বঙ্গনিউজঃ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগে শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ স্থগিত করেছে আইসিসি। দেশটির ক্রিকেট বোর্ডে দুর্নীতির অভিযোগ এবং সে জন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপ নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। আইসিসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। ১৯৮১ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ পেয়েছিল দেশটি।
আইসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আইসিসি বোর্ড আজ সভায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করেছে। বিশেষ করে, স্বাধীনভাবে কাজ করতে ক্রিকেট প্রশাসনকে সরকারি হস্তক্ষেপের বাইরে থাকার প্রয়োজন ছিল। সময়মতো এই স্থগিতাদেশের শর্তগুলো জানিয়ে দেবে আইসিসি বোর্ড।’ গতকালই বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচটি খেলেছে শ্রীলঙ্কা। এ মুহূর্তে পয়েন্ট তালিকার নয়ে আছে তারা। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডকে (এসএলসি) এর আগে বরখাস্ত করেছিল দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এরপর শ্রীলঙ্কাকে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জেতানো সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে চেয়ারম্যান করে বোর্ডে অর্ন্তবর্তীকালিন কমিটিও গঠন করা হয়। কিন্তু শ্রীলঙ্কার আপিল আদালত অন্তর্বর্তীকালিন কমিটির কার্যক্রম দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান রানাসিংহে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডকে বরখাস্ত করে রানাতুঙ্গার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালিন কমিটি অনুমোদন করেন। একদিন পরই শ্রীলঙ্কার আদালত সে কমিটির কার্যক্রম দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। এরপর শ্রীলঙ্কার আইনসভাতেও এসএলসির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এমনিতে ১৯৭৩ সালে জাতীয় ক্রীড়া আইন অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার সব জাতীয় দল চূড়ান্ত অনুমোদনে ভূমিকা রাখেন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী। বোর্ডে সরকার নিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালিন কমিটি ক্ষমতায় থাকলেও আইসিসি এর আগে এত দ্রুত সদস্যপদ স্থগিত করেনি। এর আগে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডে ২০১৪ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালিন কমিটি কাজ করেছে, তখন আইসিসি অর্থ দিয়েছে শর্তের ভিত্তিতে। তখন অবশ্য বোর্ড মিটিংয়ে এসএলসিকে পর্যবেক্ষক স্তরে নামিয়ে দিয়েছিল আইসিসি। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড তখনো আইসিসির সদস্য ছিল। আহমেদাবাদে আগামী ১৮–২১ নভেম্বর আইসিসির ত্রৈমাসিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর আগে আজ শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে আলোচনা করেছে আইসিসি বোর্ড। এসএলসির সব জায়গায় শ্রীলঙ্কা সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বিগ্ন আইসিসি। বোর্ড পরিচালনা থেকে আর্থিক বিষয়াদি এমনকি জাতীয় দলের বিভিন্ন বিষয়েও শ্রীলঙ্কা সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বিগ্ন ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডকে নিজেদের এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে আইসিসি এবং আগামী ২১ নভেম্বর আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ জানানো হবে।