মাঝেমধ্যেই ঘুম থেকে উঠে কিংবা অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকার পর নড়াচড়া করতে গেলে ঘাড়ে প্রবল যন্ত্রণা হয়। মনে হয় যেন কাঁধটা শক্ত হয়ে গেছে; কোনোভাবেই নাড়ানো যাচ্ছে না। ঘাড়ে ব্যথার প্রাথমিক পর্যায় ঘাড় ঘোরানোর সময় ব্যথা হয়। সময় যত এগোতে থাকে, ততই ব্যথা অসহ্যকর হয়ে ওঠে এবং ঘাড় ও কাঁধের অঞ্চল শক্ত হয়ে যায়; তখন সমস্যা আরও বাড়ে।
কী কী কারণে ঘাড়ে ব্যথা হয়?
১. কাজের সূত্রে একটানা অনেকক্ষণ চেয়ারে বসে থাকা;
২. ঘুমের সময় ভুল ভঙ্গিতে শোয়া;
৩. অতিরিক্ত মানসিক চাপ;
৪. হঠাৎ টান ধরা।
প্রচণ্ড ব্যথা হলে কী করবেন?
ল্যাভেন্ডার অয়েল : প্রাচীনকাল থেকেই ব্যথা কমানোর কাজে ল্যাভেন্ডার ব্যবহার হয়ে এসেছে। ল্যাভেন্ডার অয়েল কিনে বাড়িতে রাখুন। ঘাড়ে ব্যথা হলে ল্যাভেন্ডার অয়েল লাগান। আরাম পাবেন।
গোসল : হালকা গরম পানিতে সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে চার-পাঁচ মিনিট গোসল করুন। গোসল করার সময় ঘাড় নাড়াচাড়া করবেন না। আস্তে আস্তে স্টিফ ঘাড় ঠিক হয়ে যাবে।
আইসপ্যাক : ঘাড়ের ব্যথা যদি অসহ্য হয়ে ওঠে, তাহলে আইসপ্যাক চাপা দিয়ে রাখুন। সঙ্গে সঙ্গে আরাম পাবেন।
হিটিং প্যাড : ঘাড়ের ওপর হিটিং প্যাড চেপে রাখুন। রক্ত সঞ্চালন বেড়ে ঘাড়ে ব্যথা কমবে।
ঘুম : ঘুমের সঙ্গে কোনো রকম আপস করা যাবে না। ঘুমানোর সময় খেয়াল রাখবেন যেন শোয়ার ধরন ঠিক থাকে। ভুলভাল ভঙ্গিমায় শোয়ার জন্য ঘাড়ে ব্যথা হয়। খুব বেশি উঁচু কিংবা শক্ত বালিশ নিয়ে ঘুমাবেন না।
কাজের মধ্যে বিরতি : অফিসে কাজ করতে করতে যখনই ক্লান্ত লাগবে, কাঁধে যন্ত্রণা হবে তখন চেয়ারে বসে না থেকে মিনিট দশেকের বিরতি নিন। হাঁটাহাঁটি করুন।
গাড়ি চালানোর সময় সতর্কতা : ‘লং ড্রাইভ’-এ যেতে অনেকেই পছন্দ করেন। তবে ফ্রোজেন শোল্ডার থাকলে একটানা অনেকক্ষণ গাড়ি চালাবেন না।
মানসিক চাপ কমানো : যতটা সম্ভব নিজেকে স্ট্রেসমুক্ত রাখুন। স্ট্রেস বাড়লে ঘুম কম হবে, ক্লান্তি থেকে ঘাড়ে ব্যথা হবে। এ জন্য প্রয়োজনে মেডিটেশন করুন।
শরীরচর্চা : এ সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যায়াম ছাড়া উপায় নেই। রোজ ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ের হালকা ব্যায়াম করুন। তাহলে ঘাড় সচল থাকবে। একজন অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিন।
লেখক : মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারস বিশেষজ্ঞ।