সাজেদা আহমেদ, জলবায়ূ ও পরিবেশ বিষয়ক প্রতিনিধি, বঙ্গ-নিউজ:
হাওরাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি আমলে নিয়ে আসন্ন দুবাই জলবায়ু সম্মেলনে তহবিল গঠনে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান আয়োজকরা।
হাওড় সুরক্ষায় জলবায়ু তহবিল নিশ্চিত কর’ স্লোগানে নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলায় হয়ে গেল যুব জলবায়ু সম্মেলন।
গতকাল বৃহস্পতিবার(২৬অক্টোবর) উপজেলার রংছাতি এলাকার গারো পাহাড়ের পাদদেশ ক্ষতিগ্রস্ত চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামে এ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজ (বারসিক) ও ৩৮টি যুব সংগঠনের জোট নেত্রকোণা সম্মিলিত যুব সমাজ।
সম্মেলন উদ্বোধনের পর হাওরের প্রাণ-প্রকৃতি ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিভিন্ন দাবি ও সচেতনতামূলক স্লোগান সংবলিত ফেস্টুন নিয়ে যুব স্বেচ্ছাসেবক, কৃষক, মৎস্যজীবী, বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সদস্য ও গ্রামবাসী অংশ নেয়। এ সময় তারা হাওর রক্ষায় নানা স্লোগান দেন।
অনুষ্ঠানে নেত্রকোণার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিপিন বিশ্বাস, বারসিকের পরিচালক ও গবেষক পাভেল পার্থ, কলমাকান্দা উপজেলা যুব কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কৃষি কর্মকর্তা সৌহার্দ্য দারিং, নৃবিজ্ঞানী সৈয়দ আলী বিশ্বাস, জলবায়ু ও নগর গবেষক জাহাঙ্গীর আলম, নেত্রকোণা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী অহিদুর রহমান ও যুব ফোরামের সভাপতি পার্থ প্রতিম সরকার বক্তব্য দেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য উন্নত দেশগুলোকে দায়ী করে গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, “এর প্রভাবে খরা, বন্যা, পাহাড়ি বালুতে জমি নষ্টসহ নানা দুর্যোগের কবলে ভুগতে হচ্ছে বাংলাদেশসহ গরিব দেশগুলোকে।
“ধান, মাছ, খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ হাওরাঞ্চল প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উজান থেকে ঢলের সঙ্গে নেমে আসে পাহাড়ি বালিতে নষ্ট হচ্ছে একরের পর একর কৃষি জমি। দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে ফেলছে নেতিবাচক প্রভাব এবং হুমকিতে পড়ছে খাদ্য নিরাপত্তা।
“একইসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পড়ছে হাওরে। পাশাপাশি মেঘালয় পাহাড়ে অপরিকল্পিত খনন ও বনবিনাশ বন্ধ করতে হবে।”
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ধনী ও উন্নত দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল গঠনের অঙ্গীকার করলেও বারবার তারা এই অঙ্গীকার ভঙ্গ করছেন বলে অভিযোগ করেন জলবায়ু ও নগর গবেষক জাহাঙ্গীর আলম।
হাওরাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি আমলে নিয়ে আসন্ন দুবাই জলবায়ু সম্মেলনে তহবিল গঠনে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সম্মেলনে হাওর, পাহাড় ও সমতলের বৈচিত্র্যময় কৃষি ফসল, বিলুপ্ত প্রায় খাদ্য, জলবায়ু সহনশীল দেশি ধানের জাত প্রদর্শন করা হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে আলোচনার পাশাপাশি ছিল হাওরাঞ্চলের গান, নাটক, নৃগোষ্ঠীর নৃত্য ও ধামাইল নাচের পরিবেশনা।
শেষে হাওরের প্রাণ-প্রকৃতি ও সংস্কৃতি রক্ষায় অবদানের জন্য ১৪ জনকে পরিবেশ সম্মাননা দেওয়া হয়।