বঙ্গ-নিউজঃ সকাল তখন সাড়ে ৭টা ছুঁই ছুঁই। শীতের কুয়াশায় সূর্যের আলো তখনও ঝাপসা। এরই মাঝে যেন উত্তাপ ছড়াচ্ছে মেট্রো রেলের প্রথম যাত্রার অপেক্ষা। ঠিক সকাল ৮টা ৩৩ সেকেন্ডে হুইসেল বাজিয়ে যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম মেট্রো রেল।
ততক্ষণে আগারগাও স্টেশনে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা মানুষের সারি পাসপোর্ট অফিস পার হয়ে গেছে।
সেই অপেক্ষার সারিতে দেড় মাসের শিশু তানাস পারভীনকে কোলে দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন শাহনাজ পারভীন। তিনি থাকেন মিরপুরে সাড়ে ১১ স্টান হাউজিং এলাকায়। শাহনাজের সঙ্গে স্বামী ও ছোট বোন এসেছেন। খুব ভোরেই বাসা থেকে বের হয়ে আগারগাও এসেছেন শুধু প্রথম দিন মেট্রোতে চড়বেন বলে। উত্তরা থেকে আবার মেট্রো রেলেই ফেতর আসবেন।
শাহনাজ বলেন, মেট্রো রেল চালু হলে প্রথম দিনই বাচ্চাকে নিয়ে ট্রেনে উঠবো ঠিক করে রেখে ছিলাম। সে অনুযায়ী আজ খুব ভোরে বাসা থেকে রওনা দিয়ে আগারগাঁও চলে আসি। এটা ওর (সন্তানের) জীবনেও স্মৃতি হয়ে থাকবে। মিরপুরে স্টেশন থাকলেও ওখানে এখনও চালু হয় নাই তাই এখানে এসেছি। এখান থেকে দিয়াবাড়ি যাবো ওখান থেকে আবার এখানে ব্যাক করবো।
শাহনাজের মতো প্রথম দিনের যাত্রী হিসেবে অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মেট্রোরেল স্টেশনে ভিড় করেন অনেকে। প্রথম দিনের যাত্রী হিসেবে আমজনতার কাতারে ছিলেন সব বয়সী নারী-পুরুষ। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেয়ে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিতে উৎসাহী মানুষের সংখ্যাই ছিল বেশি।
রাজধানীর আগারগাঁও থেকে উত্তরায় মেট্রো রেলে পৌঁছতে সময় লেগেছে ১৩ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ২৩ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে আগারগাঁও স্টেশন ত্যাগ করে ১১টা ৩৬ মিনিট ২০ সেকেন্ডে উত্তরা স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছে।
দেশের প্রথম মেট্রো রেলে সরেজমিন ভ্রমণের সময় দেখা যায়, ট্রেনে যারা প্রথম উঠছেন তারা সবাই উচ্ছ্বসিত। সবাই ট্রেনে উঠে প্রথমে উল্লাস প্রকাশ করছেন।
সেলফি তুলছেন, ভিডিও করছেন। অনেকেই ভিডিও কলে কথা বলছেন, দেখাচ্ছেন বাইরের দৃশ্য।
যাত্রীরা বলছেন, এমআরটি পাস নিতে একটু লেট হয়েছে। আর এটাই স্বাভাবিক। কারণ প্রথম অবস্থায় অভ্যস্ত হওয়ার বিষয় রয়েছে। তবে দেখে ভালো লাগছে, দেশে এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে টিকিট কাটতে পারছি। দেশ এখন ডিজিটাল।