বিএনপি আন্দোলন নতুন ধাপে

Home Page » জাতীয় » বিএনপি আন্দোলন নতুন ধাপে
বুধবার ● ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩


ফাইল ছবি

বঙ্গ-নিউজঃ     সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি। নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা তড়িঘড়ি নিষ্পত্তির উদ্যোগ ও জামিন নামঞ্জুরের প্রতিবাদে আদালতকেন্দ্রিক আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ কর্মসূচির আগে আগামী শনিবার ঢাকার দুই প্রান্ত থেকে গণমিছিলের পর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বিএনপি।
গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান ও যুগ্ম মহাসচিবদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। বিএনপির হাইকমান্ড শান্তিপূর্ণ এসব কর্মসূচির সঙ্গে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বলেছে। দলীয় সূত্র সমকালকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আদালতকেন্দ্রিক কর্মসূচির পরিকল্পনা তুলে ধরে বিএনপির এক নেতা জানান, আদালতের রায়ের প্রতিবাদে সপ্তাহখানেকের মধ্যে ঢাকায় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে। সমাবেশ থেকে
আদালতের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার না পাওয়ার অভিযোগ তুলে ধরার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হবে। এর পর সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন ও পুলিশের মামলা, আদালতে কীভাবে সেগুলোর বিচার চলছে, তা সেমিনারের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। বিদেশি কূটনীতিকদের সামনে সেমিনারে সরকার আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী নেতাকর্মীকে ‘দমনপীড়ন ও সাজা’ দেওয়ার বিশদ চিত্র উপস্থাপন করা হবে। এর পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। একই দিন বিএনপিও অভিন্ন দাবিতে ঢাকায় সমাবেশ করতে পারে বলে জানান তিনি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘নতুন কর্মসূচি আসবে। ধারাবাহিক আন্দোলনে পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্মসূচির ধরনে বদল আনতে হয়।’
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, আন্দোলন দমাতে সরকার প্রশাসনের সঙ্গে আদালতকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করছে। নির্বাচনের আগেই বিরোধী নেতাদের সাজা দিতে দ্রুত বিচার কাজ শেষ করছে। সারাদেশে শতাধিক মামলাকে টার্গেট করে সরকার পরিকল্পনা সাজিয়েছে। এতে আরও অনেক মামলা যুক্ত হতে পারে। এরই

ধারাবাহিকতায় দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের হয়তো কারাগারে যেতে হতে পারে। গায়েবি মামলা, ব্যাপক ধরপাকড়ের সঙ্গে এখন আদালতের তৎপরতায় দ্রুত রায় হলে কেউই রেহাই পাবে না– এমন চিন্তা থেকে ন্যায়বিচারের দাবিতে কর্মসূচির বিকল্প নেই। ফলে গায়েবিসহ বিভিন্ন মামলায় রায় হলে প্রতিবাদে রাজপথে সমাবেশ, সেমিনার ও আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হলেও কর্মসূচি ঘোষণার আগে সমমনা দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করবে বিএনপি। এসব দলের নেতাদের পরামর্শে আদালতকেন্দ্রিক আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।
বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক নেতা বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সবাই বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা কীভাবে চলছে, তা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হেনস্তার ঘটনায় দেখছেন। গত সোমবার একজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. ইউনূসের মামলার বিষয়ে আদালতকে কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা স্পষ্ট করেছেন। ফলে কর্মসূচির মাধ্যমে বিরোধী মত ও পথের মানুষের ওপর ক্ষমতাসীনদের বৈরী আচরণ সহজেই বিশ্বাসযোগ্য করা সম্ভব হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘পুলিশের গায়েবি মামলার সঙ্গে আদালতকে ব্যবহার করে সরকার শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সারাদেশে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৩৪ মামলায় ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৯২ জনকে আসামি করা হয়েছে। দলের এমন কোনো নেতাকর্মী নেই, যার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা নেই।’
এদিকে, কর্মসূচির পাশাপাশি ঢাকা ও আশপাশের জেলার সাংগঠনিক ভিত্তি জোরদারে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। গত ২৯ জুলাই রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচির ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায়। অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ঢাকা জেলা, গাজীপুর জেলা ও মহানগর, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নরসিংদী এবং মানিকগঞ্জের নেতারা প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে না পারায়, এসব এলাকায় সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৪১:৫৫ ● ৩১২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ