বঙ্গনিউজঃ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট শুরু হয় যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে ইভিএমে ভোটে কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। ইভিএম মেশিনে কয়েকজন নারীর আঙুলের ছাপ ঠিকমতো না ওঠায় তারা ভোট দিতে সমস্যায় পড়েন। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র এনে তাদের ভোট দিতে বলা হয়েছে।
নগরীর মহাকালী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে নারী ভোটারদের ভোট দিতে দেখা গেছে। এ প্রতিষ্ঠানটিতে নারীদের জন্য দুটি কেন্দ্রের ব্যবস্থা রয়েছে। একটি কেন্দ্রে ভোটার ১৫৬০ জন, অপর কেন্দ্রে ২৪৬০ জন। আগ্রহ নিয়ে ভোটকেন্দ্রে আসেন নারী ভোটাররা। তবে ইভিএম মেশিনে অনভ্যস্ত ভোটারদের ভোট দিতে সময় বেশি লাগছে। এতে ভোটগ্রহণে ধীরগতি দেখা দেয়।
সকাল সাড়ে ৮টায় নগরীর প্রিমিয়ার আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে যান কালিবাড়ী এলাকার বাসিন্দা শেফালী। তিনি বলেন, ‘ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। মেশিনে আঙুলের ছাপ উঠেনি। দায়িত্বরত লোকজন বলেছেন, বাড়ির কাজ করার কারণে আঙুলের এমনটি হয়েছে।’ জাতীয় পরিচয়পত্র এনে তাকে ভোট দিতে বলা হয়েছে।
কালীবাড়ি গুদারাঘাট এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘আমাদের কামের হাত। পেঁয়াজ কাইট্টা আঙুলের দাগ মুইচ্ছা দেছে। অহন ভোট দিবার আইস্যা বিপদে পড়ছি। আঙুলের ছাপ আসে না। পরে কইছে আইডি কার্ড লইয়্যা আইতে।’
তবে একই কেন্দ্রে ইভেএমে প্রথম ভোট দিয়ে বেশ খুশি বকুল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘মেশিনে আমার ভোট দ্রুতই দিয়েছি।’
ভোট কেন্দ্রটির সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার কাজল চন্দ্র দাস বলেন, নারী ভোটারদের আঙুলের ছাপ নিতে একটু সমস্যা হওয়ায় কিছুটা সময় বেশি লাগছে।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ সিটিতে ১২৮টি ভোটকেন্দ্রের ৯৯০টি ভোট কক্ষে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭২ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১৫ জন এবং ৯ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।
এই সিটিতে মেয়র পদে পাঁচজন, ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন এবং ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একটি সাধারণ ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
মেয়র প্রার্থীরা হলেন- ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু (টেবিল ঘড়ি), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম (ঘোড়া), উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাদেক খান মিল্কী টজু (হাতি), কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ড. রেজাউল হক (হরিণ) এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল (লাঙ্গল)।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএন, আনসার ব্যাটালিয়ন, সাধারণ আনসার মিলে থাকবে ৪ হাজার ৫০০ জন। পাশাপাশি ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে রয়েছেন। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার মিলে ১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন।
১২৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৩টি ভোটকেন্দ্র অতি ঝুঁকিপূর্ণ (অতি গুরুত্বপূর্ণ) এবং ৫৫টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন চৌধুরী জানান, তারা সব কেন্দ্রকে সমান গুরুত্ব দিচ্ছেন। ভোটের পরদিন পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় আইনশঙঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।