বঙ্গ-নিউজ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঐতিহাসিক ছয় দফা ছিল দেশের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির সনদ। এই সনদের মাধ্যমেই দেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। ছয় দফা মূলত এক দফাই ছিল, আর সেটা হলো মুক্তির সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জানতেন, এর মধ্য দিয়েই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করবো।
১৯৬৬ সালের ৭ জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ সেই তাৎপর্যপূর্ণ দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৬৬ সালে তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ছয় দফা উত্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পর দিন সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে যাতে এটি স্থান পায় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধও করেন তিনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর এ দাবির প্রতি কোনো গুরুত্ব না দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
ছয় দফার মূল বক্তব্য ছিল- প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয় ছাড়া সকল ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে। পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানে দুটি পৃথক ও সহজ বিনিময়যোগ্য মুদ্রা থাকবে। সরকারের কর, শুল্ক ধার্য ও আদায় করার দায়িত্ব প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকাসহ দুই অঞ্চলের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার আলাদা হিসাব থাকবে এবং পূর্ববাংলার প্রতিরক্ষা ঝুঁকি কমানোর জন্য এখানে আধা-সামরিক বাহিনী গঠন ও নৌবাহিনীর সদরদপ্তর স্থাপন করা হবে।
বঙ্গবন্ধুর এই ছয় দফা দাবির মুখে বিচলিত হয়ে পড়েন পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খান। পরে হুমকি দিয়ে বলেন, ছয় দফা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে অস্ত্রের ভাষায় উত্তর দেওয়া হবে। এর ফলে আন্দোলন আরো বেগবান হয়। এর পর ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং এর ধারাবাহিকতায় পরবর্তী পৃথিবীর বুকে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ।