কোমর ব্যথার রোগীদের জন্য পরামর্শ

Home Page » স্বাস্থ্য ও সেবা » কোমর ব্যথার রোগীদের জন্য পরামর্শ
মঙ্গলবার ● ২১ নভেম্বর ২০২৩


কোমর ব্যথার রোগীদের জন্য পরামর্শ

মানুষের শরীরে সাধারণত যত জটিল সমস্যা হয়, এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কোমর ব্যথা অন্যতম। কেবল একজন দীর্ঘমেয়াদি কোমর ব্যথার রোগী জানেন, তাঁর জীবনে কী ঘটে যাচ্ছে। এ কারণেই কোমর ব্যথার রোগীরা বিষণ্নতা, উদ্বেগ ইত্যাদি মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন। অনেকে ভাবেন, এই ব্যথা তাঁর জীবনে অভিশাপ।
কোমর ব্যথার রোগীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নেন অনেকেই। হাতুড়ে চিকিৎসক থেকে শুরু করে অনেক স্বাস্থ্য পেশাজীবীই কোমর ব্যথার রোগীদের মনগড়া চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এমন অনেক দীর্ঘমেয়াদি কোমর ব্যথার রোগী পাওয়া যায়, যিনি বছরব্যাপী ব্যথার ওষুধ সেবন করে কিডনি বিকল করে ফেলেছেন অথবা পেটে আলসার তৈরি হয়ে গেছে। উন্নত বিশ্বে কোমর ব্যথা চিকিৎসা হয় নীতিমালা মেনে। বাংলাদেশে কোমর ব্যথা রোগীর চিকিৎসায় কোনো নীতিমালা মেনে চলা হয় না; এমনকি কোনো সরকারি নীতিমালাও নেই। বাংলাদেশে কোমর ব্যথা রোগীদের নিয়ে কোনো উন্নত গবেষণা হয় না। ফলে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি কোমর ব্যথার রোগীরা সহসাই অবহেলিত ও ভুল চিকিৎসার স্বীকার হন।
কী উদ্যোগ প্রয়োজন
কোমর ব্যথা নিয়ে প্রচুর উন্নতমানের গবেষণা দরকার। বাংলাদেশে কোমর ব্যথা রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে যেসব ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে, তা একেবারেই অপ্রতুল ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তা ছাড়া এ দেশে কোমর ব্যথার চিকিৎসায় ব্যবহৃত পদ্ধতি, যেমন– পূর্ণ বিশ্রাম, ব্যথার ওষুধ, শর্ট ওয়েভ, মাইক্রোওয়েভ থেরাপি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে অগ্রহণযোগ্য। আন্তর্জাতিক গবেষণা থেকে দেখা যায়, দীর্ঘমেয়াদি কোমর ব্যথার চিকিৎসায় উন্নত ফিজিওথেরাপি সবচেয়ে কার্যকর। তাই কোমর ব্যথার রোগীদের সুচিকিৎসায় প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ।
রোগীরা কী করবেন?
সচেতন হতে হবে। কোথায় সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যায়, তা খুঁজে বের করা রোগীদেরই দায়িত্ব। ব্যথার ওষুধ সেবনের মনোভাব পরিহার করতে হবে। যারা দীর্ঘদিন ধরে কোমর ব্যথায় ভুগছেন, তারা মনে রাখবেন বিশ্রাম ব্যথা কমাতে নয়, বরং বাড়াতে সাহায্য করবে। কোমরের বেল্ট ব্যবহার করবেন না। ফিজিওথেরাপির নামে বাংলাদেশে যে চিকিৎসা দেওয়া হয়, যেমন– শর্ট ওয়েভ, মাইক্রোওয়েভ তা অকার্যকর। অনেকে দীর্ঘমেয়াদি কোমর ব্যথার রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসার কথা বলে থাকেন; যা অগ্রহণযোগ্য তো বটেই, আন্তর্জাতিক নীতিমালায় এটি একটি নিষিদ্ধ চিকিৎসা পদ্ধতি।

উন্নত চিকিৎসার কী উদ্যোগ আছে?
অস্ট্রেলিয়ার লা ট্রোব বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং হাসনাহেনা পেইন রিসার্চ সেন্টার যৌথভাবে কোমর ব্যথা রোগীদের ওপর গবেষণা পরিচালনা করছে। এ গবেষণা সফল হলে দেশে কোমর ব্যথা চিকিৎসায় নতুন ও কার্যকর দ্বার উন্মোচন হবে।
লেখক : কোমর ব্যথাবিষয়ক গবেষক ও চিকিৎসক, লা ট্রোব বিশ্ববিদ্যালয়, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া। কনসালট্যান্ট, হাসনাহেনা পেইন রিসার্চ সেন্টার, উত্তরা, ঢাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১২:১৪:০৫ ● ১৭২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ