কোমর-পিঠের ব্যথা এক পরিচিত সমস্যা। এক সময় বয়স্কদের মধ্যে দেখা গেলেও, আজকাল ৩০ বছরের নিচেও অনেকে এ সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
সাধারণত অফিসে একটানা দাঁড়িয়ে কিংবা বসে কাজ করার দরুন বর্তমান তরুণ প্রজন্ম কোমর ব্যথায় ভুগছে। সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করেন অনেকেই। চিকিৎসকরা বলছেন, বয়সজনিত কারণ ছাড়াও নানা কারণে কোমরে ব্যথা হতে পারে।
সারাক্ষণ মোবাইলে মুখ গুঁজে বসে থাকা, ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ, মেরুদণ্ডের সমস্যা ইত্যাদি কারণে ৩০-এর আগেই কোমর-পিঠের ব্যথা নিয়ে ভুগছেন অনেকে। তবে ব্যথার ওষুধ বা ইনজেকশন ছাড়াও জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনলে এ ধরনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। জেনে নিন কীভাবে যন্ত্রণা থেকে রেহাই মিলবে।
শরীরচর্চা: কোমরের যন্ত্রণা শুরু হলে সেই সময়ে নড়াচড়া করাই মুশকিল। কিন্তু ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকরা বলছেন, একটু কষ্ট করে যদি সাধারণ কয়েকটি যোগাসন ও স্ট্রেচ করা যায়, তবে আরাম মিলবে। ব্যথা কমলে সাঁতার বা অ্যারোবিক্সও করা যেতে পারে। তবে এক দিনেই ফল মিলবে– এমনটা আশা করা যায় না। নিয়মিত এ চর্চা করলে তবেই উপকার পাওয়া যাবে। ব্যথা হলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ধূমপান: মেরুদণ্ডে কোনো রকম সমস্যা হলে তা থেকে রেহাই পেতে ধূমপায়ীদের অনেকটা সময় লাগে। যারা ধূমপান করেন না, তারা মেরুদণ্ডের বিভিন্ন সমস্যা থেকে তাড়াতাড়ি সেরে ওঠেন।
পর্যাপ্ত ঘুম: ঘুমের সঙ্গে শারীরবৃত্তীয় বিভিন্ন কার্যকলাপ জড়িয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুম কম হলে কোমরের ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। শরীরের বিভিন্ন পেশি, স্নায়ু সারাদিন কাজ করার পর এ সময়েই শিথিল হয়ে পড়ে। পরের দিনের জন্য রসদ সংগ্রহ করে ঘুমের মধ্যেই। তাই সুস্থ থাকতে গেলে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি।
দেহের ভঙ্গি বদল: সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর বিছানায় পিঠ দেওয়ামাত্রই কীভাবে শুয়ে আছেন, সে খেয়াল থাকে না অনেকের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শোয়ার ভুলেও অনেক সময়ে কোমরের ওপর চাপ পড়ে। তাই সঠিকভাবে শোয়ার অভ্যাস করতে হবে। একইভাবে টেবিল-চেয়ারে বসার সময়েও মেরুদণ্ড সোজা করে বসার চেষ্টা করতে হবে।
ওজন কমানো: চেহারা ভারী হলে কোমর-পিঠের যন্ত্রণা আরও বেড়ে যায়। এ সমস্যা এড়িয়ে চলতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ জরুরি। তাই খাওয়া-দাওয়ায় রাশ টানা, একই সঙ্গে নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে।
লেখক: মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারস বিশেষজ্ঞ