বঙ্গ-নিউজ: যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই একটি প্রশ্ন জোরদার হচ্ছে মার্কিন রাজনীতিতে। আর সেটি হচ্ছে, প্রেসিডেন্টের বয়স কত থাকা উচিত? হোয়াইট হাউসে যেতে কোনো বয়সসীমা থাকা উচিত কিনা? সম্প্রতি ৮১ বছর বয়সী বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিতর্কের জের ধরে ‘বয়সসীমা’ প্রশ্ন এখন মার্কিন রাজনীতির ‘গলার কাঁটা’য় পরিণত হয়েছে। খবর বিবিসির।
যুক্তরাষ্ট্রে আসছে নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি ফের নির্বাচিত হন, তবে তিনি হবেন মার্কিন ইতিহাসে ক্ষমতাসীন সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। ভোটের ফল পেতে পেতে নভেম্বরেই তার বয়স হবে ৮২।
এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে খুব সম্ভবত রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হতে যাচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দলীয় প্রাইমারি ও ককাসে এখন পর্যন্ত ট্রাম্পই ফ্রন্টরানার। নভেম্বরের লড়াইয়ে তিনি যদি জো বাইডেনকে হারিয়ে দেন, তবে আগামী জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ঢুকতে ঢুকতে ট্রাম্পের বয়স হবে ৭৮।
ট্রাম্প বা বাইডেন যেই হোন, যুক্তরাষ্ট্রের ভাগ্যে এবার অতিবয়স্ক প্রেসিডেন্ট অনিবার্য। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টদের জন্য বয়সসীমা থাকা উচিত কিনা? এত বয়সে কেউ কি একটি রাষ্ট্র চালানোর সক্ষমতা রাখেন বা মানসিক-শারীরিক শক্তি ধরেন কিনা?
চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাই-প্রোফাইল পাবলিক ফোরামে এমন প্রশ্ন তুলেছেন নারী কংগ্রেসম্যান কেটি পোর্টার। ওই পাবলিক ফোরামের টেলিভিশন বিতর্কে তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টদের জন্য বয়সসীমা নির্ধারণ করা উচিত। শুধু প্রেসিডেন্টই নন, সকল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির জন্যই একটি সুনির্দিষ্ট বয়সীসীমা থাকা উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে হলে ন্যুনতম বয়স ৩৫ হতে হবে। কিন্তু সর্বোচ্চ বয়সসীমার উল্লেখ নেই।
সংবিধানে অবশ্য একজন প্রেসিডেন্টকে দুই মেয়াদ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। একজন প্রেসিডেন্ট দুই মেয়াদে চার-চার আটবছরের বেশি হোয়াইট হাউসে থাকতে পারবেন না।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্টের বয়সজনিত প্রশ্নকে উসকে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিজেই। ভুলভাল কথা বলা এবং বয়সের কারণে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে বাইডেনের।
তার ওপর গত সপ্তাহে বিচার বিভাগে স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট হুর একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন, তাতে বাইডেনকে বলা হয়েছে, ‘দুর্বল স্মৃতিশক্তির একজন কমজোরি বয়স্ক ব্যক্তি’।
যদিও ওই প্রতিবেদনে ক্ষেপেছেন বাইডেন। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে মেজাজ হারিয়ে বাইডেন বলেন, আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সক্ষম।
এমন পরিস্থিতিতে একদিকে ডেমোক্রেটদের মধ্যে চলছে বাইডেনকে নিয়ে কানাঘুষা। অন্যদিকে বাগে পেয়ে বাইডেনের স্মৃতিশক্তি নিয়ে কটুকথা বলে বাগযুদ্ধে জড়িয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প।
গত বৃহস্পতিবার বার্মিংহামে অ্যালাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ওয়েবিনারে অধ্যাপক স্টিভেন অস্টাড বলেছেন, এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদের বয়স নিয়ে কথা উঠেছে, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বয়স এখন আলোচনার ফোকাসে।
অ্যালাবামা অধ্যাপক স্টিভেন বলেন, এটি এমন একটি ইস্যু যা কেবল তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মুখেই উত্থাপিত হচ্ছে না, নিজের দলের লোকরাও ফিসফিস করছে।