জননেত্রী,কৃষক রত্ন, মানবতার মা, বঙ্গবন্ধুু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশের উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দরকার। তিনিই পারবেন চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সফল করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বংলা ও নেত্রীর কাঙ্ক্ষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিনত করেছেন। য়ারা বংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলতো, তারাই বলছে উন্নয়নের দীক্ষা নিতে বাংলাদেশে যাও। একেই বলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গর্ব অহংকারের প্রতিফলন। সে কারণেই বাংলাদেশের ঘরে ঘরে স্লোগান ওঠছে — শেখ হাসিনা সরকার বার বার দরকার।
১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট যখন মীজাফর বিশ্বাস ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের স্বজনসহ ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করে,তখন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা দেশের বাহিরে অবস্থান করছিলেন।ফলে প্রাণে বেঁচে যান। প্রাণের ভয়ে বিদেশের মাটিতে, পিতা মাতা হারা এতিম শেখ হাসিনা মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। পাঁচ বছর পর নাড়ীর টানে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশে ফিরে আসেন। জনগনের সামনে দাঁড়িয়ে সে দিন তিনি জনগণের কল্যাণে তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধুর মত জীবন উৎসর্গ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন।সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাবার বাড়িতে ঢুকতে পারেননি।সে দিন ধানমন্ডি বত্রিশ নাম্বারের রোডে বসে চোখের জলে বুক ভাসিয়েছিলেন।
অত:পর শরীরের ঘাম ঝরিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে নেমে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে সংগ্রাম করতে থাকেন।অনেক চড়াই উৎরাইয়ের পর এরশাদ সরকারকে তাড়িয়ে নব্বইয়ে গনতন্ত্রের জয় হয়।সে বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার দল হেরে যায়। ১৯৯৬ এ বিপুল ভোটে জয় লাভ করে ক্ষমতায় আসে আওয়ামীলীগ। ২০০১ এ পালাবদল করে জামাত- বিএনপি জোট ক্ষমতায় আসে। এবার আওয়ামীলীগকে নির্মূল করার পরিকল্পনা গ্রহন করে বিএনপি।সে প্রেক্ষিতে ২০০৪ এ একুশে আগস্টে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভ্যিনিউ চত্তরে শেখ হাসিনাকে বোমা হামলা করে।কর্মিরা নিজের জীবনের বিনিময়ে মানব ঢাল তৈরী করে শেখ হাসিনাকে প্রাণে বাঁচায়। রাখে আল্লায় মারে কে? সেই থেকে বাংলাদেশের ভাগ্য খুলে যায়।অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ ও দেশের উন্নয়নের গতি ধারা।
বহু টানাপোড়েনের পর ২০০৯ এ বিপুল ভোটে জয় লাভ করে ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনা সরকার। অত:পর টানা তিন টার্ম প্রায় ১৪ বছর বেশ দক্ষতা, বিচক্ষণতার সঙ্গে দেশ পরিচালিত হয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্পন্ন করে রায় কার্যকর করে সরকার। জঙ্গীবাদ ও আগুন সন্ত্রাস প্রতিহত করে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প নির্মূল হয়। পাশাপাশি যোদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে রায় কার্যকর করে। ডিজিটাল বিপ্লব সার্থক ও সফল করে, বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিনত হয়। জাতি সংঘসহ বিশ্বরাজনীতিতে গুরুত্বপুর্ণ অবস্থানে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ।
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে সেটেলাইট জগতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। ২০২১ রুপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশের তালিকা ভুক্ত হয়। গ্রহন করেছে ২০৪১ পরিকল্পনা।সব তাল লয় ঠিকঠাক থাকলে বাংলাদেশ হবে দক্ষিন পূর্ব এশিয়ায় একটি সম্পৃদ্ধ ও উন্নত দেশ, সে স্বপ্নই দেখছে দেশবাসি। চোখে পরার মত উন্নতি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রম,ত্যাগ,বুদ্ধিমত্তায়।
জানি না জননেত্রীকে নেপথ্যে থেকে কে যুগিয়েছে আকাশ চুম্বি সাহস ও অনুপ্রেরণা। তিনি সকল অসম্ভব ও সম্ভবনার মুখে চ্যালেজ্ঞ ছুঁড়ে দিয়ে পদ্মা সেতু করার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেদিন সবাই চমকে গিয়ে বেলেছিলো, কি করে তা সম্ভব হবে। হাঁ শেখ হাসিনা সব পারে, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন, বিশ্বকে, বৃহৎ রাষ্ট্র আমেরিকাকে চমক দেখিয়ে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষে দারিদ্র্যের হার ১৫.৬,অতিদারিদ্র্যের হার ৭.৪ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।আশা করা যায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৮.৫১ শতাংশে। ইতোমধ্যেই শিক্ষার হার ৭৫ শতাংশে, মাথাপিছু আয় ২৮২৪ ডলারে,রেমিটেন্স ২১ বিলিয়ন ডলারে,রপ্তানী আয় ৫২.০৮ বিলিয়ন ডলারে এ উন্নীত হয়েছে।নির্দিধায় বলতে হবে ২০০৯–২০২৩ পর্যন্ত দেশে অভূতপূর্ব আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
সামনে জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে।বিএনপি,জামায়াত, কিছু সমমনা দল রাজনীতির মাঠ গোলা করার চেষ্টা করছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক মহলে রয়েছে নানা ষড়যন্ত।কিছু বাকযুদ্ধা বিদেশে বসে ইউটিউবে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তির বিষ বাষ্প ছড়াছে। এরাই কয়েক দিন আগে বলেছিলো ১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চলবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে।তেমনটি ঘটেনি।তাদের মনে রাখা দরকার রাজনীতি তো ছেলের হাতের মোয়া মুড়কি নয়।দাবার ঘুটি খুব সাবধানে চালতে হয়।আগামী নির্বাচনে ছেলে ভুলানো খেলার যুক্তি দেখিয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করলে,সে দলকে সাগরের অতলান্তে হারিয়ে যেতে হবে।তাদের রাজনীতি দাঁড়াবে গিয়ে জিরো পারসেন্টে। আশা করি এমনটা হতে দিবে না।বিএনপি নির্বোধ না হলে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে।
সাবাই জানে জায়মাত স্বাধীনতা বিরুধী, দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো তা স্বীকার করে না, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাকে স্বীকৃতি দেয় না, জাতীয় চার মূলনীতিতে তাদের আস্থা নেই,বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে মেনে নিতে রাজি নয়।অথচ এ দেশের সকল সুযোগ সুবিধা তারা ভোগ করছে।আর ছিদ্রপথ খোঁজছে কি ভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, দেশের সার্বভৌমত্বকে কলঙ্কিত করা যায়।সেই জামায়াতকে বগল দাবা করে বিএনপি রাজনীতি করছে,যা কারো প্রত্যাশিত বা কাম্য নয়।
জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে - স্বাধীনতা বিরুধী জামায়ত - বিএনপি জোটের পাশে দাঁড়াবে, না দেশের উন্নয়ন মুখী,অসাম্প্রদায়িক,প্রগতিশীল আদর্শবাদী, মুক্তিযোদ্ধের পথ প্রদর্শক দলের নৃতৃত্বদানকারী আওয়ামীলীগের পাশে দাঁড়াবে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, মানুষ নিরাপদে ঘুমাতে পারে, জান- মাল নিরাপত্তা পায়। করোনা মহামারির মত বিপদ মোকাবেলা করতে পারে।তৃণমূল পর্যায়ের জনগণ আত্মনির্ভরশীল হতে পারে, ভুমিহীনরা মাথা গোঁজার স্থায়ী আবাসন সুবিধা পায়। চাওয়া পাওয়ার মধ্যে সমন্নয় করে উন্নয়নের গতিধারা অবাহত থাকে।
পরিশেষে বলি আসুন - শেখ হাসিনার মতো ত্যাগী,পরিশ্রমী,নির্লোভ, সৎ,দেশের অতন্দ্র প্রহরীকে আগামী নির্বানে দেশ সেবার সুযোগ দেই। চলমান উন্নয়নের গতিধারাকে আরো বেগবান করার জন্য বলি -শেখ হাসিনা সরকার আবারো দরকার। জনকল্যাণে চলমান অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করার সুযোগ দেই।এদেশ আমার আপনার সর্বোপরি সর্বস্তরের জনগণের। এদেশের মঙ্গলার্থে সঠিক সিদ্ধান্ত আমাদেরকেই নিতে হবে।
লেখক: উপদেষ্টা, বাংলাদেশ কৃষক লীগ।