বঙ্গ-নিউজ: মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনে অচলাবস্থা চলছিল চা শিল্পে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চা–বাগানের মালিকদের সঙ্গে আজ শনিবার বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।প্রায় দুই ঘন্টার এই আলোচনায় চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০ টাকা বৃদ্ধি করে ১৭০ টাকা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে ছিল মানবেতর জীবনে অভ্যস্থ চা শ্রমিকরা। এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আগামীকাল হতে শ্রমিকেরা কাজে যোগদানের ঘোষণা দিয়েছেন। সিদ্ধান্ত মোতাবেক অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও তারা পাবেন। ফলে দৈনিক ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পাবেন।
বাংলাদেশের চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি মাত্র ১২০ টাকা। এই দুর্মূল্যের বাজারে তারা মাত্র ৩০০ টাকা মজুরি করার দাবি তোলেন। তাতে কর্ণপাত করেননি দেশের চা মালিকরা। দাবি আদায়ে গত ৯ আগস্ট থেকে দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা।
চারদিন কর্মবিরতির পর ১৩ আগস্ট সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন শুরু করেন তারা। এরইমধ্যে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলেও তা মানছেন না চা শ্রমিকরা। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীকেই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা–বাগানের মালিকদের সঙ্গে বসার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস জানিয়ে ছিলেন, চা–বাগানের মালিকদের সঙ্গে শনিবার বিকেল চারটায় সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবনে হবে এ সভা।
বাংলাদেশ চা সংসদের চেয়ারম্যান এম শাহ আলম জানান, আমরা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছি। আমরা গণভবনে যাব। বৈঠকে বসার আগে নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে নিতে হবে।
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে শ্রমিক পক্ষকে কিছু জানানো হয়নি। তবে যোগাযোগ করা হলে আন্দোলনরত শ্রমিকদের অন্যতম নেতা সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, আমরাও প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। আশা করছি, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ন্যায্য সমাধান পাবেন শ্রমিকরা।
রাজু গোয়ালা জানান, ধর্মঘটের কারণে কোনো আয়-রোজগার নেই চা শ্রমিকদের। অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন অনেকেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগান মালিক পক্ষের বৈঠকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই।