
বঙ্গ-নিউজ: চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে পাকিস্তান। মূল্যস্ফীতি অব্যাহত গতিতে বাড়ছে, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানির দিকে। ডলার সংকট তো আছেই। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিনিময় প্রথায় বাণিজ্য করার প্রস্তুতি নিচ্ছে শাহবাজ শরিফের সরকার। খবর দ্য ডিপ্লোম্যাট।
গত মার্চ মাসে পাকিস্তানের রিজার্ভ ৪০০ কোটি বা চার বিলিয়নে নেমে আসে। এ দিয়ে পাকিস্তানের এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এ অবস্থায় দেশের অর্থনীতি চলমান রাখতে তিন দেশের সঙ্গে বিনিময় বাণিজ্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
পণ্যের বিনিময়ে পণ্য বাণিজ্য করলে বিদেশি মুদ্রার উপর চাপ কমবে বলেই মনে করছে পাক সরকার। অন্যতম প্রধান তিন মিত্র রাশিয়া, ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে আপাতত এই ধারায় বাণিজ্য চলবে। অর্থাৎ মুদ্রা আবিষ্কারের আগে যেমন হতো, তেমনভাবে পণ্যের বিনিময়ে পণ্য নীতিতে এখন থেকে বাণিজ্য চলবে।

পাকিস্তান পণ্যের বিনিময়ে পণ্য নীতিতে ওই তিন দেশে আপাতত ২৬টি পণ্য রপ্তানি করবে। এর মধ্যে রয়েছে দুধ, ডিম, মাংস, মাছ, ফল, সবজি, চাল, লবণ, চামড়াজাত পণ্য, জুতো, ইস্পাত, ক্রীড়া সামগ্রী ইত্যাদি। বিনিময়ে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, ডাল, লোহা, ইস্পাত, গমসহ ১১টি পণ্য আমদানি করবে। ইরান থেকে আনা হবে পেট্রোলিয়াম, অপরিশোধিত তেল, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, ফল, বাদাম, সবজিসহ ১০টি পণ্য। প্রতিবেশী আফগানিস্তান থেকে আনা হবে বাদাম, সবজি, তৈলবীজ, খনিজ পদার্থসহ ১০ ধরনের পণ্য।
জানা গেছে, গত মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শাহবাজ শরিফ। তার পরেই বিনিময় বাণিজ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় পাক সরকার। শাহবাজ শরিফের সরকার আশা করছে, এই পন্থায় পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। এর মাধ্যমে দেশের আর্থিক পরিস্থিতিও কিছুটা স্থিতিশীল বলে আশা করছেন তারা।
পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির হার বাড়তে বাড়তে ৪৭ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। গত মার্চ মাসে প্রকাশিত এক সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেখানে পেঁয়াজের দাম ২২৮.২৮ শতাংশ, ডিজেলের দাম ১০২.৮৯ শতাংশ এবং কলার দাম বেড়েছে ৮৯.১৭ শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধির এই ঘোড়দৌড়ে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় সংকট মোকাবেলায় বিনিময় বাণিজ্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা। তবে পূর্বযুগে ফিরে গিয়ে কতটা সাফল্য পাওয়া যাবে তা ভবিষ্যৎই বলবে।