রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবনের ৪র্থ খন্ড -৩০৭ তম পর্ব; জালাল উদ্দীন মাহমুদ

Home Page » সাহিত্য » রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবনের ৪র্থ খন্ড -৩০৭ তম পর্ব; জালাল উদ্দীন মাহমুদ
মঙ্গলবার ● ১৮ জুলাই ২০২৩


জালাল উদ্দীন মাহমুদ

হাজেরা আপার জল চিকিৎসা -৫

স্যার, এই যে রফিক সাহেবকে দেখছেন ,উনার প্রকৃত নাম কবিরাজ রফিক আহম্মেদ চৌধুরী। আদি নিবাস সান্তাহার। কিশোর বয়সে উনি কামরুপ-কামাখ্যা যেয়ে সিদ্ধি লাভ করে আসেন।
স্যার আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন , তিনি রাস্তার পাশের বিভিন্ন ক্যানভাসারের মুখ থেকে কামরুপ-কামাখ্যার নাম শুনেছেন । ভারতের আসামের গুয়াহাটি স্টেশন থেকে পাহাড়ি এক রাস্তা ধরে সেখানে যেতে হয় । রহস্যময় যাদু-মন্ত্র আর ঘন অরণ্যের দেশ কামরূপ- কামাখ্যা। শোনা যায় কোন পুরুষ সেখানে একবার গেলে তার পক্ষে ফিরে আসা কঠিন। বাড়াবাড়ি রকমের যৌবনবতীদের রাজত্ব নাকি সেখানে। চারদিকে যৌবনবতী বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীরা ঘুরঘুর করে।যাদু করে পুরুষদের ক্রীতদাস করে রাখে তারা।
স্যারের এ সব ভিত্তিহীন কথার প্রতিবাদ করতে যেয়েও থেমে গেলাম আমি। তার কথায় সায় দেয়াই এখন বুদ্ধিমানের কাজ হবে। স্যার ভাষনের ভঙ্গিতে তার বক্তব্য প্রদান অব্যাহত রাখলেন-
সেখানে আছে বিশাল বড় এক সিংহ , যার ডাকে পুরুষের অন্ডকোষ ফেটে চৌচির হয়ে যায় ।
এ সময় মিন্নাত ভীষণ হাসাহাসি শুরু করল।আমিও হাসতে থাকলাম। রফিক সাহেব টেবিলে বার কয়েক থাপ্পড় দিয়ে আমাদের থামিয়ে দিল।
স্যার আবার বলা শুরু করলেন-
দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে সেখানে থেকে যে ফিরে আসতে পারে সে হয় যাদুকর। অনেক অসাধ্যকেই সে করতে পারে সাধন। রফিক সত্যিই সেখানে গিয়েছিল ? আমারও সেখানে যাবার শখ ছিল।দেখি–
সারের বোধ হয় আজ সবজান্তা সাজার শখ জেগেছে। তাকে থামাতে হবে।
আমি স্যারকে থামিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি করে কনফিডেন্সের সাথে বললাম. , কামরুপ-কামাখ্যা থেকে ফিরে এসে পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাবে গবেষণা ও জ্ঞানার্জন করে উনি তার এলাকায় চিকিৎসক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। শত শত রোগী তার চিকিৎসায় ভালো হয়েছে। ব্যাংকে যোগদানের পর তিনি আস্তে আস্তে চিকিৎসা করা ছেড়ে দিয়েছেন। তবুও খুব পরিচিত রোগী হলে এখনও টুকটাক চিকিৎসা করেন। এই যেমন আপনার কোনও চিকিৎসা লাগলে উনি অবশ্যই চিকিৎসা করবেন।
আমাদের হতাশ করে দিয়ে স্যার বলে উঠলেন -আল্লাহর রহমতে আমার কোনও অসুখ-বিসুখ নাই। দরকার হলে আমি তোমাদের জানাব আর তখন কবিরাজ রফিকের নিকট থেকে চিকিৎসা নেব। এখন নয় ।
স্যারের এই নেগেটিভ কথায় আমাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যাবার উপক্রম হলো। কিন্তু রফিক সাহেব থাকলে পরিস্থিতি যত বিরূপই হোক -তা অনুকূলে তিনি নিয়ে আসবেনই।
রফিক সাহেব বললেন , স্যার মুখটা হা করে আপনার চোখ দুটো বড় বড় করেন তো দেখি।
স্যার মুখ হা করে চোখ বড় বড় করলেন। রফিক সাহেব এমনভাবে পর্যবেক্ষন করতে লাগলেন যেন তিনি সত্যিকারের কোন ডাক্তার বা কবিরাজ।
পর্যবেক্ষন শেষে আমাকে বললেন, চোখমে গলতি হে। একটা স্লীপ কাগজ দেন তো। আমি দিলাম। উনি স্যারের নাম, বয়স লিখে সেখানে রোগের নাম লিখলেন “জল শূন্য শুষ্ক দেহে নিদ্রাহীন আঁখি ” ,চিকিৎসার নাম লিখলেন,“জল চিকিৎসা”,আর অ্যাডভাইজের ঘরে লিখলেন, “সাউন্ড টেস্ট”।
( চলবে )

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪৯:৪৭ ● ২২৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ