বঙ্গ-নিউজ: তুরস্কের মধ্যাঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর আগে স্থানীয় সময় রাত ৩:১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। বিধ্বস্ত হয়েছে সাড়ে তিন হাজার ভবন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে।
আজ স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে তুরস্কের খ্রামানমারাস প্রদেশে আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। দ্বিতীয় দফা এই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে দামেস্ক, লাতাকিয়াসহ সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চল। ভূমিকম্পের ফলে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভবন-দোকনপাট কেঁপে ওঠার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন সেখানকার ইউজাররা।
এর আগে রাতে সিরিয়া সীমান্তের কাছে গাজিয়ানতেপে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ায়। এখন পর্যন্ত ওই ভূমিকম্পে তুরস্কে কমপক্ষে ৯১২ জন ও সিরিয়ার সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ৫৬০ জন নিহত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এছাড়া সিরিয়ার সরকারবিরোধীদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ২২১ জনের মৃত্যুর কথা জানান সেখানকার প্রতিনিধিরা। লন্ডনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যাস রাইটস বলেছে, বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ভূমিকম্পের পর এখনও প্রায় সাত হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়েপ এরদোয়ান গতরাতের ভূমিকম্পকে ১৯৩৯ সালের পর তুরস্কে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প বলে অভিহিত করেছেন। সেবার ভূমিকম্পে ৩৩ হাজার মানুষ নিহত ও এক লাখ আহত হয়েছিল।
রাশিয়া, ইরান, চীন, কাতার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ইসরায়েল, লেবানন, ভারতসহ এক ডজনের বেশি দেশ ভূমিকম্পে উদ্ধার অভিযানে তুরস্ক ও সিরিয়াকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। তুরস্কের বিমান বাহিনী উদ্ধার অভিযানে নিয়োজিত কর্মী ও চিকিৎসকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি এয়ার করিডরের ঘোষণা দিয়েছে।
প্রথম দফা ভূমিকম্পের প্রায় সাত ঘণ্টা পর সিরিয়ার এন্টিওকে একটি ১২তলা বহুতল ভবন ধসে পড়তে দেখা গেছে। একইভাবে তুরস্কের সালনুরফ শহরে আজ দুপুরে ৮তলা একটি ভবন ধসে পড়েছে।
ভূমিকম্পের পর এখনও দাঁড়িয়ে থাকা এমন আরও ভবন যে কোনো মুহূর্তে মাটিতে লুটিয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন উদ্ধার অভিযানে নিয়োজিতরা।
তুরস্ক সীমান্তের কাছের সিরীয় শহর হারিম ভূমিকম্পের কারণে পুরোপুরি মাটিতে মিশে গেছে। ৩০ হাজারে বেশি মানুষ অধ্যুষিত শহরটিতে এখন ধ্বংসস্তুপ ছাড়া কিছু নেই।
জীবিত মানুষের আর্তনাদ শোনা যায় কিনা তা জানতে উদ্ধারকর্মীরা ইট-পাথরের স্তুপের মধ্যে সতর্কভাবে নানারকম ইলেকট্রনিক ডিভাইস ঘোরাচ্ছেন। সবকিছু ভেঙে পড়ায় পোর্টেবল সোলার প্যানেল নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে উদ্ধার কর্মীদের।