বঙ্গ-নিউজ: মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার হোগলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আলী নুর বিশ্বাস। চাকরির সন্ধানে ২০১৪ সালে ঢাকায় আসেন। কাজ শুরু করেন গার্মেন্টসকর্মী হিসেবে। এরপর গত কিছুদিন ধরে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন তিনি।
প্রায় তিন বছর আগে আহিনা খাতুন নামের এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এক পর্যায়ে তারা দুজন একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। বিয়ে না করেই স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে আশুলিয়া এলাকার বিভিন্ন বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতে থাকেন তারা।
গত ৩০ জুলাই রাতের খাওয়া শেষে ঘুমিয়ে থাকা আলী নুরকে বটি দিয়ে গলা কেটে ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করে পালিয়ে যান আহিনা খাতুন। এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আহিনা খাতুনকে (২৯) নারায়নগঞ্জ জেলার কাঁচপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত জুলাই মাসের শুরুতে আলী নুর বিশ্বাস কিছুদিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে গ্রামের অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে আহিনা খাতুনের মনে প্রচণ্ড ক্রোধ জন্ম নেয়। এর প্রেক্ষিতে নূরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আহিনা।
বিয়ের পর ১৭ জুলাই আলী নুর ঢাকায় ফিরে আসেন। এরপর ২৯ জুলাই আশুলিয়ার জিরাবো নামাপাড়া এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি বাসা ভাড়া নেন। ৩০ জুলাই রাতের খাওয়া শেষে উভয়েই ঘুমিয়ে পড়েন। আহিনা ঘুমের ভান করে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি ঘুমাননি।
পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ভোররাতে আলী নুরকে ঘুমন্ত অবস্থায় বটি দিয়ে মাথা, গলা এবং বুকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন আহিনা। পরে রক্তাক্ত লাশ দেখে তিনি কিছুটা ভয় পেয়ে যান এবং লাশটি কাঁথা চাপা দিয়ে রাখেন।
র্যাব জানায়, হত্যার পর সংসারের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি একটি বস্তায় ভরে ভোর ৬টায় ঘরে তালা দিয়ে প্রথমে জিরাবো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসেন আহিনা। সেখান থেকে বাসে করে আবদুল্লাহপুর আসেন। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে বাসে উঠে কুড়িল বিশ্বরোডে নামেন। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকায় গিয়ে আহিনা নিজেকে চাকুরীপ্রত্যাশী গার্মেন্টসকর্মী পরিচয় দিয়ে একটি টিনশেড বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে ওঠেন। সেখান থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।