বঙ্গ-নিউজ: গাজায় গত এক সপ্তাহ ধরে দিনে রাতে বোমা হামলা চালানোর পর এবার সেখানে সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। স্থল অভিযানের আগে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে সব বাসিন্দাকে সরে যেতে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে জাতিসংঘ বলছে, অত অল্প সময়ের মধ্যে ১১ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া অসম্ভব। এ নিয়ে গাজাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতংক। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও সিএনএনের।
ইসরায়েল বলেছে, সমস্ত ফিলিস্তিনিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর গাজা ছেড়ে দিতে হবে। আগামী দিনে গাজা শহরে উল্লেখযোগ্য সামরিক অভিযান হবে এবং বাসিন্দাদের অবশ্যই দক্ষিণে সরে যেতে হবে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে তবেই তারা নিজেদের বাড়িঘরে ফিরতে পারবে।
গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে প্রায় ১১ লাখ বাসিন্দার বাস। এমনিতেই গত এক সপ্তাহে ইসরায়েলি বোমায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্ত্যুচ্যুত হয়েছে বেশির ভাগ গাজাবাসী।
তারমধ্যে ইসরায়েলের এমন ঘোষণা শুক্রবার সকালে জানতে পারে গাজার বাসিন্দারা। আর ততক্ষণে ৬ ঘণ্টা পেরিয়েও গেছে।
এত অল্প সময়ের মধ্যে ১১ লাখ মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করাও সহজ নয়।
জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলকে জনশূণ্য করার ইসরায়েলি পরিকল্পনা হবে মানব বিধ্বংসী পরিণতি ডেকে আনবে।
ফিলিস্তিনে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার কর্মকর্তা ইনাস হামদান বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। তারা কোথায় যাবে বুঝে উঠতে পারছে না।
ফিলিস্তিনি রেডক্রিসেন্ট মুখপাত্র নেবাল ফারসাখ বলেন, খাবারের কথা ভুলে যাও, বিদ্যুত-জ্বালানি ভুলে যাও, এখন ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটাই আতংক জীবন বাঁচাতে হবে। এত অল্প সময়ের মধ্যে ১০-১২ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নেওয়া সহজ নয়।
গাজার এমন পরিকল্পনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন কংগ্রেসম্যান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (টুইটার) এক বার্তায় মার্কিন নারী কংগ্রেসম্যান আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও কোর্টেজ বলেন, এটা অনাকাঙ্খিত। অল্প সময়ে এতো মানুষের নিরাপদ আশ্রয় খু*জে নেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। ইসরায়েলের এটি বন্ধ করা উচিত।
এদিকে হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস বলেছে, তারা গাজায় ইসরায়েলি স্থল আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, যদি গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ অব্যাহত থাকে তবে যুদ্ধ ‘ভিন্ন ফ্রন্টে’ শুরু হতে পারে।
ইসরায়েলি বোমা হামলায় এরইমধ্যে গাজায় ১৫৩৭ জন নিহত এবং ৬ হাজার ৬৫০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এছাড়া বোমায় বাড়িঘর হারিয়েছে সাড়ে চার লাখের বেশি গাজাবাসী।