সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে উত্তরাঞ্চলে

Home Page » সংবাদ শিরোনাম » সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে উত্তরাঞ্চলে
শনিবার ● ২৩ মার্চ ২০২৪


 ফাইল ছবি

 বঙ্গনিউজঃ    পিছিয়ে পড়া উত্তরাঞ্চলে অনেকেই বিনিয়োগে আগ্রহ দেখান না। তাই গড়ে ওঠেনি বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান, তৈরি হয়নি নতুন উদ্যোক্তা। ফলে বেকারের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি পিছিয়ে রয়েছে এখানকার জেলাগুলো। তবে এবার খুলছে সম্ভাবনার দুয়ার।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) উত্তরের বেশ কয়েকটি জেলায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে। ইতোমধ্যে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে যমুনা নদীর তীরে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠছে দেশের প্রথম শতভাগ সবুজ অর্থনৈতিক অঞ্চল। আর সীমান্ত জেলা কুড়িগ্রামে হচ্ছে ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ ছাড়া রাজশাহী, রংপুর, নাটোর, পঞ্চগড়, দিনাজপুর এবং গাইবান্ধায় প্রকল্পের কাজ প্রক্রিয়াধীন।

ব্যবসায়ী নেতা ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পরও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো বাস্তবায়ন হলে এ জনপদের মানুষের জন্য তা হবে আশীর্বাদ।

ইতোমধ্যেই এ অঞ্চলের নীলফামারী ও পাবনায় গড়ে ওঠা দুটি ইপিজেড পেয়েছে দারুণ সাফল্য। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি এই অঞ্চলে গড়ে উঠছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থান।

অবস্থানগত কারণে কুড়িগ্রামের সঙ্গে ভারত ও ভুটানের যোগাযোগ বেশ ভালো। বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল, কাঁচামাল তৈরির সম্ভাবনা এবং মানবসম্পদ মিলিয়ে কুড়িগ্রামে যৌথ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মোট ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা ও এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রচেষ্টায় যুক্ত রয়েছে বেজা।
সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বেজা ২০১৮ সালে এই অঞ্চলকে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেয়। বিভিন্ন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উদ্যোক্তা যৌথভাবে এর মালিকানায় রয়েছে। ১ হাজার ৪১ একর জায়গায় এ অঞ্চল গড়ে উঠছে।

এখানে ভূমি উন্নয়নের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। দেশি ও বিদেশি ১৪টি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ১১০ একর জমি বরাদ্দ নিয়েছে। বাকি জমির জন্য সৌদি আরব, জাপান, চীন, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নরওয়েসহ কয়েকটি দেশের বিনিয়োগকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে যোগাযোগও করা হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে ভূমি উন্নয়নের কাজে প্রকৌশলগত সহায়তা দিচ্ছে জাপান ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (জেডিআই)।

সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ১৪টি প্রতিষ্ঠান বস্ত্র, তৈরি পোশাক, ডাইং ফ্যাক্টরি, সুতা উৎপাদন, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ পণ্য ও ইলেট্রিক পণ্য উৎপাদনের জন্য প্লট বরাদ্দ পেয়েছে। এখানকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ৫ লাখেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে তারা মনে করছেন। তাদের মূল এলাকায় সব মিলিয়ে ৪০০ প্লট থাকছে।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু ইউসুফ সূর্য বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা যে হারে উন্নতি হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। ওই সেতুর পর বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এ জনপদের জন্য সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এখন আমাদের আশার আলো এই অর্থনৈতিক অঞ্চল। এগুলো বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের বেকার সমস্যা দূর হবে। বিনিয়োগকারীরাও কাঁচামাল আনা ও উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে বাড়তি সুবিধা পাবেন।

এদিকে বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে কুড়িগ্রামে জিটুজি ভিত্তিক প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের সম্ভাবনা যাচাই করতে ভুটানের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি কুড়িগ্রাম ঘুরে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কুড়িগ্রাম জেলার বৃহৎ এলাকা চরাঞ্চল। এখানকার পিছিয়ে পড়া মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য জেলায় কলকারখানা প্রয়োজন। এখান থেকে ভুটান অনেক কাছে। ফলে ভুটানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে পারলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত হবে। মানুষের সক্ষমতা বাড়বে।

কুড়িগ্রামের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি বেজা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আরও ৮০ একর ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে ভুটানের ফুন্টশোলিং এলাকার দূরত্ব কম। সহজে যাতায়াত করা যায়। ফলে ভুটানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হলে জেলার আর্থসামাজিক অবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। নতুন নতুন ব্যবসা-বাণিজ্যের দ্বার উন্মুক্ত হবে। সর্বোপরি জেলার স্থল সীমান্ত পথে বহুল প্রতীক্ষিত ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু ত্বরান্বিত হবে।

পরিকল্পনায় যেসব অঞ্চল

বগুড়ার শাজাহানপুরে ২৫১ একর জমিতে তৈরি হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বেজা এবং জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এটা নিয়ে কাজ করছে। শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের পাঁচটি মৌজার জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহসভাপতি মাহফুজুল ইসলাম রাজ জানান, বগুড়ায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হলে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এই মুহূর্তে ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কিছু জটিলতা রয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন উদ্যোগী হলে সহজেই সমাধান করা যাবে। আর সরকারের অনুমতি পেলে প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমেও বাস্তবায়ন সম্ভব।

নাটোরের লালপুরের আরজী-বাকনাই রসুলপুর, বন্দোবস্ত গোবিন্দপুর, বালিতিতা, লালপুর ও চরজাজিরা মৌজায় পদ্মা নদীর বিস্তীর্ণ চর এলাকায় ৩ হাজার ৪১৮ একর সরকারি খাসজমির ওপর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের এলাকা থেকে পদ্মা নদীর দূরত্ব ৬ কিলোমিটার, ঈশ্বরদী জংশন থেকে ১৫ কিলোমিটার ও ঈশ্বরদী বিমানবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কৃষিনির্ভর এলাকা হওয়ায় এখানে কৃষিভিত্তিক শিল্প-কারখানা বিকাশের সুযোগ রয়েছে। গ্যাস ও প্রয়োজনীয় কাঁচামালের পর্যাপ্ত সুবিধা পাওয়া যাবে।

এ প্রসঙ্গে বেজা চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, নাটোরে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে পারলে এলাকার প্রায় ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। এখানে কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উপযোগী স্থান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লালপুরে পদ্মার চরে প্রস্তাবিত ‘নাটোর অর্থনৈতিক অঞ্চল’ ২০১৫ সালেই অনুমোদন দেন। এ কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই।

রাজশাহীর পবা উপজেলার কয়রা, জয়কৃঞ্চপুর, মাড়িয়া, বালানগর ও ভবানীপুর এলাকায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। মোট জমির পরিমাণ ২০৪ একর। প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি রাজশাহীর হারিয়ান রেলস্টেশন থেকে ১০ কিলোমিটার এবং বিমানবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। স্থানটির সঙ্গে সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগের সুবিধা রয়েছে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, কৃষিপ্রধান রাজশাহী অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্যের উৎপাদন হয়। এখানে আমসহ কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে উঠলে স্থানীয় কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি এই অঞ্চলে কর্মসংস্থান বাড়বে।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহম্মেদ বলেন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল রাজশাহীর পবায় করা যাবে কিনা, তা জানার জন্য চার মাস আগে আমাদের মতামত চাওয়া হয়। আমরা করা যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছি। পবায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য খাস জমি আছে। এটা হলে রাজশাহীতে শিল্প-কারখানা হবে।

তিনি বলেন, এই এলাকার উপযোগী এবং কৃষিনির্ভর শিল্প হলে এলাকার আম, টমেটো ও সবজির বহুমুখী ব্যবহার হবে। এতে এলাকার অর্থনীতির বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে।

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। টেপামধুপুর ইউনিয়নের হয়বৎ খাঁ মৌজায় ২৫৪ একর খাস জমিতে এ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে। ইতোমধ্যে জমি নির্বাচনের কাজ চূড়ান্ত হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ-সংক্রান্ত পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান এ তথ্য জানান।

রংপুরের গুরুত্ব তুলে ধরে গবেষক ও লেখক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, এ বিভাগটি দারিদ্র্যের শীর্ষে আছে। এখানে উন্নয়ন বৈষম্য কমেনি। রংপুর বিভাগের সঙ্গে ঢাকা বিভাগের বৈষম্য তিন গুণ। ঢাকা বিভাগের দারিদ্র্য ১৬ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ৪৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।

গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী পৌর বন্দর থেকে জেলা শহর পর্যন্ত ৫০০ একর জমিতে সরকারি উদ্যোগে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে। রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের ১ হাজার ৮৪২ একর জমিতে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (আরইপিজেড) স্থাপনের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয় এ জমি বেপজার অনুকূলে হস্তান্তরের নির্দেশনা দেয়।

রয়েছে নানা জটিলতা

উত্তরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন করার ক্ষেত্রে নানা জটিলতাও রয়েছে। বগুড়ায় জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে ভূমি মালিকদের নামে ২০১৭ সালে অধিগ্রহণের নোটিশ ইস্যু করা হয়। তবে ভূমি মালিকদের পক্ষ থেকে জমির মূল্য দেড় গুণের পরিবর্তে ২০১৭ সালের আইন অনুযায়ী তিন গুণ চেয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। এখন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মামলার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না।

বগুড়ার সাবেক জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন, এত বেশি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে প্রকল্পটি লাভজনক হবে কিনা, সে ব্যাপারে বেজা কর্তৃপক্ষ নতুন করে ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) করতে চায়।
রংপুরের ব্যাপারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, বিভাগের আয়তন, জনসংখ্যা এবং প্রয়োজনের হিসাব করলে এখানে অন্তত ২০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল হওয়া প্রয়োজন। রংপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুরের অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। কারণ রংপুর বিভাগে চার কোটি মানুষের খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়। দেশের খাদ্য জোগানদাতা হিসেবে নাম থাকবে রংপুর বিভাগের আর উন্নয়নের তলানিতে পড়ে থাকবে, এটি মেনে নেওয়া যায় না। সরকারের উচিত বৈষম্য দূরীকরণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

আগেরগুলো কেমন চলছে

পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের বিশেষ অঞ্চল পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেড। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) সূত্র জানায়, ঈশ্বরদী ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা ১৭ হাজার ১২৫ জন। ব্যাটারি, প্রক্রিয়াজাত প্লাস্টিক, অ্যাগলোমারেট, টেক্সটাইল কেমিক্যাল, প্লেন পলি, রেডিমেড গার্মেন্ট, ক্রাফট, হেয়ার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্লাভস, গার্মেন্ট এক্সেসরিজ ও অন্যান্য বায়োকেমিক্যাল পণ্য উৎপাদন হচ্ছে এখানকার কারখানাগুলোয়।

ঈশ্বরদী ইপিজেডে ২১টি কারখানা চালু রয়েছে। এর মধ্যে ১২টিই বিদেশি। বাস্তবায়নাধীন ২০টি প্রতিষ্ঠান। ৩২৪টি প্লটের সবগুলোই চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গতিশীল হয়ে উঠছে স্থানীয় অর্থনীতি। এখানে চীন, হংকং, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মার্শাল আইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া কারখানা গড়ে তুলেছে।

উত্তরের সীমান্ত জেলা নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডও জীবনযাত্রা পরিবর্তনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ২০০১ সালে উত্তরা ইপিজেড প্রতিষ্ঠার পর এক সময়ের দারিদ্র্যপীড়িত এই এলাকাটি এখন শিল্পোন্নত এলাকায় পরিণত হয়। বর্তমানে এই ইপিজেডে ২৫টি চালু শিল্পপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩৫ হাজার কর্মী কর্মরত রয়েছেন। এখানে এখন পর্যন্ত ২৩.৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে এবং ২৩৪.২ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্যসামগ্রী রপ্তানি করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ মত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ইলিয়াস আলী বলেন, উত্তরে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো গড়ে উঠলে ব্যবসা ও অর্থনীতি জীবন ফিরে পাবে। তৈরি হবে কর্মসংস্থানের বিশাল ক্ষেত্র। এগুলো একে একে বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য তা হবে আশীর্বাদস্বরূপ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:১৯:১৬ ● ১৫৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ