বঙ্গ-নিউজঃ ভারত আহমেদাবাদে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে পুনেতে এসেছে রোববার বিকেলে। ভ্রমণের দিনে কোনো অনুশীলন ছিল না। গতকালও পূর্ণ বিশ্রামে ছিল পুরো দল। টানা ম্যাচ খেলতে হওয়ায় আজও ঐচ্ছিক অনুশীলন ভারতের। আসলে নিজেদের কন্ডিশনে খেলা হওয়ায় রোহিত শর্মাদের সেভাবে অনুশীলনের প্রয়োজনও হয় না। বছরের বেশির ভাগ সময়ই তো খেলার ভেতরে থাকেন তারা।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অবস্থা ভারতের মতো না হলেও শারীরিক সক্ষমতা আর অনুশীলনের খেলার মানে অনেকটাই পিছিয়ে। এ কারণে মুশফিকুর রহিমদের নিয়মিত অনুশীলন করতে হয়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে মিরপুরে দেখা যায় একা একা ব্যাট করতে। অথচ বড় কোনো টুর্নামেন্ট বা সিরিজে ধারাবাহিক রান করতে দেখা যায় না বেশির ভাগ ব্যাটারকে।
এবারের বিশ্বকাপে লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়রা যেমন রান করতে পারছেন না। এই অধারাবাহিকতা থেকে ব্যাটারদের বের করে আনতে টিম ম্যানেজমেন্ট কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। বিশ্রাম দিয়ে দেখা হচ্ছে ক্রিকেটাররা একসঙ্গে ভারতের বিপক্ষে জ্বলে উঠতে পারেন কিনা।
সাত দিনে টানা তিনটি ম্যাচ খেলে ক্রিকেটাররা ক্লান্ত ছিলেন। ভ্রমণ ক্লান্তিও ছিল তাতে। সে ক্লেদ ঝেড়ে ফেলতেই বিশ্রাম নীতি গ্রহণ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার পর গত তিন দিন অনুশীলন রাখা হয়নি। আজ ও কাল পুনেতে অনুশীলন। পরশু স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ। ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে দুই দিনের অনুশীলন যথেষ্ট কিনা জানতে চাওয়া হলে কোচিং স্টাফের একজন বলেন, ‘সারা বছরই তো অনুশীলন করে। মুশফিকদের সাত দিন বিশ্রাম নিতে দেখেছেন? এত অনুশীলন করা ব্যাটারদের কেউ তো বড় ইনিংস খেলতে পারছে না। দায়িত্ব নিয়ে তাদের কেউ ম্যাচ জেতাতে পারলেও না হয় বুঝতাম।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা অনুশীলন না করেও ভালো খেলে না। তাই পুনেতে তিন দিনের বিশ্রাম দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাতীয় দলের সাবেক একজন ক্রিকেটারের মতে, ‘সবাই তো ম্যাচ খেলে না। যারা খেলে না, তাদের নিয়েও তো ঐচ্ছিক অনুশীলন হতে পারত। গণহারে বিশ্রাম দেওয়ার মানে বুঝতে পারছি না।’
কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দুই মেয়াদের কৌশলের সঙ্গে মিল পাওয়া যাচ্ছে না। আগের মেয়াদে অনুশীলন ছিল তাঁর মূলমন্ত্র। এক ম্যাচ খারাপ করলে পরদিন ঐচ্ছিক অনুশীলন রাখা হতো। এবার তিনি বিশ্রাম দেন খেলোয়াড়দের চাওয়া মতো। রাসেল ডমিঙ্গোও ঠিক অনুরূপ কৌশল নিয়েছিলেন ২০২১ সালের টি২০ বিশ্বকাপে। পুরো টুর্নামেন্টে হাতেগোনা কয়েকটি সেশন করতে দেখা গেছে। সেবার টুর্নামেন্টে খুব খারাপ ফল করে দল। ওয়ানডে বিশ্বকাপে তেমন কিছু হবে না বলে বিশ্বাস বিসিবি অফিসিয়ালদের।
টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের মতে, ‘একটি ভালো ম্যাচ সবকিছু বদলে দিতে পারে। পরের ম্যাচগুলোতে ধারাবাহিক খেলবে তখন।’ বিশ্বকাপ খেলতে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ভারতে সাকিব আল হাসানরা। আসামের গৌহাটিতে শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে হয়েছে। এরপর বিশ্বকাপের মূল ম্যাচ তিনটি। সব মিলিয়ে পাঁচটি ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। ২০ দিনে পাঁচটি ম্যাচ খেলা খুব বেশি কিছু না। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তো বিশ্রাম নীতিতে অনুশীলন আর খেলা হচ্ছে। এর পরও কেন ভালো করতে পারছেন না সাকিবরা? প্রশ্ন এখানেই।