বঙ্গ-নিউজঃ
স্ট্রোক কী
মস্তিষ্কের কোনো অংশে হঠাৎ করে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে বা রক্তক্ষরণ হলে যেসব উপসর্গ দেখা দেয়, সে অবস্থাকে মেডিকেলের পরিভাষায় স্ট্রোক বলা হয়।
স্ট্রোক কাদের হয়
স্ট্রোক মূলত বয়স্কদের রোগ। তবে যে কোনো বয়সেই স্ট্রোক হতে পারে। স্ট্রোকের কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ডিসলিপিডেমিয়া (রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রার তারতম্য), হার্টের অসুখ (ভাস্কুলার হার্ট ডিজিজ, এট্রিয়াল ফ্রিবিলেশন)। এ ছাড়া যারা ধূমপান করেন, অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস রয়েছে এবং তুলনামূলক কম শারীরিক পরিশ্রম করেন, তাদের মধ্যেও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।
স্ট্রোক চেনার উপায়স্ট্রোকের অনেক ধরনের উপসর্গ থাকতে পারে। তবে সচরাচর যেসব উপসর্গ দেখা যায়, তা খুব সহজেই নিম্নোক্ত ফর্মুলা দিয়ে মনে রাখা সম্ভব–
এফএএসটি : ফেস (মুখ), আর্ম (বাহু), স্পিচ (কথা), টাইম (সময়) ফেস (মুখ) : মুখ একদিকে বেঁকে যাওয়া। আর্ম (বাহু) : একটি হাত বা পা দুর্বল হয়ে যাওয়া। স্পিচ (কথা) : কথা জড়িয়ে যাওয়া। টাইম (সময়) : যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নেওয়া। স্ট্রোক শনাক্তকরণের উপায় সিটি স্ক্যান/এমআরআই অব ব্রেইন পরীক্ষা করে স্ট্রোক সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। এ ছাড়া রক্ত পরীক্ষা, ইকোকার্ডিওগ্রাফি ও ক্যারোটিড ডপলার পরীক্ষা করে স্ট্রোকের রিস্ক ফ্যাক্টর সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
স্ট্রোকের চিকিৎসা
স্ট্রোকের চিকিৎসা প্রকারভেদে ভিন্নতর হয়ে থাকে। ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রোগী যদি তিন ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে আসেন, সে ক্ষেত্রে থ্রম্বোলাইসিস নামে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতির সুযোগ রয়েছে। স্ট্রোক কনসালট্যান্ট বিশেষ ক্রাইটেরিয়ার মাধ্যমে রোগী থ্রম্বোলাইসিস যোগ্য কিনা, তা নির্ধারণ করেন। এ ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে মেকানিক্যাল থ্রম্বোমির মাধ্যমে ইস্কেমিক স্ট্রোকের চিকিৎসা করা যায়। তবে অধিকাংশ রোগীই হাসপাতালে আসতে দেরি করে ফেলেন। সে ক্ষেত্রে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধের মাধ্যমে স্ট্রোকের চিকিৎসা করা হয়। হেমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে থ্রম্বোলাইসিস বা অ্যাসপিরিন ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে ব্রেইনের অপারেশন করলে কিছু রোগী উপকৃত হন। এ ছাড়া রোগীর যেসব রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে, যেমন– ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদির সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে পুনরায় স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে ফেলা সম্ভব।
স্ট্রোক-পরবর্তী পুনর্বাসন
স্ট্রোকের পরে হাত-পা প্যারালাইসিস বা কথা জড়িয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা ভালো হতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। ফিজিওথেরাপিস্টরা সাধারণত পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব সমস্যা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন।