বঙ্গনিউজঃ স্বাধীনতার ৫৩ বছরে চতুর্থ দফায় ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন। এ তালিকার মধ্যে শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, ইমাম, যাজক, পুরোহিত, অভিনেতা, রাজনীতিবিদ, নারীনেত্রী, সমাজসেবক প্রাধান্য পেয়েছেন। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বীকৃতি প্রদান-সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই কমিটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সুপারিশ করা নামের তালিকা আগামী সপ্তাহে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তারা প্রত্যেকেই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সময় হত্যার শিকার হন।
তালিকা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, স্বীকৃতির সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন ৪৭ শিক্ষক, স্থানীয় ১৭ রাজনীতিবিদ ও ১৩ চিকিৎসক। ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী তালিকা প্রণয়নে প্রথম কমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১৯১ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের ২২ মে ১৪৩ জনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর পর দেড় বছর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা-সংক্রান্ত সভা হয়নি। অবশেষে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ১০৮ জনকে (একজনের নাম দুইবার) দেওয়া হয় শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি। সব মিলে এ পর্যন্ত শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছে ৪৪২ জনের নাম। চতুর্থ দফায় সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়ে মোট স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৫৬০-এ।
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্বীকৃতি প্রদান-সংক্রান্ত বাছাই কমিটির সদস্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘আমরা তালিকা চূড়ান্ত করেছি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী দেশের বাইরে আছেন। তিনি ফিরলে তালিকা হস্তান্তর করা হবে। আগামী ২৪ মার্চ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তালিকা প্রকাশের কথা রয়েছে।’
কমিটির অপর সদস্য অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে সমাজের প্রতিটি শ্রেণিরই অবদান রয়েছে, যেটা শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় উঠে এসেছে। তালিকায় শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, ইমাম, যাজক, পুরোহিত, নাট্যাভিনেতা, নারীনেত্রী, সমাজসেবক প্রাধান্য পেয়েছেন।’
যাদের নাম শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে, তারা হলেন– হবিগঞ্জের শিক্ষক অনিল চন্দ্র দেব, সত্যরঞ্জন অধিকারী, হরিপদ গোস্বামী, হরিদাস সাহা, শফিকুর রহমান, পল্লিচিকিৎসক অবিনাশ রায়, শিক্ষক কালীচরণ নমঃশূদ্র, হারুনর রশীদ, হোসেন সিদ্দিক, জগৎজ্যোতি দাস (বীরপ্রতীক), মানিকগঞ্জের ডা. অজিত কুমার চক্রবর্তী, ডা. সন্তোষ রঞ্জন কুমার বসাক, ডা. নিবারণ চন্দ্র সাহা, হীরালাল সরকার, রাজনীতিবিদ সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায়চৌধুরী, নারীনেত্রী যোগমায়া চৌধুরী কালী, রাজনীতিবিদ ব্রজেন্দ্র কুমার সাহা, রামলাল সাহা, মোহিনীকান্ত গুহ রায়, সমাজসেবী নীহাররঞ্জন রায়, পৃথ্বীশচন্দ্র সাহা, নৃপেন্দ্রকান্ত রায়চৌধুরী, নরেন্দ্রনাথ কুণ্ডু, শিক্ষক নিতাই চন্দ্র বসাক, স্বদেশচন্দ্র বসু মজুমদার, প্রবন্ধ কুমার নাগ, নারায়ণ চক্রবর্তী, গণসংগীত শিল্পী জগবন্ধু সাহা, সমাজসেবক অবনী কুমার রায়, অভিনয়শিল্পী অতুল কৃষ্ণ সাহা, আবু ইলিয়াস মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, লোকসংগীত শিল্পী আবুল বাশার খান, রাজনীতিক আবদুল হামিদ শেখ, সমাজেসেবী উমেশ চন্দ্র সাহা, এজেডএম জিয়াউদ্দিন, আইনজীবী চিত্ররঞ্জন বসু, শিক্ষক কালীপ্রসন্ন রায়, ডা. চিত্তরঞ্জন সাহা, ডা. বিজয়রত্ন রায়, সুধীর কুমার রায়, ইমাম ও শিক্ষক মাওলানা হারুন অর রশীদ; যশোরের নাট্যাভিনেতা অমল কৃষ্ণ সোম, অরুণ কৃষ্ণ সোম, রাজনীতিবিদ মো. আসাদুজ্জামান, লুৎফর রহমান, সংস্কৃতিকর্মী শেখ ওয়াহিদুর রহমান চারু, সমাজসেবী শহীদ উদ্দিন আহম্মেদ, প্রকৌশলী শামস-উল-হুদা, পল্লিচিকিৎসক তফেল উদ্দিন আহম্মাদ, শিক্ষক কাজী আইয়ূব হোসেন, সিদ্দিকুর রহামান, সিরাজুল ইসলাম, গোবিন্দ, নওয়াব আলী বিশ্বাস, প্রবোধ কুমার নাগ, গণসংগীত শিল্পী সাবুদেব কুমার দত্ত বাচ্চু, লেখক ইয়াকুব আলী, চাকরিজীবী মহিউদ্দীন আহমেদ বিশ্বাস, শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম টিপু, আইনজীবী সুশীল কুমার রায়, সৈয়দ আমির আলী, ইমাম মাওলানা হাবিবুর রহমান; সিরাজগঞ্জের ডা. প্রকাশ প্রামাণিক মিন্টু, শিক্ষক জয়নাল আবেদীন, শাহেদ আলী, মহাদেব চন্দ্র সাহা, নূরুল ইসলাম, ননীগোপাল বসাক, গোলাম মোস্তফা, চিত্রশিল্পী গোবিন্দ চন্দ্র দাস, ইঞ্জিনিয়ার আহসান-উল-হাবীব, শিক্ষক আব্দুল হামিদ, আবেদ আলী, সংস্কৃতিকর্মী ওয়ালিউর রহমান পারু, শিক্ষক ইয়ার মোহাম্মদ; পাবনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, রাজনীতিক আব্দুর রহমান খান কাশেম, ভাষাসংগ্রামী আব্দুর রহিম, ইমাম ও সমাজসেবী মাওলানা আব্দুল আজিজ, শিক্ষক আব্দুল গফুর বিশ্বাস, সংস্কৃতিকর্মী আব্দুল জব্বার, চিত্রশিল্পী আব্দুল লতিফ খান, রাজনীতিক আব্দুল হামিদ, রাজনীতিক ও সংগঠক আহসান উদ্দিন মানিক, দিনাজপুরের শিক্ষক আবুল হোসেন, শাহ মো. সোলাইমান, হোমিও চিকিৎসক আবু বক্কর আকন্দ, শিক্ষক আছাব উদ্দীন সরকার, মফিজ উদ্দীন সরকার, সংগীতশিল্পী আমিরুল হুদা জিন্না, শিক্ষক আব্দুল খালেক, নেত্রকোনার শিক্ষক কামিনী কুমার চক্রবর্তী, নওগাঁর আইয়ুব হোসেন, প্রকৌশলী প্রশান্ত পাল, শিক্ষক খাজা আব্দুস ছাত্তার, জয়নাল আবেদিন, কুমিল্লার মাওলানা আবদুল লতিফ, বরিশালের ইমাম ও স্কুলশিক্ষক মুনশি আলী আজিম খান, কিশোরগঞ্জের শিক্ষক আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া, মহিউদ্দিন আহমেদ, নীরদ রঞ্জন গিরী, সংগীতশিল্পী ভূপতিনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী, ময়মনসিংহের ইমাম ও শিক্ষক মাওলানা ছফির উদ্দিন মুনশী, নীলফামারীর অভিনেতা নূর মোহাম্মদ, মুন্সীগঞ্জের ডা. সুরেন্দ্র চন্দ্র সাহা, সিলেটের পুরোহিত স্বামী পরমানন্দ গিরী, ইমাম ও শিক্ষক মাওলানা মকদ্দস আলী, ইতালির নাগরিক ফাদার মারিও ভেরোনেসি, গোপালগঞ্জের শিক্ষক মাওলানা হাবিবুর রহমান ও চট্টগ্রামের শিক্ষক সুমতি রঞ্জন বড়ুয়া।