বঙ্গনিউজঃ দীর্ঘ ৯০ দিন পর আবার রাজপথে মুখোমুখি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। আজ রাজধানী ঢাকায় দুদল কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে। আওয়ামী লীগ শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ এবং বিএনপি কালো পতাকা মিছিলের মাধ্যমে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে। নির্বাচনে বড় বিজয়ের পরও আন্দোলনের মাঠে বিরোধীদের কোনো ছাড় দিতে নারাজ ক্ষমতাসীনরা। আগের মতো ‘পালটা কর্মসূচি’ নিয়ে যে কোনো মূল্যে রাজপথ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। সেই লক্ষ্যে প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে নির্দেশনা দিয়েছে দলটি। অন্যদিকে নির্বাচন নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা থাকলেও আবারও সাংগঠনিক শক্তির জানান দিতে চায় বিএনপি। ঢাকা মহানগরের পাশাপাশি আশপাশের জেলা থেকে নেতাকর্মীদের মিছিলে অংশ নিতে বলা হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং অবৈধ সংসদ বাতিলসহ একদফা দাবি আদায়ে দলটির এই কর্মসূচি।’ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন শেষে দুদলের এই প্রথম কর্মসূচি ঘিরে সব মহলে সৃষ্টি হয়েছে নানা কৌতূহল। কর্মসূচি ঘিরে সতর্ক অবস্থায় থাকার কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও
সতর্কাবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ
রাজধানীর থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিটে পাহারায় থাকবে নেতাকর্মী
নির্বাচনে বড় বিজয়ের পরেও আন্দোলনের মাঠে বিরোধীদের কোনো ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ। যে কোনো মূল্যে রাজপথ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানা কর্মসূচি নিয়ে পাহারায় থাকবে ক্ষমতাসীনরা। এরই অংশ হিসাবে আজ বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের দিনে রাজধানীতে শান্তি সমাবেশ করবে তারা। পাশাপাশি রাজধানীর প্রতিটি থানা-ওয়ার্ড, ইউনিটে সতর্কাবস্থানে থাকবে দলের নেতাকর্মীরা। ভোটের আগের মতোই সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরাও পৃথক কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে। ইতোমধ্যে তাদের এ বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি-পালটাপালটি কর্মসূচি নয়, আন্দোলনের নামে কেউ যেন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে তারা সতর্ক রয়েছেন। বিএনপির কর্মসূচি প্রসঙ্গে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেক ভোগান্তি এ দেশে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন। আর এসব অপকর্ম করলে তার শাস্তি পেতেই হবে। কঠোরভাবে দমন করব, এটাই সিদ্ধান্ত আমাদের। আপনারা যত আন্দোলন করুন, আমাদের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ অব্যাহত থাকবে। বিএনপির উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আন্দোলন করেন। ২৮ অক্টোবর এ দেশে আবার ৫ বছর পর আসবে। তখন করবেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলন করার চেষ্টা করবেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পরে এটা আমাদের প্রথম সমাবেশ কর্মসূচি। এই কর্মসূচি সফলে ভালোভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছি। বর্ধিত সভাও করেছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সমাবেশে মিছিল নিয়ে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একই বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করব। এই কর্মসূচি ঘিরে বিএনপি যদি কোনো হটকারী সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের মোকাবিলা করব। আমরা আন্দোলনের নামে কাউকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার কোনো সুযোগ দেব না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০২২ সালের শেষের দিক থেকে রাজপথের কর্মসূচিতে বেশি সোচ্চার হয় বিএনপি। ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকটি সমাবেশ করার পরে সরকারকে আলটিমেটাম দিয়ে ওই বছর ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে বিএনপি। ওই সমাবেশের দিন রাজধানীতে নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিল আওয়ামী লীগ। এরপর থেকে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচির দিনে নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থেকেছে আওয়ামী লীগও। সর্বশেষ গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের দিন পালটা সমাবেশ করে আওয়ামী লীগও। এরপর বিএনপির হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি প্রতিহতেও মাঠে থেকেছে আওয়ামী লীগ।
এরই মধ্যে বিএনপিসহ তাদের সমমনাদের বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিশাল বিজয়ের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করে। ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে। ঠিক তার আগে আবারও মাঠের কর্মসূচিতে ফিরছে বিএনপি। আজ ঢাকায় কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। এই কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নির্বাচনের পর খোশমেজাজে থাকলেও, বিএনপির কর্মসূচির দিন রাজধানীতে বড় জমায়েতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এছাড়া বিএনপি কালো পতাকার মিছিলের নামে কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড যেন করতে না পারে, সেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে দলটি। রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নির্বাচন ঠেকাতে না পেরে নেতাকর্মীদের হতাশা কাটাতে বিএনপি কর্মসূচি দিয়েছে। এই কর্মসূচি ঘিরে তাদের নতুন কোনো ‘মতলব’ থাকতে পারে। ফলে বিএনপির এই কর্মসূচিকে হালকাভাবে নিতে চান না তার।
এদিকে সমাবেশ ঘিরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে মূল মঞ্চ। এই সমাবেশ সফলে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভাও করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। নেতাকর্মীদের দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ জানান, দুপুর ২টা থেকে প্রতি থানা ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মিছিলসহ দলে দলে সমাবেশে যোগ দেবেন। বেলা ৩টায় প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখবেন।
২২ শর্তে অনুমতি : এদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে ২২ শর্তে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএমপি কমিশনারের পক্ষে উপ-পুলিশ কমিশনার (অপারেশন্স) মো. আবু ইউসুফ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে দেওয়া এক চিঠিতে এই অনুমোদনের কথা জানান। ডিএমপির চিঠিতে বলা হয়, ‘২২ জানুয়ারি করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে শনিবার বেলা ৩টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘শান্তি ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক সমাবেশের অনুমতি প্রদান করা হলো।’
নেতাকর্মীদের চাঙা করাই বিএনপির লক্ষ্য
ভোট-পরবর্তী মাঠের প্রথম কর্মসূচিতে বড় জমায়েতের প্রস্তুতি
একদফা দাবিতে রাজপথের আন্দোলনে গতি আনতে চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে আইনি প্রক্রিয়ায় নেতাকর্মীদের জামিনে মুক্ত করার পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এরই অংশ হিসাবে জেলার পর আজ ঢাকাসহ সব মহানগরে কালো পতাকা মিছিল করবে। রাজধানী ঢাকার কর্মসূচিতে বড় জমায়েতের প্রস্তুতি নিয়েছে। ভোট-পরবর্তী মাঠের প্রথম এ কর্মসূচিতে ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা অংশ নেবে। ৯০ দিন পর রাজপথের কর্মসূচিতে ফেরার মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা হবে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির ব্যানারে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে দুপুর ২টায় কালো পতাকা মিছিল শুরু হবে। মিছিলটি কাকরাইল ও মালিবাগ মোড় হয়ে মগবাজার মোড়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ কেন্দ্রীয় এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি চলবে। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ডাকে ভোট বর্জন করে আমাদের আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন দিয়েছে দেশের মানুষ। এসব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।’
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ঢাকায় নয়াপল্টনে কালো পতাকা মিছিলের মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং অবৈধ সংসদ বাতিলসহ একদফা দাবি আদায়ে এই কর্মসূচি।’
ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ‘কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচিতে অতীতের মতোই বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এতে অংশ নেবেন। আশা করি এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতা করবে।’
বিএনপি নেতারা জানান, অতীতের মতোই শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে চান তারা। রাজধানীতে কালো পতাকা মিছিলে আশপাশের সাংগঠনিক জেলার নেতাকর্মীদেরও অংশ নিতে বলা হয়েছে। এই মিছিলে নেতাকর্মী ছাড়াও পেশাজীবীদের অংশ নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নেতাদের দাবি, এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীরা আবারও উজ্জীবিত হবে। গণতান্ত্রিক বিশ্বকেও বার্তা দেওয়া যাবে বিএনপি যৌক্তিক দাবি নিয়ে মাঠেই রয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়বে না।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচিতে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটে। সরকার বাধা না দিলে সাধারণ জনগণও এসব কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকেন। কালো পতাকা মিছিলেও এর ব্যতিক্রম হবে না। তিনি বলেন, ‘পাতানো’, ‘ডামি’ আর ‘একতরফা’ নির্বাচনের পরও আওয়ামী লীগ আতঙ্কে আছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদ বলেন, নেতাকর্মীদের মনোবল এখনো সুদৃঢ়। যে কোনো কর্মসূচি পালনে তারা সব সময়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আছেন। ‘ফ্যাসিবাদ’ সরকারের বিরুদ্ধে তাদের চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে কালো পতাকা মিছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পরদিন থেকে গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত সরকার পতনের একদফা দাবিতে হরতাল, অবরোধ ও ভোট বর্জনের প্রচারণাসহ লাগাতার কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। পরে দুদিন ভোট বর্জনে জনগণকে ধন্যবাদ দিয়ে লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি পালন করে। দলটির নেতারা মনে করছেন, ভোট বর্জনের আন্দোলন সফল হয়েছে। তবে একদফা দাবি আদায়ে আন্দোলন সফল না হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্লান্তি ও হতাশা ভর করছে। এছাড়া নেতাকর্মীদের অনেকেই মামলার কারণে কারাবন্দি, নয়তো ফেরারি অবস্থায় কাটাচ্ছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নেতাকর্মীদের সক্রিয় করতে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দেশের সব জেলা সদরে কালো পতাকা মিছিল করে দিলটির নেতাকর্মীরা। আজ রাজধানী ঢাকাসহ সব মহানগরে একই কর্মসূচি পালন করা হবে।
নেতারা জানান, বিএনপিসহ মিত্রদের ডাকে জনগণ ভোট বর্জন করেছে এটা বড় সফলতা। এর মধ্য দিয়ে জনগণ কী চায় তার বার্তা পেয়েছে বিএনপি। এখন একদফা দাবি আদায়ে মাঠের আন্দোলনের কোনো বিকল্প দেখছে না দল। আগের দাবির পাশাপাশি এখন নির্বাচন বাতিলের দাবিও যুক্ত করা হবে। নেতারা আরও জানান, ভোটের পর কোনো কঠোর কর্মসূচি না থাকার কারণে আগের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতারের তৎপরতা তেমন নেই। এ পরিস্থিতিতে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় ও গুলশান চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের পর এবার জেলা, মহানগরসহ সারা দেশে দলীয় অফিসের তালাও খুলতে শুরু করেছে নেতাকর্মীরা। আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরাও ধীরে ধীরে মাঠে ফিরছে। অতীতের মতোই শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে চান তারা। রাজধানীতে কালো পতাকা মিছিলে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেবে। আশপাশের সাংগঠনিক জেলার নেতাকর্মীরাও থাকবে।