বঙ্গ-নিউজঃ মঙ্গলবার ১৮ জুলাই ভারতের কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে বিজেপি বিরোধী-মঞ্চের ছবি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা অংশ থেকে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য অনুযায়ী এটুকু পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, জাতীয় স্তরে মোদী বিরোধী লড়াইয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূল আগামী দিনে থেকে একসঙ্গে চলবে।
তবে রাজ্যস্তরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের সমীকরণের সঙ্গে এই সমঝোতাকে এক না। এই বোঝাপড়ার সবটাই হল সর্বভারতীয় রাজনীতির জন্য। কংগ্রেস যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গুরুত্ব দিচ্ছে তা সোমবার ১৭ জুলাই সন্ধ্যাতেই বোঝা গিয়েছিল। সোমবার নৈশভোজের বৈঠকে যাওয়ার কথা ছিল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বেঙ্গালুরুতে গিয়েছেন ঠিকই, তবে তাঁকে বেশি চলাফেরা করতে নিষেধ করেছেন ডাক্তাররা। কিন্তু সংবাদ সূত্রের খবর, সনিয়া গান্ধী ডিকে শিবকুমারকে মমতার কাছে পাঠিয়ে বার্তা দেন যে তাঁকে নৈশভোজে আসতেই হবে।
মঙ্গলবারের বৈঠক মঞ্চে দেখা গেল, সনিয়া গান্ধীর পাশেই বসার আসন রাখা হয়েছে মমতার। আবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসেছেন রাহুল। এই বৈঠক শেষ হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর বক্তৃতায় যেভাবে গান্ধী পরিবারের তরুণ প্রজন্মকে সম্মোধন করেছেন, তাও নজর করার মতই। মমতা বলেন, ‘আমাদের ফেভারিট রাহুল…।’
ছ’মাস আগেও কংগ্রেস সম্পর্কে প্রকাশ্যেই সমালোচনা করত তৃণমূল। পাল্টা তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির আঁতাতের অভিযোগ তুলত কংগ্রেস। জয়রাম রমেশরা বলতেন, “গোয়া, মেঘালয়ে ভোটে লড়ে তৃণমূল আসলে বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছে।” আর তৃণমূলের তরুণ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলতেন, “কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটাই ছেড়ে দিয়েছে। তাই আমাদের গোয়া, মেঘালয়ে লড়তে হচ্ছে।”
শুধু তাই নয়, তৃণমূলের নেতারা এও বলতেন যে কংগ্রেসের সত্তর বছরের হ্যাংওভার এখনও কাটেনি। ‘বিগ ব্রাদার’-এর মতো আচরণ করে। প্রকৃত বোঝাপড়া করতে চাইলে এই দাদাগিরির মনোভাব ছাড়তে হবে।
মঙ্গলবারের বৈঠকে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই দেখা গিয়েছে যে কংগ্রেস অনেক বেশি নমনীয়তার বার্তা দিয়েছে। মল্লিকার্জুন খাড়্গে এদিনের বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লালায়িত নন। বরং দেখা গিয়েছে, শরিক দলের নেতৃবৃন্দ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার, এম কে স্ট্যালিনকে যথাসম্ভব মর্যাদা দিয়েছেন সনিয়া-রাহুল।
সাবেক জাতীয় দলের এহেন আচরণের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “এবার প্রকৃত লড়াই হবে। নতুন জোটের নাম রাখা হয়েছে ইন্ডিয়া। আমরাই প্রকৃত ভারত। এনডিএ-র ক্ষমতা থাকলে এই ইন্ডিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে দেখাক।” তাঁর কথায়, “এবার জিতবে ইন্ডিয়া, হারবে বিজেপি।”