নির্বাচন ঘিরে বিতর্ক,পাকিস্তানে নতুন উত্তেজনা

Home Page » বিশ্ব » নির্বাচন ঘিরে বিতর্ক,পাকিস্তানে নতুন উত্তেজনা
বৃহস্পতিবার ● ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪


ফাইল ছবি

বঙ্গনিউজঃ   রাজনৈতিক উত্তাপ-উত্তেজনার মাঝেই আগামীকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের প্রথম অধিবেশন বসতে যাচ্ছে। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের ২১ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকার বাধ্যবাধকাতা রয়েছে। সে হিসেবে বৃহস্পতিবার অধিবেশন বসার শেষ দিন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি অধিবেশন ডাকতে অস্বীকৃতি জানানোর পর গত সপ্তাহ থেকেই নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এই নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।

হট্টগোলের মধ্যদিয়ে কয়েকটি প্রাদেশিক পারিষদের নির্বাচিত সদস্যরা বুধবার শপথ নিয়েছেন। অন্যদিকে, জনগণের ভোটাধিকারের সম্মান রক্ষায় মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই। দলটি ভোট চুরির বিরুদ্ধে আগামী ২ মার্চ দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।

প্রেসিডেন্টের অনিচ্ছার কারণে জাতীয় পরিষদের স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ অধিবেশন ডাকার বিষয়টি নিজের হাতে তুলে নেন। তিনি আজ অধিবেশন আহ্বান করেছেন। ফলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বর্তমান স্পিকার প্রথমে নবনির্বাচিত পরিষদ সদস্যদের শপথ পাঠ করাবেন। এর পর প্রত্যেক সদস্যকে রেজিস্টারে স্বাক্ষর করার জন্য সিরিয়াল অনুযায়ী ডাকা হবে। আশরাফ এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন। কারণ, অধিবেশন বসার পর নতুন স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনিই স্পিকার পদে বহাল থাকবেন।

এর আগে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট অধিবেশন ডাকবেন না বলে জানান। এই নিয়ে উত্তেজনা নতুন মাত্রা দেয়। এ বিষয়ে বুধবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ব্যারিস্টার গহর খান বলেছেন, সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) সংরক্ষিত আসনসহ সব সদস্য ছাড়া জাতীয় পরিষদ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে চাইলে এসআইসি সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ করতে হবে।’

প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, সংবিধান লঙ্ঘন করায় প্রেসিডেন্ট আলভির বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা দায়ের করা হবে। ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনার সময় জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ায় ঘটনায় আরেকটি মামলা হবে তাঁর বিরুদ্ধে। ক্ষমতায় আসার পর দেশের সব রাজবন্দিকে মুক্তির অঙ্গীকারও করেন তিনি।

অন্যদিকে জনগণের রায়ের প্রতি সম্মান না থাকলে গণতন্ত্র চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন পিটিআই নেতা আলী মুহাম্মদ খান।

অধিবেশন ডাকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘যে দেশে জনগণের রায়কে সম্মান করা হয় না, সেখানে গণতন্ত্র চলতে পারে না।’ তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জনগণের রায় সমুন্নত রাখতে লড়াই চালিয়ে যাবে পিটিআই।

এদিকে, ‘জনরায় চুরির’ বিরুদ্ধে আগামী ২ মার্চ দেশব্যাপী বিক্ষোভ করবে পিটিআই। পিটিআই নেতা শের আফজাল মারওয়াত বলেছেন, ‘কারাগারে থাকা দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান চান, নির্বাচনে কারচুপির বিরুদ্ধে ২ মার্চ পাকিস্তানের মানুষ রাজপথে নেমে আসুক।’ তিনি জানান, রাজধানী ইসলামাবাদে বেলা ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ হবে।

এদিকে, নতুন সরকার অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে স্থিতিশীলতা আনবে বলে দাবি করেছে পিএমএল-এন (নওয়াজ)। দলটির প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেন, নতুন সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার হবে দেশের অর্থনৈতিক সংকট সমাধান করা। প্রধানমন্ত্রীসহ সব সংসদ সদস্য তাদের মেয়াদ পূর্ণ করবেন বলেও আশা তাঁর।

অধিবেশন বসার পর আগামী ১ মার্চ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য তপশিল ঘোষণা করবে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ও চারটি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়। এতে এককভাবে সরকার গঠনের জন্য কোনো দল জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১০:১৯:১৭ ● ১২৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ