বঙ্গনিউজঃ আজ শুক্রবার থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে টোল নেওয়া হবে। এটি ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে নামে পরিচিত। এক্সপ্রেসওয়ের টোল যুক্ত করে গতকাল বৃহস্পতিবার বাসের নতুন ভাড়ার হার নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। এর আগে শুধু পদ্মা সেতুর টোল যুক্ত করে ১৫টি রুটে ভাড়া নির্ধারণ করেছিল সংস্থাটি। গতকাল নির্ধারণ করা হারে ৫১ আসন ও ৪০ আসনের বাস- এ দুই ক্যাটাগরিতে ভাড়া ধরা হয়েছে।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, নতুন ভাড়ার তালিকা পরিবহন সমিতির কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। ১ জুলাই (আজ) থেকে এক্সপ্রেসওয়ের টোল কার্যকর হলে নতুন ভাড়া আদায় করবে পরিবহনকর্মীরা।
গতকাল চূড়ান্ত করা ভাড়ার চার্টে বলা আছে, ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশালের ভাড়া ৪৫৪ টাকা। এটি ৪০ আসনের বাসের জন্য। ৫১ আসন হলে গুনতে হবে ৩৫৬ টাকা। গোপালগঞ্জের জন্য ৫১ আসনের ভাড়া ৩৩২ টাকা আর ৪০ আসনের জন্য ৪২৩ টাকা। খুলনার জন্য ৫১ আসনের বাসে ভাড়া ৪৫৬ টাকা আর ৪০ আসনে ৫৭৫ টাকা। শরীয়তপুর জাজিরা রুট দিয়ে যেতে ৪০ আসনে ২৫৭ টাকা আর ৫১ আসনে ২১১ টাকা। পিরোজপুর রুটের বাসে বরিশাল হয়ে গেলে ভাড়া ৫১ আসনে ৪৫৫ টাকা, ৪০ আসনে ৫৮০ টাকা। ঢাকা থেকে পিরোজপুরগামী গোপালগঞ্জ ও বাগেরহাট অতিক্রম করা ৫১ আসনের বাসে ভাড়া ৪৮৬ টাকা আর ৪০ আসনে ৬১৯ টাকা। মাদারীপুরগামী বাস ৫১ আসন হলে ২৭০ টাকা আর ৪০ আসন হলে ৩৪৪ টাকা। পটুয়াখালী রুটে ৪৪০ টাকা ভাড়া ৫১ আসনের বাসে। ৪০ আসনের হলে দিতে হবে ৫৬১ টাকা।
ঢাকা থেকে সাতক্ষীরাগামী বাসের ৫১ আসন হলে ৫৪১ টাকা, ৪০ আসন হলে ৬৮৯ টাকা। ফরিদপুরের জন্য ৫১ আসনের বাসের ভাড়া ২৫৩ টাকা ৪০ আসনে ৩২৩ টাকা। ঢাকা থেকে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু ও পদ্মা সেতু দিয়ে যাওয়া বাস ভাড়া ৫১ আসনের গাড়িতে ২০১ টাকা আর ৪০ আসন হলে ২৫৭ টাকা। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যেতে মাদারীপুর, বরিশাল ও পটুয়াখালী পাড়ি দিলে বাস ভাড়া ৬০১ টাকা। এটি ৫১ আসনের বাসের জন্য। আর ৪০ আসনের বাস হলে ৭৬৭ টাকা। কক্সবাজার থেকে বরিশাল যেতে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, ঢাকার পোস্তগলা ব্রিজ, পদ্মা সেতু ও মাদারীপুর পার হতে হবে। এ জন্য ৫১ আসনবিশিষ্ট হলে ১০৮৯ টাকা আর ৪০ আসনের বাসের জন্য ১৩৮৮ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে খুলনাগামী বাসের জন্য ৫১ আসনে ৯৩৫ টাকা আর ৪০ আসনে ১১৯২ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে বরগুনা ৫১ আসনের বাসে ১০০৫ টাকা আর ৪০ আসনে ১২৮২ টাকা। তবে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে চলাচলরত ৫১ আসনের বাসে যাত্রীপ্রতি ৬ টাকা ৭২ পয়সা আর ৪০ আসনের বাসের জন্য যাত্রীপ্রতি ৯ টাকা হারে টোল প্রযোজ্য হবে। এটি এ ভাড়ার সঙ্গে যুক্ত হবে।
গত ২৯ জুন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী যানবাহনের জন্য অন্তর্বর্তী টোল নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কে চলতে ট্রেইলারকে ১ হাজার ৬৯০, বড় ট্রাকে ১ হাজার ১০০, মাঝারি ট্রাকে ৫৫০, বড় বাসে ৪৯৫, মিনি ট্রাকে ৪১৫, মিনিবাসে ২৭৫, মাইক্রোবাসে ২২০, প্রাইভেট কারে ১৪০ এবং মোটরসাইকেলে ৩০ টাকা টোল দিতে হবে।
এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায়ে বুধবার ঠিকাদার কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনের (কেইসি) সঙ্গে চুক্তি সই করে সওজ। সওজের হয়ে আগামী পাঁচ বছর টোল আদায়, এক্সপ্রেসওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ এবং ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম (আইটিএস) ইনস্টলেশন করবে কেইসি। তাদের সহযোগী হিসেবে রয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটেল কমিউনিকেশন। পাঁচ বছরের জন্য তারা ৭১৭ কোটি টাকা নেবে। এর মধ্যে ভ্যাট ও আয়কর ২১৮ কোটি টাকা।
বুধবারের টোল সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পুরো পথের হিসাব দেওয়া হলেও চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ছয়টি এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট ধরে ধরে নির্দিষ্ট দূরত্বে টোলের হিসাব দেওয়া হয়। এ তালিকা অনুযায়ী, ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জিরো পয়েন্ট এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ দিয়ে যানবাহন এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশ ও বের হতে পারবে। পথিমধ্যে পদ্মা সেতুর এপারে কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুর, ধলেশ্বরী সেতু প্লাজা, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর এবং পদ্মা সেতুর ওপারে মাদারীপুরের পাচ্চর, মালিগ্রাম ও পুলিয়ায় এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট থাকবে।