বঙ্গনিউজঃ ডায়াবেটিস ভয়ানকভাবে পায়ের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। ডায়াবেটিসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্নায়ু। এটির কাজ হলো অনুভূতি বহন করা। এটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনুভূতি লোপ পায়। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির পায়ে আঘাত লাগলেও ব্যথা-বেদনা অনুভূত হয় না। সে কারণে ছোট আঘাত থেকে অগোচরেই তৈরি হতে পারে ক্ষত।
ডায়াবেটিসে রক্তনালির রোগের কারণে রক্ত চলাচল কমে যায়, যা ঘা শুকাতে সময় লাগায়। চিনির মাত্রা বেশি থাকায় ইনফেকশন থাকে সব সময় সতেজ। ফলে একসময় এসব ছোটখাটো ক্ষত জটিল আকার ধারণ করে। গ্যাংগ্রিন হয়ে যেতে পারে পায়ে। পা কেটে ফেলতে হয় কখনও কখনও। এসব প্রতিরোধের জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। নিয়মিত পা পর্যবেক্ষণ প্রতিদিন সময় করে রোগীরা তাদের পা পর্যবেক্ষণ করবেন। পা কেটে গেল, নাকি কোনো ক্ষত সৃষ্টি হলো– দেখতে হবে। ফোসকা উঠলে, পা ফুলে গেলে, লাল হয়ে গেলে কিংবা নখের সমস্যা হলে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। দুই আঙুলের মধ্যে অনেক সময় ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। সে জন্য খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হবে এসব। প্রতিদিন পা পরিষ্কার করা কুসুম গরম পানি দিয়ে পা পরিষ্কার করতে হবে প্রতিদিন। পা ধোয়ার পর শুকনা কাপড় বা টিস্যু পেপার দিয়ে পা মুছে ফেলতে হবে, বিশেষত দুই আঙুলের মধ্যে যাতে সিক্ত না থাকে। আর্দ্রতা বজায় রাখা স্নায়ুর ব্যাধি হলে ঘাম নিঃসরণ কমে যায়। ফলে পা শুকনা খসখসে হয়ে যেতে পারে। এমন শুকনা পা ফেটে অনেক সময় ঘা হয়ে যায়। সে জন্য ভ্যাসলিন কিংবা অলিভ অয়েল মাখতে হবে। পাদুকা নির্বাচন যাদের নিউরোপ্যাথি রয়েছে, তারা খালি পায়ে হাঁটবেন না। এমনকি ঘরের মধ্যেও নয়। বাইরে গেলে জুতা পরিধান করতে হবে। জুতা বেশি আঁটসাঁট কিংবা ঢিলেঢালা হওয়া যাবে না। পরিষ্কার মোজাসহ জুতা পরতে হবে। ফোসকা, গুটি ফোসকা, গুটি উঠলে নিজে নিজে কেটে ফেলা মোটেও উচিত নয়। মনে রাখবেন, ফোসকা কিংবা গুটি যথাযথভাবে অপসারণ না করলে হতে পারে ইনফেকশন। নিয়মিত চেকআপ বছরে অন্তত একবার বিশেষজ্ঞের সাহায্যে পায়ের স্নায়ুর সংবেদন ও রক্তনালির রক্তপ্রবাহের অবস্থা পরখ করতে হবে। পায়ের রক্ত চলাচল ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। সর্বোপরি চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও ধূমপান বর্জন করতে হবে। খাদ্য শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।