রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবনের ৪র্থ খন্ড - ৩০২ (১)তম পর্ব: জালাল উদ্দীন মাহমুদ

Home Page » সাহিত্য » রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবনের ৪র্থ খন্ড - ৩০২ (১)তম পর্ব: জালাল উদ্দীন মাহমুদ
বৃহস্পতিবার ● ৬ জুলাই ২০২৩


জালাল উদ্দীন মাহমুদ

ছুটি নিয়ে ছুটাছুটি -১৪(১)
অগ্রণী ব্যাংকে অনলাইন ব্যাংকিং বাস্তবায়নের সময় অনেকেই এ রকম ছুটি পায়নি। চট্টগ্রামের কাজল বড়ুয়ার কথা আজ খুব করে মনে পড়ছে। ২০১০ সালের কথা । আমরা সবে অনলাইন ব্যাংকিং বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। শাখার কর্মকর্তাদের আমরা তখনও ট্রেনিং দেয়াতে পারিনি। কাজল বড়ুয়া তখন চট্টগ্রামের বানিজ্যিক এলাকা কর্পোরেট শাখায় কর্মরত। তাকে ঐ শাখায় অনলাইন বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সংক্ষেপে ”অবাক ” হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। সার্বিক দ্বায়িত্ব তার । শাখায় এ ব্যাপারে কারো কোনও সম্যক ধারনা নাই। চট্ট্রগ্রামের অন্য কোনও শাখাতে তখনও অনলাইন ব্যাংকিং বাস্তবায়ন করা হয়নি। যার ফলে চট্ট্রগ্রামের অন্য কারো কাছ থেকে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার সুযোগ নাই।
আমাদের হেড অফিসের টিমও ফিল্ড লেভেলে বাস্তবায়নের জন্য তখনও যথেষ্ট অভিজ্ঞ হয়ে উঠেনি। বাস্তবায়নকারী ভেন্ডরও সেখানে কাজ করছে। সব কাজ তদারকীর জন্য সেখানে প্রধান কার্যালয় থেকে পি কে এম মনিরুজ্জামান নামের একজনকে পাঠানো হয়েছে।তাকে কড়া নির্দেশ দেয়া আছে। বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে। জনাব মনিরুজ্জামান আবার অত্যন্ত নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা । তবে তখন তার চাকরির বয়স সবে ৪ বছর। অভিজ্ঞতায় ঘাটতি। একদিন হয়েছি কী – না থাক সে ঘটনা বলতে চাই না। না ,বলেই ফেলি।
সে দিন আমি রাত ১২ টার পর অফিস থেকে বাসায় ফিরেছি।বাসায় আসার আগ দিয়ে পি কে এম মনিরুজ্জামান এর সাথে কথা বলেছি । আরও বোধ হয় ১০ টি শাখায় এ কাজ চলছিল । সব শাখায় কথা বলেছি। পি কে এম মনিরুজ্জামান বলেছিল –হোটেলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সে রাতের খাবার জন্য একটু বাহিরে যাবে। ভেন্ডরের লোকজনও খেতে যাবে। ঠিক আছে। খেতে তো হবে। বাসায় এসে আমিও খেতে বসেছি –এমন সময় পি কে এম মনিরুজ্জামান ফোন করল। সে নাকি খেয়ে এসে দেখে – শাখার সবাই বিশেষ করে কাজল বড়ুয়া চলে গেছে । হিসাব তখনও মেলেনি। গার্ড ছাড়া আর কেউ নাই । শাখার গেটে তালা । আমি সাধারনত মেজাজ হারাই না। কিন্তু সে সময় কেনও জানি না বলে ফেললাম –আপনি গেটের তালা ধরে ঝুলে থাকুন। জগৎ দেখুক। আমাদের কর্তৃপক্ষও জানুক।
খেতে খেতে হঠাৎ মনে হলো ক্যাডেট কলেজের পড়ুয়া পি কে এম মনিরুজ্জামান যা অর্ডার করা হয় তাই করে। বিশেষ করে আমার কথা । সত্যি সত্যি সে হয়তো গেটের তালা ধরে ঝুলে আছে।
তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে তাকে ফোন করলাম। শুনলাম আমাকে ফোন করার পরপরই ডিজিএম নুরূল হক স্যারও নাকি খোঁজ-খবর নেবার জন্য তাকে ফোন করেছিলেন। তিনি সবশুনে তাকে ওখানে থাকতে বলেছেন। সে চট্ট্রগ্রামের জি এম সাহেবকে বলে কিছুক্ষনের মধ্যেই অনলাইন বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজল বড়ুয়াকে শাখায় আনার ব্যবস্থা করবেন। আর একটা কথা স্যার ।
কী কথা ?
-আমি কিন্তু তালা ধরে ঝুলে থাকিনি। এটা সম্ভব না ।
-ধেৎ ভাই ।
- আপনার কথা তো আমি কখনও অমান্য করেনি স্যার –তাই বলছিলাম।
আমার কথা যে সে অক্ষরে অক্ষরে ফলো করে তা বোধ হয় আপনাদের বিশ্বাস হচ্ছে না। ঠিক আছে তার এরূপ আরও অতুলনীয় কিছু চটকদার ঘটনা এক সময় জানাব। আপনারা দয়া করে এখন শুধু তার নামটি মনে রাখবেন।
আমি কথা বলতে বলতেই শুনলাম অনলাইন বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজল বড়ুয়া হাজির হয়েছে। হয়তো আর ঘণ্টাখানিকের কাজ বাকি আছে। অনলাইন ব্যাংকি-এ প্রতিটি শাখার দিনের কাজ ক্লোজ না করতেই হয় অন্যথায় হেড অফিসের কাজ ক্লোজ করা যায় না। এ কথাও তখন সবাই জানতও না।
কাজল বড়ুয়া অত্যন্ত কর্তব্য পরায়ন কর্মকর্তা। সে জন্যই তাকে অনলাইন বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অবাক) বানানো হয়েছে। সে এর আগে কখনও এরুপ করেনি। আজ তার এ কাজে আমার মনে খটকা লাগল। তবে মনে হয় সে সময় তার এ রূপ আচরণের কারণ জানতে চাইনি।
বেশ কিছুদিন পরে কারন জানতে পারলাম। তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কাছের একটা হাসপাতালে ভর্তি ।প্রসব বেদনা শুরু হয়েছে।সে একবার সেখানে যেতে চাচ্ছিল।
এ ঘটনার পর সে আর অনলাইন বাস্তবায়নকালীন ব্যাংক থেকে বেরই হয়নি। দিন রাত ব্যাংকেই থেকেছে। সে সময় আবার ব্যাংকের বার্ষিক ক্লোজিংএর কাজও চলছিল।
২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৮ তারিখে কাজল বড়ুয়ার সন্তানের জন্ম হয়। নবজাতকের মুখ সে দেখেছে জন্মের ৫ দিন পর। যদিও হাসপাতাল তেমন দূরে ছিল না।
কাজল বড়ুয়া শাখা কর্তৃপক্ষ বা আমাদের কাউকে সে সময় বিষয়টি জানায়নি। বেশ কিছুদিন পরে শাখার অন্য একজন কর্মকর্তা এক ট্রেনিং ক্লাশে আমাকে বিষয়টি জানায়।
বর্তমানে সে কাপ্তাই শাখায় আছে। এ ঘটনার ১২ বছর পর ২০২২ সালের শেষের দিকে একটা কাজে রাঙ্গামাটি যাই । হাতে সময় ছিল –মনে হলো কাপ্তাই যেয়ে এ ঘটনার জন্য কাজল বড়ুয়ার কাছে মাফ চাব। গেলাম । হঠাৎ করে তার হাত ধরে মাফ চাইলাম। সে বলল –স্যার আপনিতো এ বিষয়টা জানতেন না। তাই আপনাকে মাফ করার প্রশ্ন আসছে কেন ? আমার মাফ চাবার কারনে ভাবে বিগলিত হয়ে সে আমার পা ছুঁতে ধরল । আমি তাড়াতাড়ি বাঁধা দিয়ে বললাম- আমি সবার হয়েই মাফ চাচ্ছি।
সহজ-সরল কাজল বড়ুয়া শুস্ক হাসি হাসল। মুখ ফুটে কিছু বলল না।
আমি সঠিকভাবে জানি না , কাজল বড়ুয়া তার সন্তান আগমনের খবর সে সময় ব্যাংকের কাউকে বলেছিল কি না। হয়তো বলেনি। হয়তো বলেছিল। কেউ শুনতে চায়নি। শুনলেও ছুটি দেবার সুযোগ হয়তো ছিল না।
কাজল বড়ুয়া কাকে দোষ দিবে ? ব্যাংকারদের জীবনতো এমনই ।
/////
কাজল বড়ুয়ার এ ঘটনার ৫ বছর পর আমাকে একজন ছুটির কথা বলতে চাচ্ছিল । আমি পাত্তাই দেইনি । সে ঘটনা এখন বলতে চাই।
নাহিদ সিদ্দিকী । ২০১২ সালে ব্যাংকে যোগদান করেছে। সে সময় সে আমার সাথে কর্মরত। বাড়িও আবার আমার ওদিকে। হয়তো সে কারনে আমি তার উপর বেশী কর্তৃত্ব করতাম । কোনও কাজের জন্য আর কাউকে পাওয়া না গেলে তার উপর তা চাপাতাম। কখনও সে না করেনি। মাত্র একদিন হ্যাঁ, মাত্র একদিন না করতে চেয়েছিল – কিন্তু নিষ্ঠুর আমি , সেদিন তাকে মুখ খুলতেই দেইনি।
সে বেদনাদায়ক ঘটনা এখন বলতে চাই ।
২০১৫ সালের আগস্ট মাসের এক শুক্রবার । অনলাইন ব্যাংকিং সফটওয়্যারের উপর হেড অফিসে ট্রেনিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ট্রেনিং হলে প্রায় সময়ই নাহিদ সিদ্দিকী কোর্স-কোঅর্ডিনেটর হিসেবে থাকে। সে আগে থেকেই বলে এসেছে – এ শুক্রবার সে থাকতে পারবে না। তাই অন্যজনকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ট্রেনিং এর আগের দিন দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সেই অন্যজন জানিয়েছে সেও জরুরী কারনে কিছুতেই ছুটির দিনে থাকতে পারবে না।
কোর্স-কোঅর্ডিনেটর হিসেবে নাহিদ সিদ্দিকী থাকতে পারবে না, দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সেই অন্যজনও থাকতে পারবে না। দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সেই অন্যজন নীলক্ষেত থেকে এখনও ট্রেনিং ম্যানুয়ালও সংগ্রহ করতে পারেনি। তাহলে ট্রেনিংএর কী হবে ?
ট্রেনিং এর জন্য দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী মহাব্যবস্থাপক জামাল সাহেব এ সমস্যাটি আমার সামনে উপস্থাপন করলে আমি নাহিদ সিদ্দিকীকে দ্বায়িত্ব দিয়ে একটা চিঠি ইস্যু করে দিতে বললাম।
চিঠি হাতে পেয়ে নাহিদ সিদ্দিকী সন্ধ্যার একটু আগ দিয়ে আমার রুমে ঢুকল। আমি তখন অন্য একটা ইন্টারন্যাল মিটিংএ ব্যস্ত । তবু নাহিদ সিদ্দিকীকে বললাম-
-কিছু বলবেন নাহিদ ?
-জ্বী স্যার । আমার একটা ব্যাক্তিগত জরুরী আলাপ ছিল।
- কাল তো ট্রেনিং ক্লাশে দেখা হচ্ছেই , তখন না হয় শুনব । আর হ্যাঁ , ডিএমডি আউয়াল স্যার কাল ট্রেনিং উদ্বোধন করবেন। আপনি সকাল সকাল আসবেন।
-কিন্তু আমার কথাটা শুনবেন না স্যার।
-দেখছেন তো এখন ব্যস্ত , কাল শুনব।
এমন সময় ট্রেনিং এর জন্য দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী মহাব্যবস্থাপক জামাল সাহেব আমার রুমে ঢুকে সেখানে নাহিদকে দেখে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠল।
-এই নাহিদ সাহেব , আপনি এখনও এখানে আছেন ? তাড়াতাড়ি নীলক্ষেতে যান। ট্রেনিং ম্যানুয়ালগুলি নিয়ে আছেন। ফটোকপি ও বাঁধাইয়ের কাজ প্রায় শেষ । তাড়াতাড়ি যান । দোকান যদি আবার বন্ধ হয়ে যায়।
জামাল সাহেবের তাড়া খেয়ে নাহিদ অত্যন্ত বিষণ্ন মনে বের হয়ে গেল। জামাল সাহেবকে কী যেন বলতে গিয়েও বলতে পারল না। মনে হয় মুখের কথা মুখেই আটকে গেল।
ইস যদি সে সময় সে মুখের কথাটি সাহস করে বলতে পারত তবে তার জীবনের এ বিড়ম্বনা সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হতো না।
পরদিন । শুক্রবার। আমি একটু আগেই অফিসে এসেছি। কিছুক্ষনের মধ্যে ডিএমডি আউয়াল স্যার আসলেন । তিনি ট্রেনিং উদ্বোধন করবেন। জামাল সাহেবও এসেছেন। কিন্তু কোর্স-কোঅর্ডিনেটর নাহিদ সিদ্দিকী আসছে না কেন ? তার কাছে ট্রেনিং ম্যনুয়াল আছে। তাছাড়া তাকেই তো ক্লাশ -উপস্থাপন করতে হবে। তাকে ফোন করব –এমন সময় নাহিদ সিদ্দিকী রুমে ঢুকল । কিন্তু আজ একি বেশ তার ! অফিসে এমন সাজে কেউ আসে ! কিন্তু কথা বলার সময় নাই এখন । উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এখনই শুরু করতে হবে।
নাহিদ সিদ্দিকী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সঞ্চালক। কিন্তু আমার বারবার মনে হতে থাকল কোথায় যেন ছন্দপতন ঘটেছে। বিষয়টি ডিএমডি স্যারেরও দৃষ্টি এড়ায়নি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে চা-নাস্তা পানের বিরতি চলছে । ডিএমডি স্যার নাহিদকে কাছে ডাকলেন। দীর্ঘদিন ধরে নাহিদ কোর্স-কোঅর্ডিনেটরের দ্বায়িত্ব পালন করে আসছে তাই স্যার তাকে খুব ভালো করেই চিনেন।
-নাহিদ , আপনি আজ বিয়ের পোশাক পরে এসেছেন কেন ? আর হাত-মুখ হলুদ হলুদ কেন ? স্যার জিজ্ঞাসা করলেন।
-সে কথা আর বলতে চাইনে স্যার । তবে দুপুরের পরে আমার একটু ছুটি লাগবে স্যার।
- কোথাও যাবেন ?
- সে কথা বলতে চাচ্ছিলাম না। এখন মনে হচ্ছে বলতে হবে । বেয়াদপি নিবেন না স্যার।
-নির্ভয়ে বলুন। আমি নাহিদকে অভয় দিয়ে –তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ডি এম ডি স্যারের সামনে কী কথা সে বলতে চায় দেখি।
- স্যার , আজ আমার বিয়ে ।
-বিয়ে ! কই আগে কিছু বলেননি তো ! আমার কণ্ঠে চাপা উত্তেজনা ।
-আহ! জালাল সাহেব তাকে বলতে দিন । বলতে দিন । তো বলেন নাহিদ , আজ আপনার বিয়ে তাহলে এ ছুটির দিনে আপনি অফিসে আসলেন কেন ?
- আমি কী বলব স্যার , অর্ডার হয়েছে , তাই এসেছি।
তার কথাটা আমাকেই ইঙ্গিত করে তাই আমাকেই জবাব দিতে হবে
-অর্ডার হয়েছে সত্য , কিন্তু আপনি কি আপনার বিয়ের কথাটি আমাদের কাউকে বলেছেন।
-না স্যার বলিনি। তবে আজ যে আসতে পারব না তা বলেছি সাত দিন আগেই।
-তা হোক , বিয়ের কথাটা লুকালেন কেন ? ডিএমডি স্যার জিজ্ঞাসা করলেন।
-স্যার আমার বাবা নাই । মা আর এক মামা গার্জিয়ান। মামা বললেন এখন কাউকে না বলে বিয়ে হবে, পরে অনুষ্ঠান , এখন যেন আমি অফিসেও না বলি। তাই বলতে পারিনি। তবে কাল আমি বারবার স্যারদের বলার চেস্টা করেছি । কেউ শুনতে চায়নি। রাতে ফোন করে বলতে পারতাম –কিন্তু ট্রেনিং ম্যানুয়াল তো আমার কাছে। কাল অনেক রাতে সেগুলি নীল ক্ষেত থেকে পেয়েছি। সেগুলি দিতে হলেও আমাকে আসতেই হতো।
-আজ বিয়ে কখন ?
-বাদ জোহর। সকালে বাসাতেই একটু-আধটু গায়ে হলুদ হয়েছে। অফিস টাইম চলে যাচ্ছে-আমি পোশাকও ঠিকমতো চেন্জ করতে পারিনি –ও ভাবেই চলে এসেছি।
- সে তো আপনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে । আপনি আর এক সেকেন্ডও দেরী করেন না। বাসায় চলে যান। আরও কয়েক দিন ছুটি লাগবে কিনা ? ডিএমডি স্যার জিজ্ঞাসা করলেন।
- না ছুটি লাগবে না।
- বেশ। এখন যান।
নাহিদ চলে গেল। তার কাজ আজ জামাল সাহেবই করবেন। ডিএমডি স্যারও চলে গেলেন তবে বিষণ্ন মনে । যাবার সময় বলে গেলেন, আপনারা কাজটা ভালো করেন নাই। নাহিদ কি বলতে চাচ্ছিল –তাতো শুনতে পারতেন । আপনারা এ ঘটনা আজই ভুলে যাবেন। কিন্তু তাকে তো এটা সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে।
তারপর বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে। কতোবার ভেবেছি এজন্য নাহিদ সিদ্দিকীর কাছে মাফ চেয়ে নিব। তা আর হয়ে উঠেনি। সংকোচ লাগে। কাজল বড়ুয়ার কাছে মাফ চাইতে কিন্তু সংকোচ হয়নি। তা হলে নাহিদের বেলায় হচ্ছে কেন ? সে কি আমার অধীনে অনেক দিন ছিল বলে ? নাকি একই স্থানে বাড়ি হবার কারনে ?নাকি আমার অনেক অনেক জুনিয়র বলে । জানি না। তবে মন বলে আপনজনের কাছে মাফ চাবার কী আছে ? যা হোক ,আপনাদের মধ্যে কারো সাথে যদি নাহিদ সিদ্দিকী বা তার স্ত্রীর দেখা হয় তবে আমার হয়ে একটু মাফ চেয়ে নিবেন।
/////////
ছুটি নিয়ে আমার এ লেখাগুলো অগ্রণী ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক (২০০২-২০০৫) জনাব মোঃ আখতার হোসেন স্যার এর নজরে পড়েছিল। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন-
“ছুটি এমন একটা tool যার সঠিক ব্যবহারে অধস্তনদের যতখানি motivate এবং inspire করা যায় অন্য কোন উপায়ে তা করা যায় কিনা আমার জানা নেই। বিনা খরচের motivation. সুতরাং আমার মতে ছুটি কখনও decline করতে নেই।”

( চলবে)

বাংলাদেশ সময়: ৯:১৩:২৫ ● ২৮৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ