বঙ্গনিউজঃ রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেসের মাধ্যমে শুরু হয়েছে ট্রেনে ঈদযাত্রা। তবে প্রথমদিনের শুরুতেই বিলম্বিত হয়েছে ট্রেনের শিডিউল। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তারা বলেছেন, ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি থেকে শুরু করে ভোগান্তি লেগেই আছে। যাত্রার দিন শিডিউল বিপর্যয় হয়ে ট্রেন বিলম্বিত হচ্ছে। স্টেশনে হাজার হাজার মানুষ। তীব্র গরমে পরিবার-পরিজন নিয়ে ট্রেনের মধ্যে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
গতকাল সকাল ৬টায় রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে ঈদযাত্রা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রথম ট্রেনই বিলম্বিত হয়েছে। ফলে ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটগামী পারাবত ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানিক ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। আর ধূমকেতু ট্রেনটি ৫৫ মিনিট বিলম্বিত হয়ে ৬টা ৫৫ মিনিটে কমলাপুর ছাড়ে। একইভাবে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৮টা ১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও বিলম্বিত হয়ে ট্রেনটি ৮টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে যায়
এ ছাড়া যাত্রীতে পরিপূর্ণ রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৯টা ১০ মিনিটে কমলাপুর ছাড়ার কথা থাকলেও বিলম্বিত শিডিউল নিয়ে কমলাপুর ছাড়ে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার জানিয়েছেন, আমাদের ট্রেনের ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। সকালে যে ১২টি ট্রেন স্টেশন ছেড়েছে এর মধ্যে ২/৩টি ট্রেনের কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। ক্রসিংয়ের কারণে মূলত ট্রেনগুলো বিলম্ব হয়েছে। আশা করছি বাকি ট্রেনগুলোর টাইম শিডিউল ঠিক থাকবে। ট্রেন বিলম্ব হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজশাহীগামী ধূমকেতু ট্রেনের যাত্রী কিরণ বলেন, অগ্রিম টিকিটের জন্য সেদিন মধ্যরাতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলাম। পরে সকালে টিকিট পেলাম, আজ যখন কাঙ্ক্ষিত দিন এলো তখন যাত্রায়ও বিলম্ব। একবার টিকিট কাটার সময় বিড়ম্বনা, আবার যাত্রার দিনের শিডিউল বিপর্যয়ের বিড়ম্বনা। সব ভোগান্তি শুধু আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের। হিমেল নামে আরেক ট্রেনযাত্রী বলেন, রমজান মাসে রোজা রেখে স্ত্রী-সন্তানসহ বলতে গেলে দৌড়ে স্টেশনে এসেছি, এসে দেখি ট্রেন লেট। মানুষ ১২/১৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আজকের এই টিকিট কিনেছে। সবাই স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করছে। এমন ভোগান্তি কি মেনে নেয়া যায়। একবার টিকিট কাটতে আবার যাত্রা পথে এমন বিড়ম্বনা থেকে আমরা সাধারণ যাত্রী মুক্তি চাই।
রেলওয়ে অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবারের ঈদযাত্রায় প্রতিদিন ৫৩ হাজার যাত্রী ট্রেনে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রা করবেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র আন্তঃনগর ট্রেনে আসন থাকবে ২৭ হাজারের বেশি।
কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার জানিয়েছেন, সারাদিনে ৩৭টি ট্রেন স্টেশন ছেড়ে যাবে। তবে দিনের অন্যান্য ট্রেন চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম অভিমুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জগামী এগারো সিন্ধুর প্রভাতি, দেওয়ানগঞ্জ অভিমুখী তিস্তা এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম অভিমুখী মহানগর প্রভাতি যথাসময়ে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে।
ধূমকেতু এক্সপ্রেসের এক যাত্রী বলেন, ধূমকেতু ছাড়ার কথা ৬টায়, সেখানে বলা হলো সাড়ে ৬টা। এখন ৬টা ৫০ মিনিট হলো অথচ ট্রেন ছাড়ছে না। সড়কের ভোগান্তি এড়াতে আমরা ট্রেনের ওপর ভরসা করি, রাত-দিন অপেক্ষা করে টিকিট সংগ্রহ করেছি অথচ এখনো ট্রেন ছাড়ছে দেরিতে। শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী-শিশু সঙ্গে নিয়ে আসা ভ্রমণকারীরা। মো. রকিবুল আলম নামে এক যাত্রী বলেন, ভোরের ট্রেন ধরতে সেহ্রি খেয়েই স্টেশনে ছুটে এসেছি, কিন্তু এখনো কোনো খবর নেই। গরমের মধ্যে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এভাবে বসে থাকা যায়? অন্যদিকে গতকালও অনেকেই ট্রেনের টিকিট কাটতে স্টেশনে এসেছেন। তবে ভিড় অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে। সকাল ৮টা থেকে পঞ্চম দিনের মতো ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। এদিন দেয়া হয়েছে ১লা মে’র অগ্রিম টিকিট।
সূত্রঃমানবজমিন