
বঙ্গনিউজঃ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং শক্তি হারিয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ফলে বিপদ কেটে যাওয়ায় প্রায় ২২ ঘণ্টা পর সারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এ ঘোষণা দিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে এ নিয়ন্ত্রক সংস্থার উপপরিচালক মো. মোবারক হোসেন মজুমদার জানান, আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় সকাল পৌনে ১০টা থেকে লঞ্চসহ সকল নৌযান চলাচল শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসায় সোমবার বেলা ১২টা থেকে সারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছিল বিআইডব্লিউটিএ। ভারী বর্ষণ আর জলোচ্ছ্বাস সঙ্গী করে সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। মধ্যরাত নাগাদ ভোলার কাছ দিয়ে এ ঝড় পুরোপুরি স্থলভাগে উঠে আসে এবং বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হতে হতে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়।
বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা মোবারক বলেন, সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, সারাদেশে নদীবন্দরে এখন ১ নম্বর সংকেত রয়েছে। তাই সব ধরনের নৌযান চলাচলে কোনো বাধা নেই।
ঢাকা নদী বন্দরে বিআইডব্লিউটিএ এর যুগ্ম পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সকালে আবহাওয়া ভালো থাকলেও সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি, পন্টুনেও কোনো লঞ্চ নেই। এখন লঞ্চ চলাচল শুরুর অনুমতি মেলায় মাইকিং করে জানানো হবে, তারপর লঞ্চ পন্টুনে ভেড়ানো শুরু হবে।
ঝড়ের রাতের পর সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র আসতে শুরু করেছে। গাছ ও দেয়াল চাপা পড়ে এবং নৌ ডুবে সারাদেশে অন্তত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। মাঠে এখন আমন ফসল থাকায় ধানের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে; জোয়ারে উপকূলীয় এলাকার মাছের ঘেরও ভেসে যাওয়ার খবর আসছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল ছেড়ে এলেও এখনো উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই পরিস্থিতিতে মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদসংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আর কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।