তীব্র তাপদাহে পুড়ছে ইউরোপ-আমেরিকা

Home Page » প্রথমপাতা » তীব্র তাপদাহে পুড়ছে ইউরোপ-আমেরিকা
সোমবার ● ১৭ জুলাই ২০২৩


তীব্র তাপদাহে পুড়ছে ইউরোপ-আমেরিকা
বঙ্গ-নিউজ ডেস্কঃ   ইউরোপ থেকে শুরু হয়ে আমেরিকা; সবখানেই তীব্র তাপদাহ। যুক্তরাষ্ট্র, স্পেনসহ কোনো কোনো দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। গত ৩ থেকে ১০ জুলাই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম সপ্তাহ। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামীতে আরও বাড়বে তাপমাত্রা। ফলে ভাঙতে পারে ১ লাখ ২০ হাজার বছরের তাপদাহের রেকর্ড। অন্যদিকে ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভারতসহ এশীয় দেশগুলোর অনেক এলাকা। এরই মধ্যে ঘটেছে প্রাণহানিও। দক্ষিণ কোরিয়ায় তলিয়ে যাওয়া টানেলে আটকা পড়েছে অন্তত ১৫টি গাড়ি, উদ্ধার করা হয়েছে ৯ জনের লাশ।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, গ্রিস, স্পেন, ইতালি এবং আশপাশের অন্যান্য দেশে তাপপ্রবাহ ক্রমশই বাড়ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ক্রমবর্ধমান মাত্রা এবং আটলান্টিকের ওপর দিয়ে বাতাসের অস্বাভাবিক প্রবাহ উষ্ণতা ছড়াচ্ছে এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে। এসব দেশে ৪১ থেকে ৫০ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে।

এরই মধ্যে ইউরোপজুড়ে জারি করা হয়েছে উচ্চ তাপমাত্রার রেড অ্যালার্ট। ক্রোয়েশিয়া, অ্যাড্রিয়াটিক উপকূল এবং স্পেনের নাভারায় দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গ্রিসের অনেক পর্যটন কেন্দ্র। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড কাউন্টির মোরেনো ভ্যালিতেও ছড়িয়ে পড়েছে দাবালন। নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন দমকলকর্মীরা। রোববার ৪ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে স্পেনের লা পালমার ক্যানারি দ্বীপ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ইতালির রোমসহ ১৫টির অধিক শহরে রেড অ্যালার্ট জারি রয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত রোমে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি এবং সার্ডিনিয়ায় ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়বে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ১৮৫০-এর দশকে বায়ুর তাপমাত্রার যন্ত্রগত পরিমাপ শুরু হয়। কিন্তু এবারের মতো এত তাপমাত্রা এর আগে কখনোই রেকর্ড হয়নি। গত সপ্তাহে এই রেকর্ড প্রকাশ করেছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)। সংস্থার জলবায়ু পরিষেবার পরিচালক অধ্যাপক ক্রিস্টোফার হিউইট বলেছেন, এই তাপমাত্রা গোটা গ্রহের জন্যই উদ্বেগজনক।

একই কথা বলেছেন জার্মানির লাইপজিগ ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় বিকিরণের গবেষণা ফেলো কার্স্টেন হাউস্টেইন। তাঁর ধারণা, চলতি জুলাই মাস হবে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। এখানকার তাপমাত্রা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বছর আগের তথা আন্তঃগ্লাসিয়াল পিরিয়ডের পর থেকে সর্বোচ্চ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অনেক বিজ্ঞানী সতর্ক করেছেন, চলতি বছর বা আগামী বছর বিশ্বের তাপমাত্রা ১.৫ সেলসিয়াস সীমা অতিক্রম করতে পারে।

গত গ্রীষ্মে ইউরোপে তাপদাহে ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে ধারণা করা হয়। এ বছর আরও বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। এই ঝুঁকিতে আছে গ্রিস, স্পেন ও ইতালির মতো ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলো।

জীবাশ্ম জ্বালানির ক্রমাগত ব্যবহার তাপপ্রবাহকে উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাবে– ৩০ বছর আগে থেকেই বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে সতর্ক করে আসছিলেন। তাদের সেই পরামর্শ না মানায় গোটা বিশ্ব এখন তীব্র তাপদাহ আর বন্যার মুখোমুখি।

এদিকে, এশিয়ার দেশগুলো আক্রান্ত হয়েছে বন্যায়। দক্ষিণ কোরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৭ জনের। তলিয়ে আছে বিভিন্ন এলাকা। দেখা দিয়েছে ভূমিধস। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে একই অবস্থা জাপানেও। প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা হলেও দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে আজ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পৌঁছাতে পারে।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে একদিকে বন্যা হচ্ছে ভারতে, অন্যদিকে প্রখর তাপে সম্প্রতি অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে দেশটিতে। বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এমনটা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৫২:৫৩ ● ২৪০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ