শাল্লায় অধ্যাপকের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবাজ পিআইসি চক্রের অপপ্রচার : সুধীজনের নিন্দা ও ক্ষোভ

Home Page » সারাদেশ » শাল্লায় অধ্যাপকের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবাজ পিআইসি চক্রের অপপ্রচার : সুধীজনের নিন্দা ও ক্ষোভ
রবিবার ● ১৯ মার্চ ২০২৩


শাল্লায় অধ্যাপকের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবাজ পিআইসি চক্রের অপপ্রচার :  সুধীজনের নিন্দা ও ক্ষোভ

সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন সম্মানিত অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাসকে নিয়ে বিভিন্ন অনলাইনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মানহানিকর সংবাদ পরিবেশন করেছে একটি কুচক্রী মহল। তারই প্রতিবাদে নিন্দার ঝড় উঠেছে উপজেলাজুড়ে। এমন অসত্য, বানোয়াট ও মনগড়া সংবাদের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপজেলার সুধীজনরা। শনিবার (১৮মার্চ) উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাবেক সভাপতি ও হাবিবুর রহমান বলেন তরুণ স্যার তো একজন ভালো মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচারের নিন্দা জ্ঞাপন করেন তিনি। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দাশ বলেন ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এমন অসত্য সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সহ-সভাপতি রথীন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন এটি নিঃসন্দেহে অপপ্রচার। দুর্নীতির সাথে জড়িতরাই এমন অপপ্রচার চালিয়েছে। আমি এমন ভিত্তিহীন ও মনগড়া সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।


বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস একজন ভালো মানুষ। সব সময় তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন। তাঁর বিরুদ্ধে যারা অপপ্রচার করেছে তারা ঘৃণিত কাজ করেছে। আমি এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বীর মুক্তিযোদ্ধা নিখিল চন্দ্র দাস বলেন তরুণ কান্তি দাসের মতো সমাজের একজন গুণী মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা গুরুতর অন্যায় কাজ। এভাবে একজন শিক্ষিত মানুষের মানহানি করে সংবাদ করা সঠিক নয়। আমি এই অপপ্রচারের নিন্দা জানাই। বীর মুক্তিযোদ্ধা বলরাম দাস বলেন একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এভাবে অপপ্রচার করা ঠিক হয়নি। তিনি তো দুর্নীতির বিরুদ্ধে সব সময় প্রতিবাদ করেন। তিনি নিঃসন্দেহে একজন ভালো মানুষ। গণ্যমান্য ব্যক্তি হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস তো সমাজের একজন সজ্জন ব্যক্তি। একজন ভালো মনের মানুষ তো বটেই। তাঁর বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

সাবেক শিক্ষক ও কবি রবীন্দ্র চন্দ্র দাশ বলেন অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস তো প্রকৃত একজন মানুষ গড়ার কারিগর। সমাজের পথ প্রদর্শক। একজন গুণী ও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব। তাঁর মতো একজন সমাজ কল্যাণকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে যখন অপপ্রচার হয়, তখন বুঝা যায় সমাজ কোথায় যাচ্ছে। এটা তো মানহানিকর। আমার মনে হয় যাদের স্বার্থে আঘাত লেগেছে, তারাই এমন জঘন্যতম কাজ করেছে। এই অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। অধ্যাপক কানাইলাল সরকার বলেন একজন শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অসত্য সংবাদ নিঃসন্দেহে নিন্দাজনক কাজ। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন এমন সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনিও। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক বাহারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বরেণ্য ও প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তি রামানন্দ দাশ বলেন এটা তো কল্পনার বাইরে। সমাজের একজন সুনামধন্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যাচার মেনে নেয়া যায় না। এসব অসত্যের বিরুদ্ধে সমাজের প্রত্যেক সচেতন মানুষকে প্রতিবাদে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। এসব অপপ্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পূর্বেই রাজনীতিতে পদার্পণ করা এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ।


এবিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রেমবাসী দাস বলেন আমার জায়গার উপর দিয়ে পিআইসির বাঁধ গেছে। আমাকে ১২৮নং পিআইসির সদস্য সচিব রাখা হয়েছে। এটি তো আমার অধিকার। এখানে আমার ভাইয়ের কোনো হাত ছিলো না। আমার ভাই অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাসকে নিয়ে যে অপপ্রচার চালিয়েছে, আমি তা (১৮মার্চ) আজকে শুনেছি। ওইসব কথিত সাংবাদিকরা আমার কাছে ১লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। আমি তাদের টাকা দিই নাই। একারণেই আমার ও আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার। অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে তিনি আইনীভাবে মোকাবিলা করবেন বলে জানান ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা। এব্যাপারে অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস বলেন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে একটি মহল। তারা আমাকে জড়িয়ে যেভাবে সংবাদ উপস্থাপন করেছে, তাতে আমি সত্যিই বিব্রত। সংবাদের পরিভাষাও ছিলো অনেকটা অশালীন। কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি,  সিন্ডিকেট কিংবা সমাজ ধ্বসের সাথে আমি জড়িত থাকতে পারি না, নেইও। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ঐক্য পরিষদের আমি কেউ নই। আমি একজন বেসরকারি শিক্ষক। সমাজের নানা বিষয় নিয়ে মানুষ আমার কাছে। সমাধান করারও চেষ্টা করি। শিক্ষকতার পাশাপাশি সব সময় সমাজহিতৈষী কাজকর্মে আমি নিয়জিত থাকি। যেহেতু আমি সামাজিক সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাথে যুক্ত, সেহেতু কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমি সেখানে ছিলাম। আমি সেদিন কলেজ থেকে ছুটিও নিয়েছি। আমার যা কিছু কর্মকাণ্ড সবই সমাজের কল্যাণকর কাজের জন্য। তবে এমনটি এই প্রজন্মের ছেলেদের নিকট আশা করেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

জানা যায়, শাল্লা ডিগ্রি কলেজের একমাত্র প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক তরুণ কান্তি দাস। কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে একাই তিনি বাংলা, ইংরেজি ও ব্যবসা শাখার অধিকাংশ বিষয়ে পাঠদান করতেন। এখনও তিনি ব্যবসা শাখার একমাত্র শিক্ষক। এমন একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবস্থান করে অসৎকর্মে লিপ্ত কিছু কথিত সংবাদকর্মী। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে এমন অসত্য সংবাদ পরিবেশন করে একজন সম্মানিত কলেজ শিক্ষকের মানহানি করেছে তারা। এনিয়ে প্রবীণ ব্যক্তিত্ব আজমাণ গণি তালুকদার স্পষ্ট ভায়ায় বলেন চামচামি করার একটা সীমা থাকে। এরা তো দেখি সীমা অতিক্রম করে সুনামধন্য একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছে। আমি ওই নিন্দনীয় সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এবিষয়ে শাল্লা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত সেন বলেন সমাজের শ্রদ্ধাভাজন একজন সুনামধন্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন মানহানিকর সংবাদ পরিবেশন করা মূলধারার সাংবাদিকদের কাজ নয়। অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস না কোনো পিআইসি, না কোনো সাইনবোর্ড, না কোনো সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস একজন প্রজ্ঞাবান মানুষ, মাটির মানুষ ও একজন সজ্জন ব্যক্তি। মুক্তমনের মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে যে সংবাদ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অপপ্রচার। এটি হলুদ সাংবাদিকতার নামান্তর। সাংবাদিকরা সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক। একজন গুণী মানুষের আত্মসম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা সাংবাদিকদের কাজ নয়। মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদে সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। অপপ্রচার, গুজব সৃষ্টি করা সাংবাদিকদের কাজ নয়। যারা সংবাদ প্রচার করেছে তারা নিজেরাই পিআইসির সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। শাল্লা উপজেলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আমি। তারা শাল্লা উপজেলা প্রেসক্লাবের কেউ নয়। তাদের এইসব অপকর্মের কারণেই প্রেসক্লাবে রাখা হয়নি তাদের বলে জানান প্রেসক্লাবের সভাপতি।


উল্লেখ্য, হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জের শাল্লায় গত ১৫মার্চ সামাজিক সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপজেলার ইউএনও কার্যালয় ঘেরাও করা হয়। শান্তিপূর্ণভাবে ওই ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে সংগঠনের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুম তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে ভিন্ন কৌশল অবলম্ব করেন তার বাহিনী দিয়ে। তিনি উপজেলার ভান্ডাবিল হাওরে নীতিমালা লঙ্ঘন করে জমি নেই এমন তিন অকৃষক ব্যক্তিকে ২৭নং পিআইসি উপহার দিয়েছেন দুর্নীতিকে আড়াল করার জন্য। যাদেরকে তিনি পিআইসি দিয়েছেন তারা পেশায় আবার সংবাদকর্মী। ২৬নং পিআইসির মধ্যের অংশে ১৪৬মিটার অল্প ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৪লাখ ৯৭হাজার টাকা। ঘেরাও কর্মসূচিকে বিতর্কিত করতেই ওই কর্মসূচির বিরুদ্ধে অপপ্রচারে ব্যবহার করে এসব কথিত সংবাদকর্মীদেরকে। ১৬মার্চ থেকে অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাসের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে মাঠে তারা। বিভিন্ন অনলাইনে অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাসের বিরুদ্ধে মানহানিকর ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার করতে থাকে ওইসব সংবাদকর্মীরা। সংবাদে তারা অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত বলে উল্লেখ করেন। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি উল্লেখ্য করেন। জনৈক ব্যক্তির বক্তব্যের বরাদ দিয়ে সংবাদে বলা হয় তরুণ সমাজটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যা সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে এই অপপ্রচারের বিষয় নিয়ে আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন বলে জানান সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ সময়: ১১:২৭:১৭ ● ৩৮২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ