বঙ্গ-নিউজঃ মানুষের সামগ্রিক সুস্থতা শুধু তার শরীরের সুস্থতায় নয়। মনের সুস্থতাও জরুরি। কারো জীবনে আনন্দের বহিঃপ্রকাশের সঙ্গে তার মনের সম্পর্ক রয়েছে।বাংলাদেশের মানসিক চিকিৎসকরা বলছেন, যদিও আগের তুলনায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু এখনো দেশের মানুষজনের মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কাছে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা রয়েছে। যদিও শারীরিক অন্যান্য সমস্যার মতো মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে সঠিক কাউন্সেলিং ও চিকিৎসায় পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করা যায়।আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আস্তে আস্তে মানুষ সচেতন হতে শুরু করেছে। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাউন্সেলিং তাদের কাছে উপাদেয় মনে হলেও মানসিক হাসপাতাল তাদের কাছে পাগলাগারদ বৈ কিছু নয়। ধরুন কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলো। তখন স্বভাবতই পরিচিতরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করবে, কি হয়েছে? যখন কেউ বলবে মানসিক হাসপাতাল তখন অনেকেই ভাববেন ঐ ব্যক্তি পাগল হয়ে গেছেন। এই যে ধারণা, এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল।
স্পেনের গ্রানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানাচ্ছেন, মানসিক অবসাদ ও হৃদ্রোগের ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’-এর মধ্যে বেশ কিছু সাদৃশ্য রয়েছে। এই কথা বলার মানে অবহেলা করলে মানসিক অবসাদ ডেকে আনতে পারে বেশ কিছু বিপজ্জনক রোগ। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে মানসিক অবসাদ সংবহনতন্ত্রের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে, বাড়িয়ে দিতে পারে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও।সারাবিশ্বেই হৃদরোগের ঝুঁকি মাত্রাতিরিক্ত হারে বাড়ছে। হৃদরোগের মধ্যে কিশোররাও বাদ নেই। কিশোরদের এই হৃদরোগের ঝুঁকির পেছনে অবশ্যই মানসিক অবসাদের প্রভাব রয়েছে। প্রজন্মের বিশাল একটি অংশ অনলাইনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। এই নির্ভরশীলতা থেকে তারা বের হতে পারছে না। যেহেতু বের হতে পারছে না তাই তারা একসময় একঘেয়েমিতে ভুগে। এই একঘেয়েমিই মূলত তাদের যন্ত্রণার কারণ।মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে। মানসিক রোগ বা সমস্যা সম্বন্ধে একেবারে কেউ কিছু জানেন না সেটা বলা যাবে না। তবে এর সংখ্যা অতি নগণ্য। একে সচেতনতার অভাব হিসাবে ধরে নেওয়া যায়। যদি রোগটি সম্বন্ধে জানা থাকে তবে সুবিধা হলো, রোগী কখন কি ধরনের আচরণ করছে, কেন করছে, কি বলছে, কেন বলছে এসবের স্পষ্ট একটা ব্যাখ্যা নিজের কাছে থাকে। অন্যথায় রোগীকে ভুল বোঝার সম্ভাবনাও থাকে প্রচুর। চিকিৎসাও ব্যাহত হয়। তাই যার মানসিক রোগ আছে তার স্বজনদের উচিত রোগটি সম্পর্কে ডাক্তারের কাছ থেকে ভালো করে জেনে নেওয়া। জেনে নেওয়া ভাল রোগটির নাম কী? রোগাটির ধরণ কেমন? অর্থাৎ কখন বাড়তে পারে বা কমতে পারে। রোগটির বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য থাকলে সে সম্পর্কেও জানতে হবে। বর্তমানে ইন্টারনেট সুবিধা গ্রহণ করে আরো ভালো করে বিষয়টি সম্পর্কে জানার সুযোগও প্রসারিত হয়েছে। যদি রোগের নাম জানা থাকে তবে ইন্টারনেট সুবিধা গ্রহণ করে এ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে নীতিনির্ধারকদেরও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি। এ বিষয়ে উপযুক্ত শিক্ষাও পৌঁছে দেওয়া দরকার।