শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ-আশঙ্কা এতটাই মারাত্মক হয়েছিল, যাকে বলে প্রাণ নিয়ে টানাটানি। কিন্তু দেবদূত হয়ে এলেন যারা, তাদের কল্যাণে নীলপদ্ম পাপড়ি মেলেছে।
জ্যোতির্ময় এক পৃথিবীর দিকে মুখ, আমি শাঁখ বাজাচ্ছি। যুদ্ধজয় হয়েছে।
কলকাতা সফরকালে ৭ অক্টোবর আমার হার্ট অ্যাটাক হয়, যা বুঝতেই পারিনি। অস্থিরতার মধ্যে সারারাত কাটানোর পর অসুস্থ হয়ে ৮ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর যে দেবদূতরা আমার প্রাণ বাঁচাতে লড়াই করেছিলেন, তাঁদের একজন কলকাতার কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট ডা. অভীক কারক। জটিল ইন্টারভেনশনগুলো করতে ইতোমধ্যে দক্ষতা দেখিয়েছেন তিনি। মানুষকে হার্টের সমস্যায় চিকিৎসা দিয়ে নতুন জীবনদানকারী এই চিকিৎসকের সুনাম পুরো কলকাতাজুড়ে।
আমাকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিবেশী দেশটির স্বনামধন্য ব্যবসায়ী আশীষ সাহার ক্ষুদিরাম হাসপাতালে, যেখানে ডা. প্রবীর খুব দ্রুত আমার রোগ চিহ্নিত করেন এবং চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেন ফরটিস হাসপাতালে। হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে অনেকটাই কমে গিয়েছিল অক্সিজেনের মাত্রা। প্রধান দুটি ভাল্বের মধ্যে একটি শতভাগ ব্লক। সেখানেই ডা. অভীক ও তাঁর টিমের ডা. শুভানন রায়, ডা. বাসবেন্দ্র চৌধুরী, ডা.দীপংকর, নার্সসহ সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় অ্যানজিপ্লাস্টির মাধ্যমে প্রাণ ফিরে পেয়েছি। হাসপাতাল থেকে ১৩ অক্টোবর ছাড়া পেলেও পরবর্তী চেক-আপ শেষে দেশে ফিরেছি ৬ নভেম্বর।
গত ৫ অক্টোবর মাত্র এক সপ্তাহের জন্য কলকাতা গিয়ে এমন বিপদে পড়ার সময়টাতে সার্বক্ষণিক খোঁজ নিয়েছেন বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের রঞ্জন দাদা। পাশে ছিল প্রাণপ্রিয় ইন্দো-বাংলা প্রেস ক্লাবের সব সদস্য, যাদের কাছে আমি ঋণী হয়ে রইলাম। এছাড়া অ্যাপোলো হাসপাতালের সিইও রানা দাদা খবর পেয়ে সৃজাত দাদা ও সম্রাটকে পাঠিয়েছেন, পরমাত্মীয় ভাই গৌতম ছিল সার্বক্ষণিক পাশে। বাংলানিউজের সহকর্মী কলকাতা প্রতিনিধি ভাস্কর, শুভ, সুকান্ত দাদা, দীপক দাদা, ছোট ভাই অতনুসহ বাংলাদেশ থেকে আমার বাংলানিউজ পরিবার, এডিটর জুয়েল মাজহার ভাই, ডিজিএম আজিজুর রহমান অনু ভাই, প্রণব দাদা খোঁজ-খবর নিয়েছেন। আমার সহকর্মী, স্বজন, শুভানুধ্যায়ী, প্রাণপ্রিয় সংগঠন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)-এর সব সদস্য চিকিৎসার খোঁজ নিয়েছেন, দোয়া/আশীর্বাদ করেছেন, আমার পরিবারের খবর নিয়েছেন। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
কালো মৃত্যুর সেই ক্রূর কঠিন সুস্পষ্ট হাতছানি বিস্মৃত হওয়ার নয়। মৃত্যুদূত এসে জীবনকে অবিন্যস্ত করে দিয়ে গেছে, শরীরটাকে ভেঙেচুরে তছনছ করে দিয়ে গেছে। কবিগুরুর কথায়-
‘অন্ধতামস গহ্বর হতে
ফিরিনু সূর্যালোকে।
বিস্মিত হয়ে আপনার পানে
হেরিনু নূতন চোখে। ’