কারোর সাথে বা কোনো স্থানে জোরপূর্বক থাকার থেকে সেখান থেকে চলে আসা উত্তম । জোরপূর্বক থাকলে টক্সিটি বাড়ে বৈ কমে না । যেমন একটি সুন্দর রিলেশনশিপের ( যে কোন ধরনের সম্পর্ক ) মধ্যে যখন অনেক বেশি রেস্ট্রিকশন চলে আসে তখন দুই পক্ষের একজনের জন্য ও সেই রিলেশনশিপ আর কমফোর্ট থাকে না। তুমি এইটা করতে পারবে না, ওইটা করতে পারবে না,এখানে যেতে পারবে না,ওখানে যেতে পারবে না হাজার রেস্ট্রিকশন। মাঝে মাঝে এইগুলা কিউট লাগলে ও পরিশেষে কিন্তু এই গুলোই কাল হয়ে দাঁড়ায়। তখন আমরা একজন অন্য জনের থেকে নিজেদেরকে লুকাতে শুরু করি। আর একবার যদি এই লুকোচুরি শুরু হয়ে যায় তাহলে তা হয়তো আর কোনোদিন যায় না। এই লুকোচুরির খেলায় আমরা আমাদের সেই কমফোর্ট জোন কে হারিয়ে ফেলি ।
কমফোর্ট জোন হলো সেই জায়গা যেখানে আপনার আপনিকে আপনি অবলীলায় উপস্থাপন করতে পারবে ,যেখানে লুকোচুরির ছিটেফোঁটাও থাকবে না , থাকবে না নিজের আত্মসম্মান বজায় রাখার মারাত্বক প্রবণতা বা নেগেটিভ ভিউ তৈরি হবার ভয়। আপনার কমফোর্ট জোন যেনো আপনারই এক ভিন্ন প্রতিচ্ছবি যেখানে হ্যা,না এর কোনো রেস্ট্রিকশন নেই । নেই কোনো বাধ্যবাধকতা ।
এই কমফোর্ট জোন এর সাথে জড়িত থাকে আরো ও অনেক ব্যাপার। যা আমাদের সুস্থ ও সুন্দর রাখে। বিশেষ করে আমাদের মনস্তাত্ত্বিক দিক এই ব্যাপার গুলোর সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত । দিন শেষে কেউ একজন থাকুক যে আপনার মানুষিক শান্তির কারণ হোক বা আপনি কারোর মানুষিক শান্তির কারণ হন ।
যেকোনো ধরনের সুস্থ সম্পর্কের মধ্যে এই কমফোর্ট জোন ব্যাপারটা থাকা দরকার । জোরপূর্বক থাকার প্রবণতা আজকাল খুব বাজে অভ্যাসে পরিণত হয়েছে আমাদের মধ্যে। যেই মানুষটি আপনাকে তার কমফোর্ট ভাবছে না তার কাছে আপনার থাকার দরকার কি ?
সে কি তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আপনার সাথে আছে? বা আপনি কি আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সাথে আছো ? এই প্রশ্নের জবাব খোঁজা ভীষন দরকার। যদি উত্তর না হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই। আর যদি উত্তর হ্যা হয় তাহলে উচিৎ নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে কমফোর্ট জোন তৈরি করা। তারপর ও যদি অপর দিকের মানুষকে কমফোর্ট দিতে বা নিজে কমফোর্ট না পাওয়া তাহলে সেখানে না থাকায় উত্তম ।
আপনাকে যখন কেউ তার কমফোর্ট জোন থেকে সরিয়ে ফেলবে তখন তার অনেক ব্যাবহার_ই আপনাকে উত্তর দিয়ে দিবে । যেমন ইগনোর করা, ইফোরটিভ না থাকা, এক্সকিউজ দেখানো । এমন আরও অনেক কিছু ।
কেউ থাকলে স্বাচ্ছন্দে থাকুক আপনার সাথে জোরপূর্বক নয় বা আপনি কোথাও জোরপূর্বক না থেকে স্বাচ্ছন্দে থাকুন । আর যদি বুঝতে পারেন কেউ আপনার সাথে জোরপূর্বক রয়েছে তাহলে আপনি কমফোর্ট জোন তৈরি করুন অথবা তাকে যেতে দিন ।
জীবন নামক প্রহামান নদীতে যাত্রীবাহী নৌকায় যাত্রীর সংখ্যা নেহাত কম হয় না । কিছু যাত্রী স্থায়ী এবং কিছু যাত্রী ভাসমান । আপনি না হয় সেই ভাসমানদের তালিকাতেই নাম লিখালে। নিজে ভাল থাকুন, অন্যকে ভাল রাখুন ।
সংকলনেঃ মাসুম আজাদ