স্টাফ রিপোর্টার,বঙ্গ-নিউজ :সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে ৩৫ বছর আগে গ্রাম বাসীর অর্থায়নে গরীব, অসহায় মানুষকে সহায়তা ও বেওয়ারিশ মৃত ব্যক্তিদের দাফনের লক্ষে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘ মরা সমবায় সমিতি’। শুরুতে ৬১ জন সদস্য জনপ্রতি ২০ টাকা করে দিয়ে ওই সমিতি গঠন করে গ্রামবাসী । ৩৬ বছরে চক্রবৃদ্ধি হারে সেই টাকা বেড়ে দাড়িয়েছে অর্ধলক্ষ টাকার মতো।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে এই সমিতির কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে নজরে আসে প্রশাসনের। পরে সমিতি রেজিষ্ট্রেশনের জন্য নড়েচড়ে বসছে সমিতি পরিচালনা কমিটি। এইদিকে গ্রামের একটি মধ্যসত্বভোগী চক্র সমিতির বাকি সদস্যদের বাদ দিয়ে ১২ জন সদস্য দিয়ে রেজিষ্ট্রেশনের পায়তারা চালাচ্ছে (৬ আগষ্ট) প্রশাসনের কাছে এমন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে গ্রামবাসী।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে হতদরিদ্র পরিবারকে সহায়তা, বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নের লক্ষে বিগত আনুমানিক ৩৫ বছর পূর্বে ‘মির্জাপুর মরা সমিতি’ নামে একটি সমিতি সকল গ্রামবাসী মিলে প্রতিষ্ঠা করে। সমিতিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের বিয়েতে আর্থিক সহয়তা , গ্রামের সার্বজনীন কবরস্থানে বিভিন্ন সময়ে মাটি ভরাট, গ্রামের মসজিদে আর্থিক অনুদান প্রদান, গ্রামের বিভিন্ন হতদরিদ্র পরিবারকে আর্থিক সহযোগীতা প্রদান, গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার গোরাটে মাটি ভরাটসহ গ্রামের সার্বিক উন্নয়নে মূখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। সমিতিটি পুরাতন হওয়ায় বর্তমানে গ্রামবাসী সমিতিটি রেজিষ্ট্রেশনের জন্য পরিচালনা কমিটিকে বললে সমিতির পরিচালনা কমিটি গ্রামবাসীকে বাদ দিয়ে , তাদের মনগড়া সদস্য দিয়ে রেজিষ্ট্রেশনের পায়তারা চালাচ্ছে। সমিতি প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের অধিকাংশ সদস্যের নাম বর্তমান খাতায় উল্লেখ নেই এবং তৎকালীন সময়ে জন্মও হয়নি এমন কিছু সদস্যকে তারা সমিতির অন্তর্ভুক্ত দেখিয়েছে। যা দেখে গ্রামবাসী সমিতি পরিচালনা কমিটির উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। পরিচালনা কমিটিকে এ বিষয়ে গ্রামবাসী জিজ্ঞাসা করলে তারা উল্টো গ্রামবাসীকে বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করে। পরিচালনা কমিটি গ্রামবাসীকে বাদ দিয়ে তাদের মনগড়াভাবে সমিতি রেজিষ্ট্রেশন করে সমিতির অর্থ আত্নসাৎ করার পায়তারা চালাচ্ছে। ‘
এই বিষয়ে ওই সমিতির কোষাধ্যক্ষ মরম আলী বলেন, ‘ যারা প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিল তাদের নাম দিয়েই আমরা সমিতি রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য চেষ্টা করছি। ‘
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শরীফ আহমদ বলেন, ‘ যেহুতু প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ এই সমিতির সদস্য ছিলেন। তাই তাদের বাদ দিয়ে সমিতি রেজিষ্ট্রেশন করার সুযোগ নেই।’
মধ্যনগর উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শীতেষ চন্দ্র সরকার কালের কণ্ঠ কে জানান, ‘ এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’