রাখতে হবে। শিশুদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
নাজমা মোবারেক বলেন, শিশুদের এ দেশের ইতিহাসকে জানাতে হবে। কেননা, আগামীতে তারাই দেশকে নেতৃত্ব দেবে। শিশুদের ইতিহাস জানালে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম গ্রথিত হবে। তাহলেই আগামীতে দেশ এগিয়ে যাবে।
আলোচনা শেষে শিশুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শিশু একাডেমিতে আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।