বঙ্গনিউজঃ ঠিকমতো হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিক পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মাহশা আমিনি (২২)। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে মারা যান মাহশা। পরিবার ও বহু ইরানির অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে মাহশার। তবে পুলিশ এই অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে। সেই দিন থেকেই মাহশার মৃত্যু ঘিরে রাস্তায় নামে হাজার হাজার ইরানি। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে নজিরবিহীন এই বিক্ষোভ।
গতকাল বৃহস্পতিবারও (২৯ সেপ্টেম্বর) সেই বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। মানবাধিকার এক সংস্থা জানিয়েছে, ইরানে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা তুমুল বিক্ষোভে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন।
বিক্ষোভকারী নিজেদের হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে বিক্ষোভ করছেন। বিবিসি বলছে, ইরানের এবারের হিজাববিরোধী এই বিক্ষোভে নারীরা সামনের সারিতে অবস্থান করছেন। তারা নারী, মুক্তি, স্বাধীনতা বলে স্লোগান দিচ্ছেন। এছাড়া বহু বিক্ষোভকারী দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনির পদত্যাগের দাবি জানান।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ইরানের এবারের বিক্ষোভ দেশটির অন্য বিক্ষোভের তুলনার পুরোপুরি ভিন্ন। দেশটির বহু নারীর এতদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তারা তাদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া আইন থেকে মুক্তি পেতে চাচ্ছেন।
নরওয়ে ভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) গ্রুপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে নিশ্চিত করেছে, ইরানের বিক্ষোভে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুও আছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলেছে, পুলিশ বহু ‘দাঙ্গাকারীকে’ গ্রেফতার করেছে। তবে ঠিক কতজন সেই সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ইরানের পুলিশ বিক্ষোভ দমাতে দেশটির অনেক সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্টসহ অন্তত ১ হাজার ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
এছাড়া ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বিক্ষোভ যেকোনো প্রকারে দমন করার হুঁশিয়ার দিয়েছেন। সেইসঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীও দিয়েছে কঠোর হুমকি।
এদিকে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেছেন, আমিনির মৃত্যু ঘিরে ইরানের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেন দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এছাড়া মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে নরওয়েতে ইরানের দূতাবাসের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ৯০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।