রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবন ;৩১১ তম পর্ব:জালাল উদ্দীন মাহমুদ

Home Page » সাহিত্য » রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবন ;৩১১ তম পর্ব:জালাল উদ্দীন মাহমুদ
শনিবার ● ২২ জুলাই ২০২৩


জালাল উদ্দীন মাহমুদ

হাজেরা আপার জল চিকিৎসা – ৯

এবার রফিক সাহেবের দ্বিতীয় আবিষ্কারের কথা বলি। উনিই পৃথিবীতে প্রথম আবিষ্কার করেছেন পৃথিবীর মানুষের মোট ঘুমের পরিমাণ একটা ফিক্সড সংখ্যা। এ ফিক্সড সংখ্যাটা কখনও পরিবর্তন হয় না। অর্থাৎ কারো ঘুম বেশি হয় কারো ঘুম কম হয় কিন্তু পৃথিবীর মানুষের টোটাল ঘুমের পরিমাণ একই থাকে। তবে পৃথিবীর জনসংখ্যা যে পরিমাণ বাড়ে টোটাল ঘুমও সে অনুপাতে বাড়ে। বর্তমানে ঘুমের বৃদ্ধি কিছুটা শ্লথ হয়েছে , তাই পৃথিবী জুড়ে অনিদ্রার পরিমাণ বেড়ে গেছে। এ থিউরি আবিষ্কারের পর উনি এখান থেকে অনিদ্রা রোগের গোপন চিকিৎসা পদ্ধতিও বের করেছেন। তবে অনিদ্রা রোগের চিকিৎসার জন্য অন্য একজনের সহায়তা লাগে। স্যার আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, বিষয়টি বুঝলাম না। আমি বললাম বিষয়টি তাহলে উদাহরন দিয়ে বলি স্যার। মনেকরি মিস্টার “ক” একজন অনিদ্রার রোগী। তার রাতে ২/৩ ঘন্টার বেশি ঘুম হয় না। কবিরাজ রফিক সাহেবের থিউরি মোতাবেক মিস্টার “ক” এর ঘুম বাড়াতে হলে অন্য কারো ঘুম কর্তন করে মিস্টার “ক”কে দিতে হবে। মনে করি মিস্টার “ক” এর স্ত্রী মিসেস “ক”তার ঘুম থেকে ২ ঘন্টা কর্তন করে তার স্বামী মিস্টার “ক”কে দিতে রাজি আছেন। এখন মিস্টার “ক” যদি রফিক সাহেবের কাছে ঘুমের চিকিৎসার জন্য আসেন তবে রফিক সাহেব তার স্ত্রীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে তার ঘুম থেকে ২ঘন্টা ঘুম ডাইরেক্ট ডেবিট করে তার স্বামীর নামে ক্রেডিট করে দিবেন। সিম্পল ট্রান্সফার। ব্যস হয়ে গেল। স্বামীর ঘুম ২ ঘণ্টা বেড়ে গেল। আর স্ত্রীর যদি দেবার মতো ঘুমের ব্যালান্স না থাকে তখন অন্য একজন ডোনার খুঁজতে হবে। রফিক সাহেবের মতে কেউ ঘুমের বড়ি খেলে অটোমেটিক তা অন্যের সাথে অ্যাডজাস্ট হয়ে যায়। রফিক সাহেবের ”অটো সার্চ” নামে একটা পদ্ধতি আছে। এর মাধ্যমে তিনি বুঝতে পারেন কার এখন বেশি ঘুমের দরকার নাই। পরীক্ষার সময় অভিভাবকরা সন্তানদের বেশি ঘুমাতে দিতে চান না। তখন রফিক সাহেবের হাতে অনেক ঘুমের ব্যালান্স থাকে। অ্যাডজাস্ট করা না হলে এ সব ঘুম বিনা প্রয়োজনে অন্যের চোখে চেপে বসে। কাজেম উদ্দিন স্যার এবার হো হো করে হেসে উঠলেন। বললেন- আমার সাথে তোমরা দু‘জন মিলে ইয়ার্কি শুরু করেছ। স্যার চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর চলে যেতে উদ্যত হতেই রফিক সাহেব দরাজ ও গম্ভীর গলায় বললেন,স্যার আপনি বোধহয় আমার চিকিৎসা বিশ্বাস করতে পারছেন না । তারপর পিওন হাবিবের দিকে তাকিয়ে বললেন, এই হাবিব, ই ধারমে আও। রফিক সাহেব কেন জানিনা মাঝেমধ্যে ভুল–ভাল উর্দু-হিন্দি মিশেল করে কথা বলতেন। যা হোক ,হাবিব পড়ি কি মরি করে দৌঁড়ে এসে সালাম দিয়ে দাঁড়াল। হাবিবের তড়িঘড়ি আসার দৃশ্য আর রফিক সাহেবের অঙ্গ ভঙ্গির ধরন দেখে মিন্নাত হাসতে হাসতে তার চেয়ারে গড়িয়ে পড়ল। রফিক সাহেব মিন্নাতের দিকে তাকিয়ে থাপ্পড়ের ভঙ্গিমা করলে সে হাসি থামিয়ে দিল। কিন্তু মুখে একটা বলপেন পুরে রাখল। রফিক সাহেব বলল, হাবিব তোমার বউয়ের ঘুমের কি সমস্যা হয়েছিল, স্যার কে বলো।

( চলবে)

বাংলাদেশ সময়: ৯:২৬:২১ ● ৩২৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ