তারেক-জোবায়দার সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ

Home Page » জাতীয় » তারেক-জোবায়দার সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ
বৃহস্পতিবার ● ৫ জানুয়ারী ২০২৩


তারেক-জোবায়দা ফাইল ছবি

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তাদের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক মো. আছাদুজ্জামান বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, এটি একটি মামলার নিয়মিত প্রক্রিয়া। কোন পলাতক আসামি আদালতে হাজির না হলে তার সম্পদ ক্রোক বা জব্দ করার নির্দেশ দেন আদালত।

আদেশের পর তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সমকালকে বলেন, এসব রাজনৈতিক মামলায় দেশের কারো আগ্রহ, আস্থা ও বিশ্বাস নেই। জনগণ অপেক্ষায় আছে, কবে একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে। ওই সরকারই এ সব মামলাসহ এর সঙ্গে জড়িতদের স্বরূপ উন্মোচন করবে।

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সমকালকে বলেন, তারেক রহমান ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এসব মামলা করা হয়েছিল। একই সময়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু অন্যান্য মামলাগুলোর কোন হদিস পাওয়া না গেলেও শুধুমাত্র তারেক রহমানসহ বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সরকার দুদককে ব্যবহার করার মাধ্যমে হয়রানি করার জন্যই এসব মামলা পরিচালনা করছে।

গত বছর ১ নভেম্বর তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ গ্রহণ করে গত বছরের ১ নভেম্বর একই আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য রাখেন আদালত। সে ধারাবাহিকতায় আজ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

পুলিশ প্রতিবেদনে জানায়, নিজ নিজ ঠিকানায় আসামিদের পাওয়া যায়নি। এরপর তাদের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সম্পদ ক্রোক করা সংক্রান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে গত বছরের ২৬ জুন তারেক ও জোবায়দাকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা নিয়ে পৃথক তিনটি রিট আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তারেক-জোবায়দাকে ‘পলাতক’ ঘোষনা করা হয়। এই দম্পতি ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে অবস্থান করছেন।

ওইদিন হাইকোর্টের রায়ে আরও বলা হয়, তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমান পলাতক থাকায় তাদের রিট গ্রহনযোগ্য নয়। তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী এ মামলা পরিচালনা করতে পারবে না। একই সঙ্গে এ মামলার যাবতীয় নথিপত্র ঢাকার বিচারিক আদালতে পাঠাতে বলেছেন। পাশাপাশি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। সেখানে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। পরে একই বছর তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমান মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পৃথক রিট আবেদন করেন। এরমধ্যে ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক। আসামিরা মামলা বাতিলের আবেদন করলে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্বপরিবারে লন্ডনে চলে যান। দীর্ঘদিন ধরে সেখানেই তারা বসবাস করছেন। ইতোমধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ চার মামলায় সাজা হয়েছে তারেক রহমানের।

ছাত্রদলের বিক্ষোভ: তারেক রহমান ও তার ডা. স্ত্রী জোবায়দা রহমানের সম্পদ ক্রোকের প্রতিবাদে আজ রাতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রদল।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৬:৩৬ ● ২৯৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ