বঙ্গনিউজঃ ইসরাইলগামী সব জাহাজে হামলার হুমকি দিয়েছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। একই সঙ্গে ইসরাইলি বন্দরগুলোতে যাওয়া এবং সেখানে কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিরুদ্ধে সব আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিকে সতর্কও করেছে গোষ্ঠীটি।
এর আগে চলতি মাসেই ইসরাইলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালান ইয়েমেনের ইরানসমর্থিত এই বিদ্রোহীরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয়তা যেটাই হোক না কেন, ইসরাইলগামী সব জাহাজকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হবে বলে শনিবার হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইয়েমেনের হুথি আন্দোলন। একই সঙ্গে ইসরাইলি বন্দরগুলোতে যাওয়া ও সেখানে কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিরুদ্ধে সব আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিকে সতর্কও করেছে গোষ্ঠীটি।
টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল এবং তাদের এই বর্বর হামলার মধ্যেই ইরানসমর্থিত এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি হুশিয়ারি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
হুথিরা লোহিতসাগর এবং ওই সাগরের বাব আল-মান্দেব প্রণালিতে ইসরাইলি-সংযুক্ত বেশ কয়েকটি জাহাজ আক্রমণ চালানোর পাশাপাশি জব্দও করেছে। এই সমুদ্রপথ দিয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ তেলবাহী জাহাজ যাতায়াত করে থাকে। এ ছাড়া হামাসের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর ইসরাইলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সশস্ত্র ড্রোন নিক্ষেপও করেছে হুথিরা।
হুথি কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের কর্মকাণ্ড ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনের প্রদর্শন। অন্যদিকে ইসরাইল বলেছে, জাহাজে হামলা ‘ইরানের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড’ এবং এটি আন্তর্জাতিক সমুদ্র নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
হুথি গেষ্ঠিীর একজন সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, লোহিতসাগর এবং আরব সাগর থেকে সব জাহাজকে ইসরাইলি বন্দরগুলোর দিকে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘যদি গাজা তার প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ না পায়, তা হলে লোহিতসাগরে ইসরাইলি বন্দরগুলোর দিকে যাওয়া সব জাহাজ তাদের জাতীয়তা নির্বিশেষে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।’
তাৎক্ষণিকভাবে এই আদেশ কার্যকর হবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় ইলাত শহরের কয়েকটি সামরিক চৌকিতে একের পর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হুথি গোষ্ঠী। তবে ওই হামলায় ইসরাইলে কোনো ক্ষতি কিংবা হতাহত হয়েছে কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা সেই সময় জানান, বুধবার ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে ছোড়া একটি ড্রোনে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আরলে বার্ক ডেস্ট্রয়ার। তবে এতে কোনো ক্ষতি কিংবা হতাহত হয়নি। এ ছাড়া ড্রোনটির লক্ষ্যবস্তুও পরিষ্কার ছিল না।
মূলত গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ লোহিতসাগরে ষষ্ঠবারের মতো ড্রোনে গুলি চালিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী। মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় ইসরাইলি কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজে সাম্প্রতিক একের পর এক হামলার মাঝেই গত সপ্তাহে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।