কর্মহীন শিক্ষা অনেক সময় মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

Home Page » জাতীয় » কর্মহীন শিক্ষা অনেক সময় মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ
বৃহস্পতিবার ● ৩১ মার্চ ২০২২


রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

বঙ্গনিউজ ডেস্কঃ     রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, কর্মহীন শিক্ষা অনেক সময় মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে। তৈরি করে অভিজাত শিক্ষিত বেকার শ্রেণী। বেকারত্বের বোঝা নিয়ে তরুণরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ না হয়ে দায় হিসেবে চিহ্নিত হয়। তবে আমি আশা করি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তরুণরা বেকার থাকবে না।এ প্রতিষ্ঠান কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

বুধবার (৩০ মার্চ) রাতে কিশোরগঞ্জে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান পরবর্তী আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে উঠেছে। বিশ্বের প্রায় ৮০টিরও বেশি দেশে বাংলাদেশের তৈরি সফটওয়্যার ও আইটি সেবা রাপ্তানি করা হচ্ছে।

আইটি খাতে আয় এক দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৫ সালে এ আয় ৫ বিলিয়নে ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে দেশে বিপুলসংখ্যক দক্ষ আইটি প্রশিক্ষিত কর্মী গড়ে উঠবে। যারা দেশে বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করবে। যার মাধ্যমে দেশের ডিজিটালাইজেশনও এগিয়ে যাবে।

তিনি এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়া স্যাটেলাইট আর্থ-স্টেশনের উদ্বোধন করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিখাতে বাংলাদেশের পথচলার ভিত্তি রচনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ ও ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেন। যার সফল বাস্তবায়নে দেশ এখন ডিজিটাল বিষয়ে অনেক এগিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে দেশে মাত্র আট লাখ লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করত। এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ১২ কোটিরও বেশি মানুষ। ফলে শহর ও গ্রামের দূরত্ব কমে গেছে। বিশ্বের সবকিছু হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে সক্রিয় ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে, যারা ঘরে বসে লাখ লাখ ডলার আয় করছে।

তিনি আইটি খাতে বিপুল সম্ভাবনার হাতছানির কথা উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে আমাদের সামনে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ জন্য চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের অগ্রগামী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। আর এর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তা, পেশাজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি এ সময় অনলাইনের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, ই-কমার্স বা বিশেষ করে অনলাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি এ অনলাইনের অপব্যবহার বাড়ছে। এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যাক্তি ও প্রতারক চক্র অনলাইন ডেলিভারির নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। কাজেই এখানে সম্ভাবনা ও প্রতারণা দুটোই হাতে হাত ধরে চলে। কাজেই এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, বাংলাদেশ ডিজেল প্লান্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. রফিকুল ইসলাম, স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ।

এর আগে বিকেলে রাষ্ট্রপতি উপজেলা সদরের ষোলমারা এলাকায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তখন সেখানে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, প্রায় ১০০ কোটি টাকায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারটি নির্মিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৩৩:৪৩ ● ৪৯১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ