
বঙ্গ-নিউজ: রিজার্ভের টাকা কেউ চিবিয়ে খেয়ে ফেলেনি, সে টাকা দেশের উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ গণভবন থেকে পায়রা বন্দরের কয়েকটি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই জিজ্ঞেস করেন রিজার্ভের টাকা কই গেল? আমি তাদের বলতে চাই, সেই টাকা গেছে পায়রা বন্দরে, খাদ্য আমদানিতে, দেশের মানুষের উন্নয়নে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে একটি ফান্ড গঠন করা হয়েছে। যাকে বলছি বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। এই ফান্ড থেকে সল্প সুদে ঋণ হিসেবে টাকা দেওয়া হয়েছে পায়রা বন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু বানিয়েছি, পায়রা বন্দরের কাজ শুরু করেছি। এসব কি দিয়ে করেছি? যারা বলেন রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল? তাদের বলতে চাই, রিজার্ভের টাকা কেউ চিবিয়ে খায়নি, সেই টাকা খাদ্য আমদানিতে, দেশের উন্নয়নে, মানুষের কাজে ব্যবহার হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আজ যেসব উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং, প্রথম টার্মিনাল এবং ছয় লেনের সংযোগ সড়ক ও একটি সেতু নির্মাণ। আর উদ্বোধন করা হয়েছে দুটি পাইলট ভেসেল, দুটি হেভি ডিউটি স্পিডবোট, একটি বয় লেইং ভেসেল, একটি সার্ভে বোট এবং দুটি টাগবোটসহ আটটি জাহাজ।
সমুদ্রবন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ে একটি ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১০০-১২৫ মিটার-চওড়া এবং ১০ দশমিক ৫ মিটার-গভীর চ্যানেল তৈরি করা হবে। এটি বন্দরে ৪০ হাজার টন কার্গো বা ৩ হাজারটি কনটেইনার বোঝাই জাহাজ ডক করার সক্ষমতা তৈরি করবে। ক্যাপিটাল ড্রেজিং চ্যানেলে ৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা খরচ হবে এবং বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি নুল এই ড্রেজিংয়ের কাজ করবে। পায়রা সমুদ্রবন্দরের জন্য নির্মিত জাহাজ ও নৌযানগুলো বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিদেশি জাহাজের আগমন ও প্রস্থান পর্যবেক্ষণ এবং চ্যানেল রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা করবে।
প্রথম টার্মিনাল, ছয় লেনের মহাসড়ক ও সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিনটি বিদেশি জাহাজ একযোগে কন্টেইনার বা বাল্ক কার্গো ডক করতে পারবে। ৪ হাজার ৫১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রথম টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণে স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
পায়রা সমুদ্রবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য আন্ধারমানিক নদীর ওপর ৭৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে ১ হাজার ১৮০ মিটার দীর্ঘ সেতু। সেতুটি ৩০ মাসে (আড়াই বছর) নির্মিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. সোহায়েল আহম্মেদ জানান, এরইমধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ ২৩৬টি সমুদ্রগামী জাহাজ খালাসের মাধ্যমে ৫৪৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে। পায়রা বন্দর পুরো সক্ষমতায় আসলে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে যোগ করবে নতুন মাত্রা।