বঙ্গ-নিউজ : ২০১২ সালে কারিগরি শিক্ষায় দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে স্কিল ট্রেনিং ফর অ্যাডভান্সিং রিসোর্সেস প্রোগ্রাম (স্টার) কার্যক্রম শুরু করে ব্র্যাক। এই কার্যক্রমের সঙ্গে ইউনিসেফ, আইএলও, এবং উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো যুক্ত আছে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমটির আওতায় এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১ লাখ ২০ হাজার তরুণ-তরুণীকে কারিগরি দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ব্র্যাক। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, এই কার্যক্রমে শতকরা ৬০ ভাগ নারী বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছেন, যাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ শিক্ষার কোনও বিকল্প পথ ছিল না।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ব্র্যাকের স্কিল ট্রেনিং ফর অ্যাডভান্সিং রিসোর্সেস প্রোগ্রামের (স্টার) ১০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ মাধ্যমে জানানো হয়, ব্র্যাক আয়োজিত স্টার কার্যক্রমটি প্রচলিত ‘ওস্তাদ-সাগরেদ’ মডেলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়, যেখানে স্কুলের বাইরে কিশোর এবং যুবকদের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষানবিশ হিসেবে নিয়োগ করা হয়, যাতে তারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা লাভ করে। বিশেষ করে প্রায় শতকরা ৬০ ভাগ মেয়ের কাছে কার্যক্রমটি ভিন্ন মাত্রা তৈরি করে, যাদের কারিগরি প্রশিক্ষণের কোনও বিকল্প ছিল না।
এই কার্যক্রমে আরও দেখা যায়, ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ওপর প্রশিক্ষণ বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। মেয়েদের সঞ্চয়ের অভ্যাস ছেলেদের তুলনায় ৬ গুণ বেড়ে যায়। আরও দেখা যায়, অবিবাহিত মেয়েদের মধ্যে কর্মসংস্থান ৪৩ শতাংশ বেড়েছে, নারী অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বাল্যবিয়ের সম্ভাবনা ৬২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে দ্রুত মাতৃত্ব বিলম্বিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল বলেন, ‘যুবসমাজকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করুন, তারাই দেশ গড়বে। বাংলাদেশ সরকার যুবাদের দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে এবং তাদের স্বাবলম্বী হতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। সরকারি, বেসরকারি, ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান শিক্ষা ও কারিগরী প্রশিক্ষণের প্রয়োজন এমন তরুণদের কাছে পৌঁছানোর জন্য একযোগে কাজ করতে পারে। দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে কারিগরী শিক্ষায় শিক্ষিত করলে জনশক্তি জনসম্পদে পরিণত হবে।’
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, ‘স্কুলের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে অনেক কিশোর-তরুণ রয়েছে। যারা অন-দ্য-জব ট্রেনিং প্রোগ্রামের অধীনে কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করতে পারে। নারী অংশগ্রহণকারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে এই কর্মসূচি আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।’
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর যুগ্মসচিব মু. নুরুজ্জামান শরীফ, সমন্বিত গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি (সিভিডিপি) প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আলফাজ হোসেন এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ডা. মো. ওমর ফারুক।