রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবনের ৪র্থ খন্ড;৩১০ তম পর্ব-জালাল উদ্দীন মাহমুদ
Home Page »
সাহিত্য »
রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবনের ৪র্থ খন্ড;৩১০ তম পর্ব-জালাল উদ্দীন মাহমুদ
হাজেরা আপার জল চিকিৎসা-৮
কবিরাজ রফিক আহম্মেদ চৌধুরী, যাকে দেখলে ব্যাংকের একজন সাধারন কর্মকর্তা মনে হয় উনি আসলে কেবল ব্যাংকের সাধারন একজন কর্মকর্তা নন। উনি একজন জ্ঞানী-গুনী ব্যক্তি। এ অভাগা দেশে যেমন অনেক জ্ঞানী-গুনী সম্মান পায়নি তেমনি উনিও পান নাই। অথচ চিকিৎসা বিজ্ঞানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার তিনিই করেছেন।
এটুকু বলে স্যারের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেখানে শতভাগ অবিশ্বাসের ছায়া। আবার অধরে হাসির রেখাও। সেটা বোধহয় আমার বক্তৃতার ঢংয়ে কথা বলার ধরন দেখে। এখানে একটা কথা বলে রাখা আবশ্যক স্যার টুকটাক দু‘নম্বরী করলেও উঁচুদরের রসিক এবং জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন। মহিলাদের সাথে সন্মানের সাথেই কথা বলতেন। শুধু আর্থিক ব্যাপারে ছিলেন চুড়ান্ত ছেঁচড়া টাইপের। সে সময় একজন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পদমর্যাদার কর্মকর্তা অনেক সম্মানীয় ছিলেন। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে টাকা ধার চাইতে চাইতে আর চেক বন্ধক রেখে অগ্রীম বেতনের টাকা নিতে নিতে নিজেই নিজের সম্মান রাখতে পারেন নাই। স্যারের আরো কিছু ছোট-খাট অপকর্মের কথা রফিক সাহেব জানে , আমাকেও বলেছে। আমি তখন সিনিয়র অফিসার আর রফিক সাহেব অফিসার। কিন্তু আমাদের চোখে স্যার নিজ কর্মফলে আমাদের প্রায় সম-সাময়িক মর্যাদায় অবনমিত। তবে মুখে আমরা অনবরত তাকে মেকি উচ্চারণে স্যার স্যার বলতাম। মিন্নাত মনে করত স্যার উপকার না করলেও ক্ষতি করতে পারেন। ভয়ে ভক্তি। মিন্নাত স্যারকে দেখলেই চেয়ার থেকে লাফ দিয়ে উঠে ছালাম দিত।
অন্যদিকে স্যার আমাদের তুমি বলে সম্বোধন করে তার জ্যেষ্ঠত্ব প্রমাণের বৃথা চেষ্টা চালাত।
স্যার মুখ খুললেন, বললেন- পৃথিবীর ৩টি গুরুত্বপূর্ন আবিষ্কার করেছে এই রফিক। তুমি বকাউল্লাহ বললে আমি শোনাউল্লাহ শুনলাম।
আমি বললাম-স্যার শোনা তো কিছুই হয়নি আমি তো বলা শুরুই করিনি। হ্যাঁ, আপনার কাছে অবিশ্বাসের মতো মনে হতে পারে। তবুও আমি বলছি উনার প্রথম আবিষ্কার বলার আগে আপনাকে একটা প্রশ্ন করতে চাই। পৃথিবীর ৩ ভাগ জল এবং ১ ভাগ স্থল এই বিষয়টি দ্বারা কি প্রমান হয়? স্যার প্রশ্ন শুনে তাচ্ছিল্যভাবে মাথা চুলকাতে লাগল। তার মধ্যে উত্তর দেবার কোন লক্ষণ দেখা গেল না। আমি নিজেই বলা শুরু করলাম। এর মানে হল এখানে সুস্পষ্টভাবে স্থলের উপর জলের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এটা বুঝতে পেরে কবিরাজ রফিক আহম্মেদ চৌধুরী ঘোষণা করেছেন, পৃথিবীর যাবতীয় চিকিৎসা এই জলের দ্বারা করা সম্ভব। এবং উনি সব চিকিৎসাই এই জলের মাধ্যমে করান। তবে হ্যাঁ এক্ষেত্রে জরুরী হলো, “ডোজ” নির্ধারণ করা। কোন অসুখের জন্য কতটুকু জল কখন খেতে হবে সে ডোজ এ কবিরাজ সাহেব নির্ধারণ করে দিবেন। তার এ চিকিৎসা পদ্ধতির নামই বিখ্যাত “জল চিকিৎসা”। জল শব্দটির মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পেয়ে অনেকে উনাকে এ চিকিৎসার নাম “পানি চিকিৎসা” রাখার জন্য চাপ দিয়েছেন। কিন্তু রফিক সাহেব রাজি হন নাই। এই জল বা পানির মাধ্যমে পৃথিবীর সব রোগের চিকিৎসা যে করানো সম্ভব- এটা পৃথিবীতে উনি প্রথম আবিষ্কার করেছেন।
এবার রফিক সাহেবের দ্বিতীয় আবিষ্কারের কথা বলি।
( চলবে)
বাংলাদেশ সময়: ২০:০৪:২১ ●
২৯১ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)