বঙ্গনিউজঃ বিসিবির জাতীয় নির্বাচক প্যানেলের বেতন কাঠামো পুনর্গঠনে বেশ কয়েকবার আলোচনার টেবিলে তুলেও লাভ হয়নি। ফিন্যান্স কমিটির অনীহার কারণে মৌখিক পর্যায়ে থেকে গেছে প্রস্তাবনা। এই বিভাগ না চাইলে পরিচালক বা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কিছু করার থাকে না। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস তা ভালো করেই জানেন।
এর পরও বর্তমান নির্বাচক প্যানেলের প্রধান গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর অনুরোধে বাকি দুই নির্বাচকের বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব ক্রিকেট বোর্ডকে দেন তিনি। সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরীও ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ইসমাইল হায়দার মল্লিকের কাছে বিষয়টি তুলেছিলেন। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে দুই নির্বাচকের বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাবনা ফাইলবন্দি করে রাখা হয়েছে।
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি জানার পর দুই নির্বাচকের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। বেতন না বাড়ালে নির্বাচকের চাকরিতে নাও থাকতে পারেন রাজ্জাক-হান্নান জুটি।
জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেলের সদস্যদের মধ্যে বেতন-ভাতা নিয়ে হতাশা ছিলই। সাবেক প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, নির্বাচক হাবিবুল বাশার এক যুগ কাজ করার পরও কাঙ্ক্ষিত বেতন-ভাতা পাননি। সাবেক প্রধান নির্বাচক নান্নুর সর্বশেষ বেতন ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা। নির্বাচক হাবিবুল বাশারের বেতন ছিল দেড় লাখের মতো। প্যানেলের আরেক সদস্য রাজ্জাক মাসে পেতেন লাখ টাকার কিছু বেশি।
বর্তমান নির্বাচক প্যানেলের প্রধান গাজী আশরাফ হোসেন লিপুকে ৩ লাখা টাকা বেতন, সার্বক্ষণিক গাড়ি এবং দেশ-বিদেশের সফরে পরিচালকদের সমমানের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় হতাশায় ডুবে আছেন প্যানেলের দুই সদস্য। লিপুর উপস্থিতিতে তারাও জালাল ইউনুসকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, মাসিক বেতন ২ লাখ টাকায় উন্নীত করতে। প্রধান নির্বাচক তাতে সাড়া দিয়ে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান রাজ্জাক-হান্নানের বেতন বাড়াতে। দুই নির্বাচক এই দাবি নিয়ে সিইও সুজনের কাছেও গিয়েছিলেন। তিনি ফিন্যান্স বিভাগের প্রধান মল্লিকের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলে বেশিদূর এগোতে পারেননি।
এ ব্যাপারে সিইও সুজনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি বোর্ডের অভ্যন্তরীণ এবং নীতিনির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এ কারণে আমি মন্তব্য করতে পারছি না।’
ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ থেকে রাজ্জাককে ২ লাখ আর হান্নানকে দেড় লাখ টাকা মাসিক বেতন দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। এই বেতন বৈশ্বিক বিবেচনায় খুব বেশি নয় বলে মনে করেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা। এর পরও দুই নির্বাচককে সম্মানজনক বেতন দিতে রাজি না বোর্ড। এ নিয়ে মতামত জানতে জালাল ইউনুসকে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে লিখিত বার্তা দেওয়া হলেও এ লেখা পর্যন্ত উত্তর আসেনি।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজ্জাক আর হান্নানকে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী বেতন দেওয়া হবে না। অবশ্য রাজ্জাক-হান্নান বিসিবি সভাপতি পাপনের কাছে নিজেদের আর্জি জানালে লাভবান হবেন বলে মনে করেন কর্মকর্তারা। যদিও রাজ্জাক বা হান্নান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। শুধু দুই নির্বাচকই নন, দীর্ঘদিন ধরে ইনক্রিমেন্ট এবং প্রমোশন বন্ধ রাখায় হতাশায় ভুগছেন বিসিবি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।