বঙ্গ-নিউজঃ ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ নেই রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে। ফেরিঘাটে পর্যাপ্ত ফেরি থাকলেও যানবাহন তেমন নেই। যে কারণে ফেরিঘাটে যানবাহনের অপেক্ষায় বসে থাকতে হচ্ছে ফেরিগুলোকে। লঞ্চঘাটেও দেখা গেছে একই চিত্র। ২০ মিনিট পরপর লঞ্চ ছাড়লেও যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই নেই। ধারণক্ষমতার অর্ধেকেরও কম যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চগুলো।
ঘাট সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ অনেকটাই কমে গেছে। যে কারণে এ নৌরুটে চলাচলকারী যাত্রী ও যানবাহনগুলো নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারছেন। এবারের ঈদেও যাত্রীরা স্বস্তিতে বাড়ি ফিরেছিলেন। ঈদ শেষে স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফিরে গেছেন যাত্রীরা।
শনিবার (৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টায় দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর রো রো (বড়) ফেরিটি যাহবাহনের অপেক্ষায় দুটি বাস, দুটি কাভার্ড ভ্যান, একটি ট্রাক, একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকার নিয়ে যাহবাহনের জন্য অপেক্ষা করছে। পরে ৮টা ৫০ মিনিটে অর্ধেক ফাঁকাবস্থায়ই ছেড়ে যায় ফেরিটি।
৮টা ৫৫ মিনিটে ৬ নম্বর ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, হাসনাহেনা ইউটিলিটি (ছোট) ফেরিটি যানবাহনের অপেক্ষায় বসে আছে। সেখানে কর্তব্যরত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) লোকজন জানান, প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে যানবাহনের অপেক্ষায় আছে ফেরিটি। কিন্তু যানবাহনের কোনো চাপ নেই।
সকাল ৯টায় ৭ নম্বর ফেরিঘাটে দেখা যায়, যানবাহনের অপেক্ষায় রয়েছে রো রো ফেরি কেরামত আলী ও ইউটিলিটি ফেরি হাসনাহেনা। সেখানে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির লোকজন জানান, প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে যানবাহনের অপেক্ষায় আছে ফেরি দুটি। কিন্তু যানবাহনের কোনো চাপ নেই।
দৌলতদিয়া ঘাটে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস নদী পারের অপেক্ষায় দেখা যায়নি। হঠাৎ দু-একটি প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক ও যাত্রীবাহী পরিবহন এসে সঙ্গে সঙ্গেই ফেরিতে উঠে যাচ্ছে। এ ছাড়া মহাসড়কেও যানবাহনের কোনো চাপ নেই।
সকাল সাড়ে ৯টায় দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের কোনো চাপ নেই। সে সময় ১২৫ জনের ধারণক্ষমতার বিপরীতে ৫৪ জন যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায় লঞ্চ ফাতেহা নূর।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, ঈদের পর যেহেতু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে, সেহেতু বেশির ভাগ মানুষই তাদের কর্মস্থলে ফিরে গেছেন। যে কারণে ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ নেই। ফেরিগুলোকে গাড়ির জন্য ঘাটে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ১২টি ফেরি চলাচল করছে বলেও জানান তিনি।
দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, ঈদের পর থেকে গতকাল (শুক্রবার) পর্যন্ত লঞ্চঘাটে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ ছিল। তবে আজ সকাল থেকে কোনো চাপ দেখা যাচ্ছে না। ধারণাক্ষমতার চেয়ে অর্ধেকেরও কম যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ১৮টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।