বঙ্গ-নিউজ: ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রায় এক বছর হতে চলছে। চলমান পরিস্থিতিতে এবার দেশটিতে রুশ বাহিনীর হামলাকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বলে অভিযুক্ত করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। খবর বিবিসি, আল জাজিরা।
আজ জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে দেওয়া এক বক্তৃতায় এমন মন্তব্য করেন হ্যারিস। তিনি বলেন, রুশ বাহিনী দেশটির বেসামরিক জনগণের উপর ‘নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন’ পরিচালনা করেছে। বিষয়টি ‘আনুষ্ঠানিকভাবে চিহ্নিত’ করেছে আমেরিকা।
‘আমরা আইনের মানদণ্ডগুলো জেনে ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডগুলো পরীক্ষা করেছি। এতে কোনো সন্দেহ নেই, এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ এমনা মনে করেন প্রাক্তন প্রসিকিউটর হ্যারিস।
তিনি বলেন, ‘যারা এই অপরাধগুলো করেছে এবং তাদের ঊর্ধ্বতন যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বলছি, আপনাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
গেল বছরের মার্চে বাইডেন প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারণ করেছিল যে, রাশিয়ান সেনারা ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ করেছে। সেই সঙ্গে অপরাধীদের বিচার করতে অন্যদের সঙ্গে কাজ করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়, যখন দেখা যায় কোনো দেশের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক আক্রমণ এবং নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হামলা পরিচালিত করা হচ্ছে।
ইউক্রেনে রুশ সেনাদের দ্বারা পরিচালিত হামলা ও অপব্যবহারগুলোর একটি তালিকাভুক্ত করা নিয়ে হ্যারিস বলেছেন, ‘হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ও নির্বাসন, মৃত্যুদণ্ড, মারধর এবং বৈদ্যুতিক আঘাতের মতো জঘন্য কাজ করছে রাশিয়ান বাহিনী।’
গেল বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পরপরই দেশটির বুচায় ‘বর্বর এবং অমানবিক’ হামলার শিকার কয়েক ডজন ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন হ্যারিস।
পরে ৯ মার্চের মারিউপোলে একটি প্রসূতি হাসপাতাল লক্ষ্য করে রুশ সেনাদের বোমা হামলায় এক শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছে। সেই সময় রাশিয়ান সেনারা একটি চার বছর বয়সী শিশুকে যৌন নিপীড়ন করে। পরে যা জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে।
ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) সমর্থিত সংস্থাগুলো ৩০ হাজারের বেশি যুদ্ধাপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা চলতি সপ্তাহে দেশটির বাখমুত শহরে গোলাবর্ষণের ঘটনাকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে বলে দাবি মার্কিন সরকারে।
এদিকে রাশিয়া বলেছে, নিজেদের নিরাপত্তা হুমকি দূর করতে এবং রুশ-ভাষীদের সুরক্ষায় তারা ইউক্রেনে একটি ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ পরিচালনা করছে। ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করা কিংবা যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুতিন সরকার।